প্রতিদিন আঙ্গুর খেলেই দূর হবে ত্বকের ক্যানসার

ফিচার ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২২, ০৯:৪৭ | প্রকাশিত : ০৬ ডিসেম্বর ২০২২, ০৯:৪৫

ফলের রানি আঙ্গুরকে পুষ্টির ‘স্টোরহাউস’ বলা হয়। মন মাতানো আঙ্গুরের রং, কোনোটা সবুজ তো কোনটা বেগুনী-লাল, কোনটা আবার গাঢ় ব্লু। এটি যেমন দেখতে সুন্দর তেমনি এর স্বাদও অতুলনীয়। আঙ্গুর নিয়মিত খেলে বিভিন্ন ধরনের মারণ রোগকে এড়ানো সম্ভব হয়। এটি আমাদের রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা এতটাই বাড়িয়ে তোলে যে ছোটখাটো রোগগুলো শরীরের ধারে কাছে ঘেঁষতে পারেনা।

গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন ৬০টি করে আঙ্গুর খেলে রোদে পোড়া ত্বকের কালচে ভাব নির্মূল হয়। গবেষণায় অংশগ্রহণকারী ২৯ জনকে আঙুরের গুঁড়া খাইয়ে পর্যবেক্ষণ করেছিলেন। এই গুঁড়া খাওয়ার ৪ সপ্তাহ পর, কিছু জনের ত্বকে পরিবর্তন লক্ষ্য করেন গবেষকরা। তাদের ধারণা আঙ্গুরে থাকা ‘পলিফেনল’ নামক যৌগটির কারণেই হয়তো ত্বকের এই পোড়া ভাব রোধ করা সম্ভব হয়েছে।

সম্প্রতি ব্রিটেনে বাড়তে থাকা ত্বকের ক্যানসার ভয় ধরাচ্ছে চিকিৎসক থেকে সাধারণ মানুষের মনে। সে দেশে দু’লক্ষেরও বেশি মানুষ ‘নন-মেলানোমা’ ত্বকের ক্যানসারে আক্রান্ত। দুরারোগ্য এই ত্বকের ক্যানসারে প্রতি বছর নতুন করে ১৬ হাজার রোগী আক্রান্ত হন। এই ধরনের ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার পিছনে অতিবেগুনি রশ্মিরই প্রভাব রয়েছে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।

আঙ্গুরে রয়েছে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ভিটামিন বি, কে, সি, বি১, বি৬ এবং খনিজ উপাদান ম্যাংগানিজ, ক্যালসিয়াম ও পটাশিয়াম। ফ্লেভোনয়েডস হল আঙ্গুরের মধ্যে পাওয়া শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান যা শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এছাড়াও নানান পুষ্টি উপাদান রয়েছে, যেমন ক্যালরি, ফাইবার, গ্লুকোজ, ম্যাগনেসিয়াম এবং সাইট্রিক অ্যাসিড — যা প্রচুর পরিমাণে আঙ্গুরের মধ্যে পাওয়া যায়।

নিয়মিত আঙ্গুর ফলটি সেবন করেন তাহলে নিজের শারীরিক পরিবর্তন দেখে আপনি নিজেই অবাক হয়ে যাবেন।

আঙ্গুর নিয়মিত খেলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আসে। নিউট্রিশন নামক জার্নালের এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয় যে, প্লাটিলেটের সক্রিয়তা কমানোর মাধ্যমে আঙ্গুরের জুস হার্টের ব্লকেজ প্রতিরোধে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখানো হয় যে, এক গ্লাস লাল আঙ্গুরের জুস ধমনীতে প্লাটিলেটের সংখ্যা কমায়।

আঙ্গুর ক্যানসারের মতো বিপজ্জনক রোগ প্রতিরোধেও সহায়ক। আঙ্গুরে পর্যাপ্ত পরিমাণে উপকারী উপাদান রয়েছে, যেমন – গ্লুকোজ, ম্যাগনেসিয়াম এবং সাইট্রিক অ্যাসিড। আঙ্গুর মূলত টিবি, ক্যানসারের মতো মারণ রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করে। স্তন ক্যানসারের ঝুঁকিতে আছেন এমন রোগীরা খেতে পারেন আঙ্গুর। গবেষণায় দেখা গেছে, আঙুরের উপাদানগুলো ক্যানসার সৃষ্টিকারী কোষের বিরুদ্ধে কাজ করতে সক্ষম।

যারা হৃদরোগে ভুগছেন তাদের জন্য আঙ্গুর খাওয়া খুবই উপকারী। এটি হৃদপিণ্ডকে সুস্থ ও স্বাভাবিক রাখে ও রক্ত চলাচলে সাহায্য করে। একটি গবেষণা অনুযায়ী, এটি স্তন ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করে।

আঙ্গুরের উপাদানগুলো ক্ষতিকারক ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা সহনশীল অবস্থায় রাখে। সেই সঙ্গে কিডনির রোগব্যাধির বিরুদ্ধেও লড়াই করে।

ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের আঙ্গুর খাওয়া উচিত। এটি দেহে চিনির মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও এটি আয়রনের একটি ভালো উৎস যা শারীরিক দুর্বলতাকে দূর করে।

আঙ্গুরের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ পাওয়া যায়, যা চোখের জন্য খুবই উপকারী। যাদের চোখের সমস্যা রয়েছে তারা নিয়মিত আঙ্গুর খেতে পারেন।

ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাস সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য আঙ্গুরে অসংখ্য পুষ্টি উপাদান রয়েছে। আঙ্গুর ভিটামিন “সি” এর একটি ভাল উৎস, যা দেহের প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে উন্নত করতে পারে। ফ্লু ভাইরাসের বিরুদ্ধে রক্ষা করার জন্য আঙ্গুরের খোসা খাওয়া বেশি উপকারী।

আঙ্গুরের রস পানে সরাসরি ওজন কমতে সাহায্য করেনা কিন্তু পোস্ট ওয়ার্ক আউট ড্রিংক হিসেবে এটি চমৎকার। একটি গবেষণায় জানা যায় যে, একটানা ১২ সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন আঙ্গুরের জুস পান করলে ওজন বৃদ্ধি পায়না।

শরীরের ফ্রি রেডিকেলস ত্বকে বলিরেখা ফেলে দেয়। আঙুরে থাকা ভিটামিন সি আর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এই ফ্রি রেডিকেলের বিরুদ্ধে লড়ে, শরীরে বয়সের ছাপ পড়তে দেয় না।

(ঢাকাটাইমস/৬ ডিসেম্বর/আরজেড)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফিচার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :