‘নাক ডাকা’ শুধুই বিড়ম্বনা? জানুন আসলে কী

ঘুমের মধ্যে নাক ডাকা, বাড়িসুদ্ধ জাগিয়ে তোলা- এ ব্যাপারটাকে আমরা সাধারণত একটা বিড়ম্বনা হিসেবেই জানি। কিন্তু এটা যে একটা রোগের লক্ষণও হতে পারে এটা হয় তো মাথায়ই আসেনি আপনার। কিন্তু নাক ডাকা নিয়ে হেলাফেলা করা মোটেও উচিত নয়। হতে পারে এটা অবসট্রাক্টিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া, যে রোগে ভারতের জনপ্রিয় গায়ক ও সংগীত পরিচালক বাপ্পি লাহিড়ি মারা গেলেন। মঙ্গলবার রাতে মুম্বাইয়ের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুল’এর স্লিপ মেডিসিন বিভাগের প্রশিক্ষক ও ঘুম বিশেষজ্ঞ রেবেকা রবিন্সের মতে, ঘুমের মধ্যে নাক ডাকা খুব স্বাভাবিক এবং এতে ভয়ের কিছু নেই।
তবে ‘অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া’র অন্যতম প্রধান লক্ষণ হলো ‘নাক ডাকা’। এর ফলে ঘুমের মধ্যে মানুষের দশ সেকেন্ড বা তার বেশি সময় শ্বাস ক্রিয়া বন্ধ থাকতে পারে।
জানুন কাকে বলে অবসট্রাক্টিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া-
অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া হলো ঘুমের সময় শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা হওয়া। এ ধরনের রোগীরা ঘুমালে শ্বাস-প্রশ্বাস অনিয়মিত হয়ে যায়। শ্বাস কখনো শুরু হয়, কখনো হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়।
স্লিপ অ্যাপনিয়া বিভিন্ন ধরনের। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি যেটা দেখা যায়, সেটা হলো অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির গলার পেশি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি শিথিল হয়ে যায়। এই পেশি মুখগহ্বরের টাকরা, আল জিভ, জিহ্বা ও টনসিলের মতো অংশগুলোকে ধরে রাখে। ফলে এই পেশির শিথিলতায় শ্বাস নেওয়ার পথটি রুদ্ধ হয়ে আসে ও ঘুমের সময় আচমকা শ্বাস প্রশ্বাসের সমস্যা দেখা দেয়।
অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়ার একটি উপসর্গ হলো শব্দ করে নাক ডাকা। এ ছাড়াও ঘুমের মধ্যে দম বন্ধ হয়ে আসা, আচমকা ঘুম ভেঙে যাওয়া ও মুখ শুকিয়ে যাওয়া- এসবও এ রোগের লক্ষণ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন অবস্থা ১০ সেকেন্ডের বেশি স্থায়ী হলে শরীরে অক্সিজেনের পরিমাণ বেশ কমে যেতে পারে। অতিরিক্ত ওজন, বার্ধক্য, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, শ্বাসনালীর সমস্যায় এই রোগের ঝুঁকি অনেকটাই বেড়ে যায়। একটি গবেষণায় জানা গেছে, অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের ঘুমের মধ্যে মৃত্যু হওয়ার আশঙ্কা সাধারণ মানুষের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। এই রোগের ফলে ঘুমের মধ্যে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও থাকে।
(ঢাকাটাইমস/১৬ফেব্রুয়ারি/এফএ)

মন্তব্য করুন