হাইমচর ইউনিয়নের নৌকার প্রার্থী ‘রাজাকারের সন্তান’

চাঁদপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৭ নভেম্বর ২০২১, ১৬:২৬ | প্রকাশিত : ২৭ নভেম্বর ২০২১, ১৬:১৫

চতুর্থ ধাপে চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার ৫ নম্বর হাইমচর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে মনোনীত নৌকা মার্কার প্রার্থী মো. জুলফিকার আলী জুলহাস সরকারের বাবা ও চাচা চিহ্নিত রাজাকার এবং মুক্তিযুদ্ধকালে শান্তি কমিটির সদস্য ছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

জুলহাস সরকারের বাবা মো. জলিল সরকার ও চাচা মো. হামিদ সরকারকে রাজাকার হিসেবে চিহ্নিত করেছে এ সম্পর্কিত কমিটি। উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ইউনিটের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সন্তুষ কুমার মজুমদার ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা মুকবুল সরকার তাদের চিহ্নিত করেন।

গত ২৪ নভেম্বর হাইমচর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ থেকে নৌকার প্রার্থী মনোনীত করার পর বিষয়টি নজরে আসে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের। এরপর ২৫ নভেম্বর হাইমচর মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ইউনিটের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সন্তুষ কুমার মজুমদার প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি বরাবর ‘রাজাকারের সন্তান নৌকা মার্কার প্রার্থী’ জানিয়ে লিখিত চিঠি দেন। প্রধানমন্ত্রীর নিকট পাঠানো চিঠির এক কপি দেয়া হয় সাংবাদিকদের।

হাইমচর ইউনিয়নের প্রবীণ একাধিক নারী ও পুরুষ নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, জুলহাস সরকারকে নৌকার প্রার্থী দেয়া হয়েছে জেনে আমরা খুবই মর্মাহত এবং লজ্জিত। কারণ তাদের পরিবার ছিল অত্যাচারী। চরের লোকজনের প্রতি তারা অনেক অবিচার করেছেন। এরপর রাজাকার পরিবারের সন্তান হিসেবে কিভাবে তিনি স্বাধীনতার স্বপক্ষের দলের মনোনয়ন পায়, এ প্রশ্ন তাদের।

এ বিষয়ে হাইমচর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা মুকবুল সরকার বলেন, হাইমচর ইউনিয়নে নৌকা মার্কার মনোনীত প্রার্থী জুলহাস সরকারের চাচা হামিদ সরকার শান্তি কমিটির সভাপতি ছিলেন। যুদ্ধকালে চাঁদপুর শহরের মুলহেডে মুক্তিবাহিনী তাকে গুলি করে হত্যা করে।

জুলহাসের বাবা জলিল সরকার ছিলেন শান্তি কমিটির সদস্য। ওই সময়ের সব লোক এই বিষয়ে জানেন। কিন্তু তারা যেহেতু মৃত্যুবরণ করেছেন সেজন্য তাদের বিষয়ে আলোচনা আসেনি। এখন রাজাকার ও স্বাধীনতাবিরোধী ব্যক্তির সন্তান নৌকার প্রার্থী, এটি আমরা মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে মেনে নিতে পারি না।

উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ইউনিটের সভাপতি কর্তৃক প্রধানমন্ত্রী বরাবর পাঠানো আবেদন থেকে জানা গেছে, জুলহাস সরকারের চাচা হামিদ সরকার শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান ও তার বাবা জলিল সরকার সদস্য ছিলেন। হামিদ সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে নিহত হন এবং জলিল সরকার চাঁদপুর শহরেই থাকতেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর হাইমচর নিজ বাড়িতে এসে অসুস্থ হয়ে মারা যান। আমার জানামতে জলিল সরকার একজন রাজাকার ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার কাছে জুলহাস সরকারের বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আবেদন জানান হাইমচর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ইউনিটের সভাপতি সন্তুষ কুমার মজুমদার।

অভিযোগের বিষয়ে নৌকা মার্কার প্রার্থী মো. জুলফিকার আলী জুলহাস সরকার বলেন, ‘আমার বাবা ও চাচা রাজাকার ছিলেন না। মুক্তিযুদ্ধকালে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার। তারা কোনো রাজনৈতিক দলের সদস্যও ছিলেন না। আমি নিজে গত ১২ বছর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি। আমার বড় ভাই ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ছিলেন। এসব অভিযোগ মিথ্যা এবং ষড়যন্ত্র।’

(ঢাকাটাইমস/২৭নভেম্বর/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :