সৌদিতে মাধবপুরের এক গৃহকর্মীকে আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ

নুর উদ্দিন সুমন, হবিগঞ্জ
 | প্রকাশিত : ০৫ অক্টোবর ২০২২, ২২:৪৪

সৌদির রিয়াদে গৃহকর্মীকে আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। উদ্ধার করতে ওই গৃহকর্মী তার পিতার কাছে মোবাইল ফোনে আকুতি জানিয়ে বলেন, বাবা আমি আর নির্যাতন সহ্য করতে পারছি না, আমাকে উদ্ধার করো, দেশে আনার ব্যবস্থা করো। সৌদির রিয়াদ থেকে যোগাযোগমাধ্যম ইমোতে ফোন করে কথাগুলো বলছিলেন গৃহকর্মীর কাজ নিয়ে সৌদিতে যাওয়া ইয়াসমিন বেগম (১৯)।

জানা যায়, মাধবপুর উপজেলার কমলপুর গ্রামের কুদ্দুস মিয়ার মেয়ে ইয়াসমিন বেগমকে গত ২৭ সেপ্টেম্বর গৃহকর্মীর কাজ দিয়ে সৌদিতে পাঠায় ঢাকার আরামবাগ এলাকায় অবস্থিত শান ওভারসিস নামের একটি রিক্রুটিং এজেন্সি।

এ বিষয়ে গত রবিবার প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে মেয়েটির পরিবার। ওই অভিযোগ ও ইয়াসমিনের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ইয়াসমিন তিন দিন আগে রিয়াদ থেকে ইমোতে তার বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করেন।

এ সময় তিনি বলেন, তাকে সৌদির রিয়াদে আটকে রেখে নির্যাতন করা হচ্ছে। এ নির্যাতন তিনি সহ্য করতে পারছেন না। তাকে সেখান থেকে যেন উদ্ধার করে আনা হয়। এ ফোন পেয়ে ইয়াসমিনের পরিবারে অশান্তি নেমে আসে। পরিবারের সদস্যরা যোগাযোগ করেন যে দালালের মাধ্যমে সৌদি পাঠান, সেই কাশেম মিয়ার সঙ্গে। তিনি হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার আমতলী এলাকার বাসিন্দা। কাশেমই ইয়াসমিনকে ঢাকার শান ওভারসিসের মাধ্যমে সৌদি পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু কাশেম এখন বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছেন।

ইয়াসমিনের বাবা কুদ্দুস মিয়া বলেন, তার মেয়েকে রিয়াদের একটি নির্জন স্থানে আটকে রেখ শারীরিক নির্যাতন করা হচ্ছে। যে কাজের কথা বলে নিয়ে যাওয়া হয়, সেই কাজ না দিয়ে নানা অবৈধ কাজে তাকে জড়িত করার পাঁয়তারা করা হচ্ছে। এখন দালাল কাশেম কোনো দায়িত্ব নিতে চান না। যে কারণে তারা রবিবার প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

মাধবপুর উপজেলার কমলপুর গ্রামের মুজাহিদ মসি বলেন, ‘ইয়াসমিন আমার গ্রামের বাসিন্দা। এ ঠিকানায় তার জাতীয় পরিচয়পত্র থাকা সত্তে¡ও দালালেরা চুনারুঘাট উপজেলার একটি ঠিকানা ব্যবহার করে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করে সৌদিতে পাঠান। এ দালাল চক্র কী করে জাতীয় পরিচয়পত্র পাল্টিয়ে পাসপোর্ট করল, তা নিয়েই প্রশ্ন।

এ বিষয়ে কাশেম মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তিনি ঢাকার আরামবাগের শান ওভারসিস রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে ইয়াসমিনকে গৃহকর্মীর কাজ দিয়ে সৌদিতে পাঠিয়েছিলেন। সেখানে ইয়াসমিন ভালো আছেন। অভিযোগগুলো সঠিক নয়। ঢাকার শান ওভারসিসে যোগাযোগ করা হলে প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী এ বি এম শামছুল আলমকে মুঠোফোনে পাওয়া যায়নি।

তবে তার প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা সুইটি আখতার বলেন, ‘দালালের মাধ্যমে আমরা ইয়াসমিনকে পেয়েছি। কাশেম নামের এক লোক তাঁকে নিয়ে আসেন আমাদের কাছে। ইয়াসমিন সৌদিতে যাওয়ার পরপই জানান, সেখানে তার কাজ ভালো লাগে না। ওই মেয়ে নিজে থেকেই থাকতে চান না। তার পরিবার চাইলে আমরা তাঁকে দেশে আনার চেষ্টা করব।’

মাধবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ মাইনুল ইসলাম বলেন, তিনি অভিযোগ পেয়েছেন। এ বিষয়ে অভিযুক্ত স্থানীয় দালাল কাশেমকে মঙ্গলবার তার অফিসে ডেকে আনা হয়। কাশেম স্বীকার করেছেন, তার মাধ্যমে মেয়েটিকে সৌদিতে পাঠানোর কথা। তাই ওই ব্যক্তিকে সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয় মেয়েটিকে সেখান থেকে ফেরত নিয়ে আসতে। অন্যথায় তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা তাকে জানানো হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/৫অক্টোবর/এআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :