ভারত থেকে অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার পথে দুদক কর্মকর্তাকে দেশে ফেরত

সৈয়দ ঋয়াদ, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ২৭ জুলাই ২০২২, ২২:০৫| আপডেট : ২৮ জুলাই ২০২২, ০৯:২৯
অ- অ+

অফিস আদেশ না নিয়ে ভারত থেকে অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার সময় ইমরুল কায়েস নামে দুদকের এক উপ-পরিচালককে বাংলাদেশে ফেরত পাঠিয়েছে ভারতের ইমিগ্রেশন পুলিশ। সরকারি অফিস আদেশ না নিয়ে সংস্থাটির ওই কর্মকর্তার দেশত্যাগের বিষয়টি ঢাকাটাইমসকে নিশ্চিত করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একাধিক কর্মকর্তা।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ২০২০ সালের নভেম্বরে ইমরুল কায়েস প্রেষণে দুদকে পদায়ন করে। সংস্থাটির অভিযোগ যাচাই-বাছাই সেলের একজন সদস্য তিনি। সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন ব্যক্তির বিরুদ্ধে দুদকে আসা অভিযোগ তিনি তাদের জানিয়ে দিতেন বলে অভিযোগ আছে। তবে বিনিময়ে তাদের কাছ থেকে কোনো সুবিধা নিতেন কি না তা জানা যায়নি।

সম্প্রতি অফিস আদেশ (জিও) না নিয়ে ভারত ভ্রমণে যান ইমরুল কায়েস। সেখান থেকে ভুয়া জিও বানিয়ে অস্ট্রেলিয়া ভ্রমণে উদ্যোগী হন। তবে অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার চেষ্টাকালে ভারতের ইমিগ্রেশন পুলিশের হাতে আটক হন তিনি। তার বিরুদ্ধে দুদকের অভিযোগের ভিত্তিতে বুধবার (২৭ জুলাই) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এপিডি অনু বিভাগে তাকে ন্যস্ত করা হয়।

ইমরুল কায়েসের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে দুদক সচিব মাহবুব হোসেন ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘তার (ইমরুল কায়েস) কোনো সরকারি ছুটির আদেশ ছিল না। তিনি সরকারি আদেশ (জিও) না নিয়ে ভারতে গেছেন। সে কারণে আমরা তার বিরুদ্ধে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ করেছি। যেহেতু তিনি প্রশাসন ক্যাডারের, তার বিষয়টি দেখার এখতিয়ার আমাদের নেই।’ ভারতে ইমরুল কায়েসের আটক হওয়ার বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না বলে জানান।

ইমরুল কায়েসের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের অনুসন্ধান চলছে বলে জানা গেছে।

তবে তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেন ইমরুল কায়েস। ঢাকাটাইমস থেকে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমার দুই মাস আগের জিও ছিল, তখন আমি যেতে পারিনি। ঈদুল আজহার পর দুদিনের জন্য ভারতে গিয়েছিলাম। আমাকে ইমিগ্রেশন পুলিশ আটক করেছে কিংবা আমি অর্থ পাচার করেছি এই ধরনের তথ্য ঠিক নয়।’

দুদক সূত্র জানায়, দুদকের ওই কর্মকর্তা (ইমরুল কায়েস) ২০২০ সালের নভেম্বর থেকে প্রেষণে দুদকের অভিযোগ যাচাই-বাছাই সেলে নিযুক্ত হন। ২০২২ সালের ২৯ মার্চ তিনি ভারত ভ্রমণের জন্য ৯ দিনের ছুটি (জিও) নেন। ১০ থেকে ১৮ মে পর্যন্ত তার ছুটি কার্যকর হয়।

১০ মে তারিখে ভারতে যান ইমরুল কায়েস। তবে ভারত ভ্রমণের বিষয়ে ছুটির আবেদনে কোনো কারণ উল্লেখ করেননি। তিনি কেন ভারত যাবেন সে বিষয়টিও জানে না দুদক। এ ছাড়া কোন উৎস হতে টাকা পেয়েছেন, কোথায় থাকবেন সেই সংক্রান্ত কোনো কিছু অফিসকে জানাননি।

একটি সূত্র জানায়, ইমরুল কায়েস ভারতে ভ্রমণের অফিস আদেশ নেন। পরে ভুয়া সরকারি আদেশ (জিও) ব্যবহার করে তিনি অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার চেষ্টা করেন। ভারতের ইমিগ্রেশর পুলিশ তাকে আটক করে দেশ ফেরত পাঠায়। জানা যায়, অস্ট্রেলিয়া উদ্দেশে যাওয়া ও খরচ সংক্রান্ত বিতর্ক ঠেকাতেই ইমরুল কায়েস ভারতের জিও নেন। তবে তার ভারতের জিওর কোনো ভ্যালিডিটি ছিল না। তিনি মে মাসে জিও নেন। সেই জিওর মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও তিনি দ্বিতীয়বার জিও ছাড়া ভারতে যান। সেখানে থেকে কোনো ধরনের জিও ছাড়া অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার চেষ্টা করেন, যা সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী চাকরি বিধির মারাত্মক লঙ্ঘন।

জিও ছাড়া দেশ ত্যাগ করার কারণে দুদকের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে তাকে বুধবার (২৭ জুলাই) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এডিপি অনুবিভাগে ন্যস্ত করা হয়েছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ-সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। এতে বলা হয়, পুনরাদেশে না দেওয়া পর্যন্ত তাকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এডিপি অনুবিভাগে বদলিপূর্বক নিয়োগ করা হলো।

(ঢাকাটাইমস/২৭জুলাই/মোআ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
ধামরাই কি আমাদের মনোজাগতিক পঁচনকেই দৃশ্যমান করল?
কারবালার নৃশংস ঘটনা: নেপথ্যে কারা?
৪৪তম বিসিএস: পররাষ্ট্র ক্যাডারে প্রথম হলেন ডা. শামীম শাহরিয়ার
ইতিহাসে তাৎপর্যময় ১০ মহররম, যা ঘটেছে যা ঘটবে
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা