যেসব লক্ষণে বুঝবেন হাঁপানি হয়েছে

স্বাস্থ্য ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৫ ডিসেম্বর ২০২১, ১০:২৩

প্রকৃতিতে সর্বত্রই এখন শীতের হিম হিম ভাব। বাতাসে ধুলাবালির পরিমাণও অনেক বেড়েছে। নাক-মুখ দিয়ে প্রতিনিয়ত ফুসফুসে ধুলাবালি ঢুকছে। এ কারণে বাড়ছে চুলকানি, অ্যাজমা বা শ্বাসকষ্টজনিত রোগ। এসব রোগে শিশু, বৃদ্ধ এবং যাদের ডাস্ট অ্যালার্জি আছে, তারা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকেন। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ধুলিকণা সহজেই ফুসফুসে ঢুকে পড়ে ও মারাত্বক ক্ষতি করে। এর থেকে বাঁচতে হলে অবশ্যই আমাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।

অ্যাজমা বা হাপানির পেছনে মূলত মাইট নামক ক্ষুদ্র কীট দায়ী। বিছানা, বালিশ, কার্পেট হলো মাইটের আদর্শ বাসস্থান। এই মাইট মানুষের শরীরে প্রবেশ করে এবং অ্যালার্জি বাড়ায় যা অ্যাজমায় রূপান্তরিত হয়। তাই শীতকালে জানালা-দরজার পর্দা, কার্পেট, কম্বল নিয়মিত পরিস্কার করে ব্যবহার করতে হবে।

শীতে যাদের শ্বাসকষ্ট বাড়ে তাদের অতিরিক্ত সতর্ক হতে হবে। এসময় নিয়মিত মুখে মাস্ক পরতে হবে। এসময় সামান্য পরিমাণ ধুলাও তাৎক্ষণিক সমস্যা করতে পারে। যেমন চোখ জ্বালাপোড়া, হাঁচি-কাশি, অ্যালার্জিক রাইনাইটিস, হাঁপানি ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে। আবার যাদের আগে থেকেই ফুসফুসের সমস্যা আছে, তাদের অল্পতেই সমস্যা জটিল করে তুলতে পারে।

হাঁপানি রোগটি অ্যালার্জিক ডিসঅর্ডার। হাঁপানি হওয়ার নির্দিষ্ট কারণ নেই। তবে কয়েকটি কারণে হাঁপানি হয়ে থাকে। যেমন জন্মগত অর্থাৎ পরিবারের যদি কারো থাকে তাহলে ৫০ ভাগ চান্স রয়েছে হাঁপানি রোগ হওয়ার।

বেশিরভাগ সময়ই আমরা অনেক রোগ প্রথম থেকে বুঝতে পারি না। আর তার জন্যই চিকিৎসায় দেরি হয়ে যায়। তাই কোন রোগের কী লক্ষণ, তা জেনে রাখা অত্যন্ত জরুরি। হাঁপানির ক্ষেত্রেও তেমনই। বেশিরভাগ মানুষই বুঝতে পারেন না যে তার হাঁপানির সমস্যা হচ্ছে, সাধারণ শ্বাসকষ্ট ভেবে এড়িয়ে যান। আপনারও যদি হাঁপানির লক্ষণ সম্পর্কে তেমন কোনও ধারণা না থাকে, তাহলে জেনে নিন অ্যাজমা বা হাঁপানির প্রাথমিক লক্ষণগুলি কী কী হতে পারে।

কাশি

হাঁপানির অন্যতম লক্ষণ হল, কাশি হওয়া। ধুলা-বালি, কুয়াশা, ধোঁয়ার মতো বিরক্তিকর উপাদানগুলো হাঁপানির ঝুঁকি বাড়ায়। যখন এই মাইক্রো-পার্টিকেল শ্বাসনালীতে প্রবেশ করে, তখনই জ্বালা এবং প্রদাহ হয়। এছাড়া এগুলো স্নায়ুকে উদ্দীপিত করে, যা মস্তিষ্ককে সংকেত দেয় কাশির মাধ্যমে ফুসফুস থেকে বাতাস বের করে দিতে।

শ্বাসকষ্ট

শ্বাসকষ্ট হল হাঁপানির প্রাথমিক লক্ষণগুলোর মধ্যে একটি। শ্বাসকষ্ট হঠাৎ করেই শুরু হতে পারে। যখন শ্বাসনালী স্ফীত এবং সংকীর্ণ হয়ে যায়, তখন শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। যার ফলে, ফুসফুসে পর্যাপ্ত পরিমাণে অক্সিজেন চলাচল হয় না এবং ফলস্বরূপ শ্বাসকষ্ট শুরু হয়।

সাঁ সাঁ আওয়াজ

হাঁপানির টান উঠলে, প্রদাহের কারণে শ্বাসনালী সংকুচিত হয়ে যায়। যার ফলে শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়ার সময় শরীর প্রয়োজনীয় পরিমাণে অক্সিজেন গ্রহণ করতে ব্যর্থ হয়। তাই শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়ার সময় সাঁ সাঁ করে আওয়াজ বেরোয়।

বুকে চাপা ভাব অনুভূত হওয়া

হাঁপানির টান উঠলে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে বেশ কষ্ট হয়, ফলে শারীরিক অস্বস্তি বোধ হয়। এতে বুকের মধ্যে টান বাড়ে, বুকে চাপা ভাব অনুভব হয়। বুক ফুলে উঠতে পারে অথবা সমস্ত বাতাস বের হয়ে যেতে পারে।

দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়া

হাঁপানির কারণে হওয়া শ্বাসকষ্ট, আক্রান্ত ব্যক্তিকে দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে বাধ্য করতে পারে। শ্বাসকষ্টের সময় ফুসফুস থেকে সম্পূর্ণরূপে বাতাস বেরিয়ে যায়, ফলে আক্রান্ত ব্যক্তি নিজেই দ্রুত শ্বাস নিতে বাধ্য হন। এক্ষেত্রে দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়ার সময়, সাঁসাঁ শব্দও শোনা যায়।

কাশি যা সহজে দূর হতে চায় না

যারা তীব্র শ্বাসকষ্টে ভুগছেন তাদের মধ্যে অ্যাজমা সম্পর্কিত কাশি এত সহজে দূর হয় না। শীতকালে এই হাঁপানি রোগীদের কাশির সমস্যা আরও বাড়তে পারে। হাঁপানির কারণে হওয়া গুরুতর কাশির সমস্যাকে কফ-ভ্যারিয়েন্ট অ্যাজমা বলা হয়।

(ঢাকাটাইমস/৫ডিসেম্বর/আরজেড/এজেড)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফিচার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :