কী বার্তা দিল বায়রার নির্বাচন? শৌর্য-বীর্য আর প্রতিপত্তিতে বলীয়ানরা কেন ধরাশায়ী হলেন

কেন ব্যর্থ হলো মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের জনশক্তি রপ্তানিতে একচেটিয়া সিন্ডিকেট-এর হোতারা?
বায়রা নির্বাচনে হাজারো মুলা ঝুলিয়েও কেন পরাজিত? সকল ব্যবসায়ীকে কোণঠাসা করে মালয়েশিয়ায় শ্রমশক্তি পাঠানোর কতিপয় নিয়ন্ত্রণকারীরা কেন হেরে গেলেন?
গত শনিবারের বায়রা (বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিস) নির্বাচনের ফলাফল কী বার্তা দিচ্ছে? মুঠোফোনে অনেকেই ঢাকা টাইমসের সঙ্গে এ বিষয়ে তাদের মনোভাব জানান দিয়েছেন।
শৌর্য, বীর্য আর প্রতিপত্তিতে বলীয়ান রুহুল আমিন স্বপন ও তার সঙ্গীরা কি বুঝতে পেরেছেন সাধারণ জনশক্তি রপ্তানিকারকদের মনোভাব?
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় কি বুঝতে পেরেছেন তাদের লাইসেন্সধারী সাধারণ ব্যবসায়ীরা কী চান? এই প্রশ্নগুলোই ঘুরেফিরে আসছে।
ঢাকা টাইমসের সঙ্গে আলাপকালে একাধিক জনশক্তি রপ্তানিকারক জানান, এ কথা কে না জানে, মালয়েশিয়ায় কতিপয় ব্যবসায়ীদের ‘সিন্ডিকেট’-এর প্রধান ক্যাথারসিস ইন্টারন্যাশনালের মালিক রুহুল আমিন স্বপন। তার নেতৃত্বে বায়রা দখল করতে যেভাবে শক্তির মহড়া দেওয়া হয়েছে তা-ও ছিল নজিরবিহীন। সূত্রগুলো জানাচ্ছে, আড়ালে-আবডালে ছিল হুমকি, প্রলোভন, সেই সঙ্গে প্রভাব বিস্তারের সব রকম চেষ্টা।
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি বংশোভূত দাতো আমির নূর আর বাংলাদেশে রুহুল আমির স্বপন মিলে নেতৃত্ব দিচ্ছেন মালয়েশিয়াতে বাংলাদেশি শ্রমিক পাঠানোর সিন্ডিকেটের। ঢাকা টাইমসের সঙ্গে আলাপকালে জনশক্তি খাতের সাধারণ কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, মালয়েশিয়ার একটি বিতর্কিত চক্রের সহায়তায় সরকারের লাইসেন্সধারী সব ব্যবসায়ীকে বাদ দিয়ে মাত্র ২৫টি লাইসেন্সধারীর মাধ্যমে জনশক্তি রপ্তানির আয়োজন করেছেন ‘সিন্ডিকেট’-এর হোতারা। উদ্দেশ্য, অতিরিক্ত মুনাফা অর্জন ও ইচ্ছেমতো অভিবাসন ব্যয় নির্ধারণ।
সূত্র মতে, বিস্ময়করভাবে সিন্ডিকেটের প্রলোভনে পা দিয়ে তাদের সহযোগী হয়েছেন একজন প্রভাবশালী মন্ত্রী। অন্তত তিনজন সংসদ সদস্য। কারণে-অকারণে সিন্ডিকেটের হোতারা খোদ সরকারি দলের অনেক নীতিনির্ধারকের নামও ব্যবহার করছে। ঢাকা টাইমসের সঙ্গে আলাপকালে বায়রার সাবেক একজন সহ-সভাপতি বলেন, ‘জনশক্তি খাতের মূলধারার ব্যবসায়ীদের পরিবর্তে নামেমাত্র ব্যবসায়ীদের নিয়ে মালয়েশিয়ার বাজার দখল করতে চাওয়ার পেছনে শুধু অর্থলিপ্সা আছে। আর এর মাধ্যমে শুধু অভিবাসন ব্যয়ই বাড়বে। এর প্রভাবে গোটা শ্রমবাজার খাতে অরাজকতা সৃষ্টি হবে।’ বায়রার এই সাবেক সহ-সভাপতি বলেন, ‘গত শনিবারের নির্বাচনে সাধারণ ব্যবসায়ীরা সবার জন্য ব্যবসা উন্মুক্ত করার পক্ষেই আসলে রায় দিয়েছেন।’
সত্যি কি তাই? এটাই যদি না হবে তাহলে আড়ালে-আবডালে পেশিশক্তির ব্যবহার করেও কেন পরাজয় এড়াতে পারল না মালয়েশিয়ায় জনশক্তি খাতে সিন্ডিকেটের হোতারা?
বায়রার সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ নূর আলী ও আবুল বাশার প্যানেলের বিপুল বিজয়ের পেছনে রহস্য কী? ‘লাইসেন্স যার ব্যবসা তার’- এই স্লোগানেই বাজিমাত করলেন তাঁরা?
কেন, কিভাবে সরকারবিরোধীদের কব্জায় চলে গেল মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রপ্তানির ব্যবসা? হাতেগোনা কয়েকজন সরকারি দলের নেতাদের নামকাওয়াস্তে ব্যবসার হিস্যা দিয়ে আসলে মুনাফা যাচ্ছে কাদের পকেটে? সরকারবিরোধীদের ফুলেফেঁপে ওঠার এই সুযোগ কারা দিচ্ছেন? এসব বুমেরাং হবে না-তো?
(ঢাকাটাইমস/৫সেপ্টেম্বর/এআরডি)

মন্তব্য করুন