হাওরে হঠাৎ ঘোলার পানি, তলিয়ে গেছে মাঠের থাকা শুকনা ধান-খর

ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ২৬ মে ২০২২, ১৭:৪৯
অ- অ+

ভৈরবের জোয়ান শাহী হাওড়ে হঠাৎ ঘোলার পানি ঢুকে মাঠে শুকাতে দেওয়া ধান ও খর পানিতে ভিজে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার ভোরে হঠাৎ করে সিলেটের বন্যার পানি ভৈরবের জোয়ান শাহী হাওরের বাঁধ ভেঙে উপজেলার তিন ইউনিয়নের এলাকার মাঠঘাট প্লাবিত হয়েছে। এ সময় জমি থেকে কাটা ধান, খড় পানিতে ভিজে গেছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার তিনটি ইউনিয়ন বিস্তৃত অন্যতম হাওর জোয়ান শাহী হাওর। এই হাওড়ে সাধারণত আষাঢ় মাসে বর্ষার পানি আসে। কিন্তু এই বছর কৃষকরা তাদের জমির ধান কেটে তাদের উৎপাদিত ফসল ঘরে তোলার আগেই চলে আসছে বর্ষার পানি। এসব পানির কারণে তিনটি ইউনিয়নে কয়েকশত কৃষকের আনুমানিক শত মণ ধান ও খড় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভোরে দিকে হঠাৎ করে ঘোলার পানি আসতে দেখে কৃষকরা আতকিংত হয়ে দৌড়াদৌড়ি করে মাঠে থাকা তাদের কষ্টার্জিত পানিতে ভেজা ফসল ঘরে তুলেন ।

সাদেকপুর ইউনিয়নের মৌটুপী গ্রামের বাসিন্দা মো. জামাল মিয়া বলেন, আমি বুঝার পর থেকে আমাদের মৌটুপী গ্রামে এত তারাতারি পানি আসতে কখনো দেখিনি। সাদেকপুর ইউনিয়নের সবচেয়ে বড় হাওর হচ্ছে মৌটুপীর হাওর। এই হাওরে ৯৫ % কৃষকের জমির কাটা ধান ও খড় এখনো শুকানোরর বাকী রয়েছে। এত তাড়াতাড়ি পানি চলে আসবে সেটা কেউ কল্পনাও করতে পারেনি। এখন কিভাবে কৃৃষকরা তাদের ধান ও খড় শুকাবে সেই চিন্তায় সময় পার করছেন।

আরেক কৃষক মিরান মিয়া বলেন, মৌটুপী গ্রামটি একটি হাওর বেষ্টিত এলাকা। এখানে বছরে ছয় মাস শুকনা আর ছয় মাস পানি থাকে। সাধারণ আষাঢ় মাসে এই বিলে পানি আসে কিন্তু এই বছর জৈষ্ট্য মাসেই বর্ষার পানি চলে আসছে। অসময়ে পানি চলে আসায় শতাধিক কৃষকের মাঠে থাকা শুকনা ধান ও খড় ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে। কেউ কেউ সকালে হঠাৎ পানি আসতে দেখে তাড়াহুড়ো করে মাঠের ধান, খড় বাড়িতে তুলেছেন। এর বেশিভাগ ধানই পানিতে ভিজে যায়।

শ্রীনগর ইউনিয়নের ভবানীপুর গ্রামের কৃষক বাছির মিয়া বলেন, এই বছর সেচের পানিতে ১০ বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষ করেছিলাম। ঈদের পরদিন থেকে এসব জমির ধান কাটতে শুরু করেছিলাম কিন্ত আবহাওয়া খারাপ থাকায় জমির ধান শুকাতে পারেনি। সেজন্যই ভিজা ধান ও খড় বাড়ির সামনের মাঠে জমা করে রেখেছিলাম। কে জানতো বর্ষার আগেই হঠাৎ করে পানি চলে আসবে তাহলে তো আর মাঠে ধান রাখতাম না। অসময়ের পানিতে মাঠে থাকা ৫০ মণ ধান ও খড় ভিজে গেছে।

এ বিষয়ে শ্রীনগর ইউপি চেয়ারম্যান মো.হারুন অর রশিদ ভূইঁয়া জানান, সকালে ঘুম থেকে উঠেই দেখি জোয়ার শাহী হাওরে ঘোলার পানি চলে আসছে। অসময়ে এই পানি হাওরে চলে আসায় কয়েক শতাধিক কৃষকের ধান ও খড় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সকাল থেকে শুরু করে এখনো পর্যন্ত কৃষকদের মাঠে থাকা ভিজা ধান ও খড় তাদের বাড়ি তুলছেন। আমার বয়সে কখনো এই সময়ে পানি আসতে দেখেননি তিনি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আকলিমা বেগম জানান, সিলেট অঞ্চলে বন্যা হওয়ায় সেই পানি মেঘনা নদী দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। নদীতে পানি বেড়ে গিয়ে উপজেলার জোয়ান শাহী হাওর এলাকায় পানি প্লাবিত হয়েছে। হঠাৎ পানি চলে আসায় মাঠে কৃষকদের শুকনার জন্য রাখা ধান ও খড় অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে তিনি স্বীকার করেন। তবে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের খোঁজ খবর রাখছেন বলে তিনি জানান।

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
হবিগঞ্জে ভুয়া চিকিৎসককে কারাদণ্ড 
ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি ও ড্যাফোডিল রেসপন্স সেন্টারের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত
নতুন দেশ গড়ার ডাক দিয়ে রাজপথে নেমেছি: নাহিদ ইসলাম
বীরের রক্তস্রোত, মায়ের অশ্রুধারা যেন বৃথা না যায়: খালেদা জিয়া
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা