শিক্ষকের পদোন্নতি দিয়ে স্থগিত করলো কুবি প্রশাসন

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ৩০ জুন ২০২১, ২০:৫৯ | প্রকাশিত : ৩০ জুন ২০২১, ২০:৪৩

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক কাজী এম. আনিছুল ইসলামকে ‘সহকারী অধ্যাপক’ পদে এক সিন্ডিকেটে পদোন্নতি দেয়ার পর আরেক সিন্ডিকেটে তা স্থগিত করা হয়েছে। অথচ তিনি ‘সহকারী অধ্যাপক’ পদে যোগদানপত্র ও বেতন-ভাতা পেয়ে আসছিলেন। রবিবার (২৭ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮০তম সিন্ডিকেটে তার পদোন্নতি স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়ে তাকে আবারও আবেদন করতে বলা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ও সিন্ডিকেটের সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের।

মঙ্গলবার কয়েকটি জাতীয় দৈনিকে ‘সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তে বাতিল হলো কুবি শিক্ষকের পদোন্নতি’ শীর্ষক সংবাদ প্রচার হয়। যেখানে বলা হয়, ‘কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) আবেদনের যোগ্যতার যথাযথ শর্ত পূরণ না হওয়ায় যোগদান করার পর গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের প্রভাষক কাজী এম আনিছুল ইসলামের পদোন্নতি বাতিল করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট।’

তবে এই পদোন্নতি বাতিল হয়নি বলে জানিয়ে রেজিস্ট্রার ড. মো. আবু তাহের বলেন, ‘যে প্রক্রিয়ায় আবেদন করা লাগে সে প্রক্রিয়ায় আবেদনটা হয়নি, এটা ধরা পড়ায় সিন্ডিকেট সভায় উনার পদোন্নতি স্থগিত করা হয়েছে। আবেদন প্রক্রিয়া এবং প্ল্যানিংটা যথাযথভাবে করার জন্য এটা বিভাগে পাঠিয়ে দেয়া হবে। তারপর যথাযথভাবে এলে সিলেকশন বোর্ড হয়ে উনি পদোন্নতি পাবেন।’

আবেদন কেন যথাযথ হয়নি জানতে চাইলে রেজিস্ট্রার বলেন, ‘আমাদের নিয়োগপত্রে একটা বিষয় লিখিত থাকে যে, আপনার দাখিলকৃত কোনো তথ্য বা সার্টিফিকেটে কোনো ধরনের ভুল উপস্থাপন পাওয়া গেলে আপনার নিয়োগ বাতিল করা হবে। উনার নিয়োগপত্রেও তাই বলা আছে। বিশ্ববিদ্যালয় যেকোনো সময় এটা যাচাই করে কোনো অমিল পেলে সেটা অনুমোদন পাওয়া বোর্ডে আবার ফেরত পাঠানো হয় পুনঃবিবেচনার জন্য।’

রেজিস্ট্রার বলেন, ‘আমাদের নিয়ম অনুযায়ী কেউ যদি আগের কর্মস্থলের অভিজ্ঞতার কাগজ যুক্ত করে আবেদন করেন তবে তাকে যথাযথ মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। অর্থাৎ আগের কর্মস্থলের রেজিস্ট্রার এখানকার রেজিস্ট্রার বরাবর তার অভিজ্ঞতা সনদটি পাঠাবেন।’

অথচ গত সিন্ডিকেটে একই আবেদনে খোদ কুবি রেজিস্ট্রারের স্বাক্ষরে অনুমোদিত হয়েই ওই শিক্ষকের পদোন্নতি দেয়া হয়। পাশাপাশি দেয়া হয় যোগদানপত্রও।

ভুল হয়ে থাকলে আগের সিন্ডিকেটে কেনো তাকে পদোন্নতি দেয়া হলো- জানতে চাইলে রেজিস্ট্রার বলেন, ‘বিভাগের প্ল্যানিং কমিটি, বাছাই বোর্ড সুপারিশ করলে আমরা তা অনুমোদন করে সিন্ডিকেটে তুলি। উনার ক্ষেত্রেও তারা সুপারিশ করেছিল। তবে পরে বিভিন্ন জায়গায় কথা হলে এবারের সিন্ডিকেটে তার পদোন্নতি স্থগিত করে পুনঃআবেদনের জন্য বলা হয়েছে।’

এ ব্যাপারে শিক্ষক কাজী এম. আনিছুল ইসলাম বলেন, ‘আমি সহকারী অধ্যাপকে পদোন্নতির জন্য আবেদন করেছি। সেটি প্রশাসনিক প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে রেজিস্ট্রার দপ্তরে পৌঁছে। রেজিস্ট্রারের স্বাক্ষরিত একটি চিঠি আছে, আমার বোর্ডের একটি চিঠি আছে। আমি বোর্ড ফেইস করেছি। বোর্ডের পর সিন্ডিকেটে আমার সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি দেয়া হয়। পরবর্তী সময়ে রেজিস্ট্রার মহোদয়ের স্বাক্ষরিত যোগদানপত্র আমার কাছে আসে। আমি তার ভিত্তিতে যোগদান করি।’

তিনি বলেন, ‘যোগদানের পর আমি জেনেছি, আমার এই বিষয়টি নিয়ে একটু আপত্তি আছে। আমি আগে যে ইউনিভার্সিটিতে চাকরি করেছি সেখান থেকে যে লেটারটি এখানে দেয়া হয়েছে সেটিতে ‘টু রেজিস্ট্রার’ লেখা হয়নি। সেখানে ‘টু হোম ইট মে কনসার্ন’ লেখা হয়েছে। পরে আমি আজকে গণমাধ্যমে জানতে পারি যে আমার পদোন্নতিটি বাতিল করা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত আমি কোনো কাগজপত্র পাইনি। যদি পাই তাহলে পরবর্তীতে কী হবে সেটা আমি পরে সিদ্ধান্ত নিতে পারবো।’

এদিকে জানতে চাইলে কুবি উপাচার্য ও সিন্ডিকেট সভাপতি অধ্যাপক ড. এমরান কবির চৌধুরী বলেন, ‘তার পদোন্নতি বাতিল করা হয়নি। সাংবাদিকেরা কে কী নিউজ করতেছে! নিউজের তো কোনো ঠিক নাই৷ আমি তো বলি নাই নিয়োগ বাতিল হয়েছে৷ সিণ্ডিকেটের সিদ্ধান্তই তো এখনো লেখা হয় নাই। এটা লেখা হবে৷ সিণ্ডিকেট মেম্বাররা দেখবে। তারপরই একটা কথা সম্পূর্ণভাবে বলা যায়।’

তিনি বলেন, ‘সিণ্ডিকেটের আলোচনা হওয়ার পরে একটা সিদ্ধান্ত হয়৷ সেখানে সত্য কথাগুলা লিখলাম কি-না সেটা সব সদস্যদের দেখতে হয়। দেখার পরেই একটা সিদ্ধান্ত হয়। যেটা সিন্ডিকেটের বক্তব্য।’

(ঢাকাটাইমস/৩০জুন/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

শিক্ষা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :