কোরিয়ান নাগরিকের বাড়িতে চুরি,মালামালসহ আটক ৩
ফরিদপুর শহরের আলিপুরে এক কোরিয়ান নাগরিকের বাড়িতে বড় ধরনের চুরির ঘটনায় জড়িত তিনজনকে আটকসহ চুরি হওয়া স্বর্ণালংকার ও মালামাল উদ্ধার করেছে পুলিশ। রবিবার দুপুরে ফরিদপুরের পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানানো হয়।
আটকরা হলেন- মাদারিপুরের রাজৈর উপজেলার খালিয়া গাঙ্গুলিবাড়ি গ্রামের মোস্তফা শেখের ছেলে আসলাম শেখ (২৪), ফরিদপুরের গোয়ালচামট শ্রী অঙ্গন এলাকার সুকুমার দত্তের ছেলে বিকাশ দত্ত (২৫) ও মাদারীপুরের রাজৈরের পলিতা গ্রামের চিরঞ্জীব বিশ্বাসের ছেলে চয়ন বিশ্বাস (৩৮)।
ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) জামাল পাশা জানান, গত বছরের ১৯ নভেম্বর সন্ধ্যায় কোরিয়ান নাগরিক লী সন অকের বাড়িতে দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনা ঘটে। চোরেরা দোতলা ভবনের গ্রিল কেটে ১০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, নগদ ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা, ২৭শ' ইউএস ডলার, ৮টি মোবাইল ডিভাইস, ১টি ল্যাপটপ ও সিসি টিভির ডিভাইস চুরি হয়। এ ঘটনায় ওই কোরিয়ান নাগরিকের স্বামী মো. বায়েজিদ রহমান কোতোয়ালি থানায় একটি অভিযোগ দাখিল করেন।
জামাল পাশা জানান, এ ঘটনার পর তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় শনিবার রাতে এসআই আইয়ুব আলী ও এসআই ফরহাদ হোসেনের নেতৃত্বে ডিবির একটি দল চুরির ঘটনায় জড়িত আসলাম শেখকে আটক করে। এরপর তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী সেতু জুয়েলার্সের মালিক বিকাশ দত্ত ও চন্দন জুয়েলার্সের মালিক চয়ন বিশ্বাসকে আটক করা হয়। তাদের নিকট হতে চুরি হওয়া স্বর্ণালঙ্কারের মধ্যে ৭ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, ৪টি মোবাইল ডিভাইস, ল্যাপটপ ও সিসি টিভির ডিভাইস উদ্ধার করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে ফরিদপুরের ওসি ডিবি সুনীল কর্মকার জানান, আসলাম শেখ পেশাদার চোর। তার সাথে এই চুরির ঘটনায় আরো একজন জড়িত আছে, যাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
তিনি জানান, লী সন অকের বাড়ি হতে চুরি হওয়া স্বর্ণালঙ্কার সে জুয়েলারি দোকানি বিকাশ ও চন্দনের নিকট বিক্রি করে। জিজ্ঞাসাবাদে আসলাম শেখ জানিয়েছে, সে ফরিদপুর শহরের আরো পাঁচ ছয়টি বাড়িতে এমন বড় ধরনের চুরি করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
লী সন অকের স্বামী বায়েজিদ রহমান শহরের আলিপুরের মৃত অ্যাডভোকেট আব্দুল বারির জ্যেষ্ঠ সন্তান। তিনি জানান, গত ত্রিশ বছর যাবত তিনি কোরিয়ায় এক্সপোর্ট ইমপোর্টের ব্যবসা করেন। ২৫ বছর আগে কোরিয়ান নাগরিক লী সন অককে বিয়ে করেন। তাদের দুটি সন্তান রয়েছে। গত বছরের ২৯ আগস্ট তারা দেশে এসে করোনার কারণে আটকে যান। ১৯ নভেম্বর ছোট ভাইয়ের বাড়িতে এক অনুষ্ঠানে অংশ নিতে সন্ধ্যা ৬টার দিকে বাড়ি হতে বের হন। মাত্র এক ঘন্টা পর সন্ধা ৭টার দিকে বাড়িতে এসে দেখেন মালামাল চুরি হয়ে গেছে। চুরির মালামাল উদ্ধার ও জড়িতদের গ্রেপ্তারের ঘটনায় তিনি সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
(ঢাকাটাইমস/২৮মার্চ/এলএ)