আসল নিয়েই শঙ্কায় বাউফলের পশু খামারিরা

কৃষ্ণ কর্মকার, বাউফল (পটুয়াখালী)
 | প্রকাশিত : ১২ জুলাই ২০২১, ১৮:৫০

দেশে লকডাউন চলমান থাকায় পশু বিক্রি নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার খামারিরা। কোরবানির আগে যদি উপজেলার কালাইয়া পশুর হাট না বসে তাহলে লাভের তো দূরের কথা আসলই উঠবে না। এমন আশঙ্কায় দিন কাটছে খামারিরা।

এদিকে পশুর খাদ্যের মূল্য উর্ধ্বগতি। এমন অবস্থায় কতদিন খামারে পশুগুলো রাখতে হবে এ নিয়ে খামারিরা পড়েছেন বিপাকে।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ইজারাদারদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, লকডাউন চলাকালীন কোনভাবেই যেন হাটবাজার বসানো না হয়।

উপজেলার কালাইয়া পশুর হাট বসে প্রতি সপ্তাহের সোমবার। দেশিও প্রজাতির গরুর হাট হিসেবে এই হাটের খ্যাতি রয়েছে দেশ জুড়ে। এই হাটে বাউফল, দশমিনা, চরফ্যাশন, লালমোহন, গলাচিপা, রাঙাবালি, কলাপাড়া, বাখেরগঞ্জসহ উপকূলীও বিভিন্ন এলাকা থেকে খামারিরা গরুসহ ছাগল নিয়ে আসেন বিক্রি করতে। রাজশাহী, নওগাঁ, কুষ্টিয়া, খুলনা, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ভোলা, ফরিদপুর, মাদারীপুর, কক্সবাজার, চাঁদপুর এবং ঢাকাসহ বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ব্যাপারীরা ট্রাক, ট্রলার, কার্গো নৌকা যোগে এই হাটে পশু কিনতে আসেন।

নোয়াখালীর চৌধুরী বেপারি, নওগার ইদ্রিস বেপারি, কক্সবাজারের কামাল বেপারি ও চট্রগ্রামের মফিজ বেপারি বলেন, গত বছর করোনার কারণে কালাইয়া গরুর হাটে যেতে পারি নাই। এ বছর একই অবস্থা। ওই হাটকে নির্ভর করে কোরবানির একমাস আগে থেকে আমাদের ব্যবসার মৌসুম শুরু হয়। অথচ লকডাউন থাকায় এবছরও আমরা যেতে পারছি না।

উপজেলার সবচেয়ে বড় খামারিদের এলাকা নাজিরপুর ইউনিয়ন। এই ইউনিয়নে ছোটবড় মিলিয়ে কমপেক্ষ ১৫টি খামার রয়েছে।

ইউনিয়নের বড় ডালিমা গ্রামের সবচেয়ে বড় খামারি দেলোয়ার বেপাড়ি বলেন, তার খামারে বর্তমানে দেশিও প্রজাতির গরু রয়েছে ৫৬টি। কোরবানিকে সামনে রেখে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে তিনি এই গরুগুলো স্থানীয় হাট থেকে সংগ্রহ করেছেন। এখন বিক্রি করার উপযোগী হয়েছে। অথচ করোনার কারণে দেশে লকডাউন ঘোষণা হওয়ায় সকল হাট-বাজার বন্ধ হয়ে গেছে। হাটে গরু বিক্রি করতে না পারলে কমপক্ষে ১৩ লাখ টাকা লোকসান গুনতে হবে। কারণ কোনবানীর হাটের চেয়ে অন্যান্য দিনের হাটে গরুর দাম কমপক্ষে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ কম থাকে বলে জানান তিনি।

একই গ্রামের রফিক হাওলাদার বলেন, কোরবানির আগে গরুর হাট যদি খুলে না দেওয়া হয়, তাহলে পথে বসা ছাড়া আমাদের আর উপায় থাকবে না। গরুর খাদ্যের মূল্য যেভাবে বাড়ছে তাতে করে কতদিন গরু গোয়াল ঘরে রাখা যাবে সে চিন্তাই করছি।

সুলতানাবাদ গ্রামের মানিক রাঢ়ি নামে এক খামারি বলেন, তিনি প্রতিবছর কমপক্ষে পঞ্চাশটিরও বেশি দেশি গরুর বাছুর কিনে বছর শেষে কোরবানিতে কালাইয়া হাটে বিক্রি করেন। অথচ দেশের পরিস্থিতি এমন যে কবে যে হাট বসবে তার কোনো নিশ্চয়তা নাই। ফলে লাভের আশা দূরের কথা আসল নিয়েই টানাটানি।

একই অবস্থা বগা ইউনিয়নের খামাড়ি নজরুল ডাক্তার, লাল মিয়া খান, নওমালা ইউনিয়নের সহিদুল ইসলাম ও মোশারফ হোসেনের।

অন্যদিকে কালাইয়া হাটইজারাদার এস এম ফয়সাল আহম্মেদ মনির হোসেন মোল্লা বলেন, প্রতি সোমবার কয়েক হাজার গরু, ছাগল, মহিষ নিয়ে খামারিরা এই হাটে বিক্রি করতে আসেন। অথচ করোনার বিস্তার ঠেকাতে লকডাউন চলমান থাকায় হাট বসানো যাচ্ছে না। সামনে লকডাউন কতদিন হয় তা বলা যাচ্ছে না। গরুর ব্যবসায়ীদের পাশাপশি আমরাও আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।

(ঢাকাটাইমস/১২জুলাই/পিএল)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :