জিঙ্কের ঘাটতি পূরণ করে যেসব খাবার

ফিচার ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৫ জুলাই ২০২১, ১১:০৯

মানুষের শরীরের জন্য জিঙ্ক অত্যাবশ্যকীয় খনিজ। জিঙ্ক শরীরের ডিএনএ, কোলাজেন তৈরি করা থেকে শুরু করে প্রোটিন সিন্থেসিস, থাইরয়েডের কাজ, যৌন স্বাস্থ্য বজায় রাখা, প্রোস্টেট গ্রন্থির কাজ, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো, লিভারের কাজকর্ম ও সুস্থ দৃষ্টিশক্তি এবং গর্ভবতী মহিলা ও শিশুদের যথাযথ বৃদ্ধি ও বিকাশে সাহায্য করে।

জিঙ্ক সর্বোচ্চ স্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্য সংক্রান্ত নির্দিষ্ট কিছু অবস্থার উন্নতি ঘটায়। এটা দৌড়বীরদের শক্তি, ক্ষমতা ও দক্ষতা বাড়ায়। এটা সর্দি-কাশির দারুণ নিরাময়ক এবং ত্বকে লাগানো হলে ঠাণ্ডা ঘা ও ব্রণ ও বয়সের ছাপ পড়ার চিকিৎসা করে। যে কারণে বয়স বাড়ার সঙ্গে জিঙ্ক সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। এটা সূর্য রশ্মির কারণে হওয়া ত্বকে ক্ষতি পোষায়, কোষকলার বৃদ্ধি ও পুনরুদ্ধারে ভূমিকা রাখে।

গবেষণা অনুযায়ী ৮৫% মহিলা এবং ৬৭% পুরুষ রোজকার প্রয়োজনীয়তার তুলনায় কম পরিমাণ জিঙ্ক পায়। ১৪ বছরের বেশি বয়সী ছেলেদের দিনে ১১ মিলিগ্রাম জিঙ্ক প্রয়োজন, মেয়েদের ৮ মিলিগ্রাম ও স্তনপান করানো মায়েদের দরকার ১২ মিলিগ্রাম। জিঙ্কের অভাবে শরীরের প্রায় ২০০টি এনজাইমের কাজ বাধাগ্রস্ত হয়। জিঙ্কের অভাবে কোষের কার্যকারিতা কমে, প্রোটিন তৈরিতে ব্যাঘাত ঘটে। পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও এই খনিজের জুড়ি নেই।

পুষ্টি-বিজ্ঞানের তথ্যানুসারে বিভিন্ন খনিজের মধ্যে জিঙ্ক শুধু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাই বাড়ায় না পাশাপাশি ত্বকে বার্ধক্যের ছাপ রুখতেও সাহায্য করে।

খনিজ উপাদান জিঙ্ক বা দস্তার উৎকৃষ্ট উৎস মাংস। তবে যারা প্রাণিজ খাবার কম খান বা নিরামিষাশী তারাও উদ্ভিজ্জ খাবার থেকে জিঙ্ক পেতে পারেন। করোনায় প্রতিরোধশক্তি বাড়াতে অনেকেই খেয়েছেন নানা রকম জিঙ্কের ওষুধ। কিন্তু গাদা গাদা জিঙ্কের ওষুধ খাওয়া যে উচিত নয়, তা অনেক চিকিৎসকই এখন বলছেন। বরং নিজের ডায়েটে যদি বিশেষ কিছু খাবার রাখতে পারেন, তা হলে স্বাভাবিক নিয়মেই শরীরে জিঙ্কের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে।

তিলের বীজ

তিলের বীজ পুষ্টির আঁধার। এটা জিঙ্ক, ক্যালসিয়াম, সেলেনিয়াম, লৌহ, ও ভিটামিন বি-সিক্স সমৃদ্ধ। এটা তাপ উৎপাদন করে, তাই দিনে দুই চামচের বেশি তিলের বীজ খাওয়া ঠিক নয়। অথবা সমস্যা এড়াতে সারা রাত পানিতে ভিজিয়ে বা হালকা ভেজে নাস্তা হিসেবে খেতে পারেন।

রেড মিট

বিফ, পর্ক বা ল্যম্বের মতো মাংসে প্রচুর পরিমাণে জিঙ্ক থাকে। তবে খুব বেশি রেড মিট খাওয়া শরীরের পক্ষে ভাল নয়। তাই মেপে খান। এবং খেলেও প্রসেস করা মাংস খাবেন না।

কাঁকড়া

কম ক্যালোরি অথচ বেশি পরিমাণে জিঙ্ক আছে এমন খাবার খেতে হলে কাঁকড়া, অয়েস্টারের মতো খাবার খেতে পারেন। তবে অনেকের এগুলো থেকে নানা রকম অ্যালার্জি হয়। আপনার তেমন কিছু আছে কিনা, সে বিষয়ে খেয়াল রাখুন। ভাল করে রান্না করবেন, নয়তো পেটের গণ্ডগোল হওয়ারও সম্ভাবনা থাকে।

বিভিন্ন রকমের ডাল

কাঁচা মুগ, ছোলা, কাবুলি ছোলা, রাজমার মতো শস্যে খেলেও আপনি প্রচুর পরিমাণে জিঙ্ক পাবেন। তবে এগুলি কাঁচা খেলে পেট ফুলে যাওয়ার একটা সমস্যা দেখা যায়। তাই সেদ্ধ করে, জলে ভিজিয়ে বা ফার্মেন্ট করে খেতে পারেন।

বীজ

ফ্ল্যাক্স সিড, চিয়া সিড, কুমড়োর বীজ, সূর্যমুখী ফুলের বীজের মতো কিছু জিনিস ডায়েটে রাখুন। সালাদের সঙ্গে মিশিয়ে খেতে পারেন। গুঁড়া করে আটা মাখার সময় মিশিয়ে দিতে পারেন। আবার সকালের নাশতার সঙ্গে লবণ-গোলমোরিজ মাখিয়েও খেতে পারেন।

দুধ-ডিম-দই

ডিমের মতো পুষ্টিকর খাবার খুব কম হয়। অনেক ডাক্তারই এখন বলছেন, দিনে একটা করে সিদ্ধ ডিম খেতে। এতে আপনার জিঙ্ক ছাড়াও নানা রকম পুষ্টির রসদ পেয়ে যাবেন। দুগ্ধজাত খাবারেও ডিমের মতোই অন্যান্য পুষ্টি ছাড়াও পাবেন জিঙ্ক।

সবজি

আলু, মাশরুম, কেল, বিনের মতো কিছু সবজিতে অল্প পরিমাণে জিঙ্ক থাকে। তাই নিয়মিত খেলে উপকার পাবেন।

পনির

যদিও উদ্ভিজ্জ খাবার নয়। তবে প্রোটিনের উৎস হিসেবে নিরামিষভোজীদের কাছে পনির বেশ জনপ্রিয়। পনির বা কটেজ চিজ ক্যালসিয়াম ও জিঙ্কের ভালো উৎস। স্যান্ডউইচ, সালাদ বা রুটিতে পনির যোগ করে খাওয়া যেতে পারে।

মনে রাখতে হবে, স্বাস্থ্যগত কোনো প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে এবং সুস্থ থাকতে স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে।

(ঢাকাটাইমস/২৫জুলাই/আরজেড/এজেড)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফিচার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :