ছিন্নমূল কমলচন্দ্র পরিবারের পাশে জেলা প্রশাসক

শওকত আলী, চাঁদপুর
 | প্রকাশিত : ০৩ মার্চ ২০২২, ২২:২৫

অসহায় কমলচন্দ্র পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ। তার দুঃখ-দুর্দশার খবর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও জেলা প্রশাসকের দৃষ্টিগোচর হওয়ায় কমলচন্দ্র ঋষির মা’ও তার জীবন এখন পুনর্বাসনের পথে।

সরকার দারিদ্র্য বিমোচনে বিভিন্নভাবে কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু কোটি মানুষের ভিড়ে অনেকে কষ্টে দিনাতিপাত করলেও অনেক সময় দৃষ্টিতে আসে না। নিজের দুঃখ কষ্টের কথাগুলো প্রকাশ করার মাধ্যমও খুঁজে পান না। তেমনি একজন ছিলেন চাঁদপুর সদর উপজেলার শাহমাহমুদপুর ইউনিয়নের বড় শাহতলী রেলওয়ে স্টেশন সংলগ্ন এলাকার কমলচন্দ্র ঋষি (৩৬)। পেশায় তিনি মুচি। নিম্ন আয়ের এই ব্যক্তির দরিদ্রতার চিত্র তুলে ধরেন একটি জাতীয় গণমাধ্যম। বিষয়টি দৃষ্টিগোচর হয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও স্থানীয়ভাবে জেলা প্রশাসকের।

কমলচন্দ্র ঋষি ও তার মা মমতা ঋষিকে নিয়েই তাদের পরিবার। কিন্তু মা গত ৭ বছর ধরে জটিল রোগে আক্রান্ত এবং শয্যাশায়ী। মাথা গোঁজার ঠাঁই নেওয়ার জন্য নিজস্ব কোনো ভূমিও নেই। কোনোরকম জীবন বাঁচানোর জন্য রেলওয়ের জায়গা টিন দিয়ে জরাজীর্ণ ঘরে বসাবস করেন। কমলের জুতা সেলাই করে যে আয় হয়, তা দিয়ে সংসার আর মায়ের ওষুধ ক্রয় করতে সব সময় টানাটানির মধ্যে থাকতে হয়। যার ফলে তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘মানুষের জুতা সেলাই করলেও নিজের কপাল সেলাই করতে পারিনা’। এমন আক্ষেপের কথাগুলো সবার মনে নাড়া দেয়।

কমলচন্দ্র ঋষির আর্থিক দৈন্যদশার বিস্তারিত বিবরণ জেনে তাকে পুনর্বাসন করার জন্য প্রদক্ষেপ গ্রহণ করেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ। তিনি প্রথমেই কমলকে তার কার্যালয়ে এনে আর্থিক সহযোগিতা করেন এবং পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কর্মকর্তাদের দায়িত্ব প্রদান করেন।

বৃহস্পতিবার দুপুরের পর জেলা প্রশাসক, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা শাহনাজ, এসিল্যান্ড (সদর) মোহাম্মদ হেলাল চৌধুরী, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান নান্টুকে নিয়ে কমলচন্দ্র ঋষির জরাজীর্ণ ঘরে উপস্থিত হন। জেলা প্রশাসক কমলের অসুস্থ মায়ের খোঁজ খবর নেন এবং কথা বলেন। এ সময় অসুস্থ মায়ের চিকিৎসার জন্য আবারও আর্থিক সহযোগিতা করেন।

কমল চন্দ্র ঋষি পরিবারকে পুনর্বাসন প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, তাদের পরিবারের বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। প্রথমেই আমি তাকে আমার কার্যালয়ে ডেকে আর্থিক সহযোগিতা করি এবং তার আর্থিক দৈন্যদশার কথা শুনি। সে আমাকে জানায় জুতা সেলাই করে যে আয় হয়, তা দিয়ে খাবার এবং মায়ের চিকিৎসা করানো সম্ভব হয় না। থাকার জন্যও ভালো কোনো ঘর নেই। যে কারণে আমি নিজেই তাদের বাড়িতে এসেছি। তাদের নিজস্ব কোনো ঘর নেই। তাই আমরা পাশেই তাদেরকে জমিসহ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর যে ঘর, সেই ঘর নির্মাণ করে দিব। কমলের মায়ের চিকিৎসার দায়িত্বও আমরা নিয়েছি।

তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় প্রধানমন্ত্রী ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদেরকে ধন্যবাদ জানিয়ে কমলচন্দ্র ঋষি বলেন, আমাদের থাকার জায়গা ও মায়ের চিকিৎসার ব্যবস্থায় করায় আমি খুবই আনন্দিত। আমার ভালোভাবে বাঁচার চেষ্টার জন্য আপনাদের যে সহায়তা তার জন্য তার কথা চিরদিন ভুলবো না। মহান আল্লাহ পাকের কাছে আপনাদের মঙ্গল কামনা করছি।

(ঢাকাটাইমস/৩মার্চ/এআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :