অতিথি পাখির কলকাকলিতে ঘুম ভাঙে কিশোরগঞ্জের নরসুন্দা তীরের বাসিন্দাদের
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যে ভরপুর কিশোরগঞ্জের নরসুন্দার দুই তীর। শীত মৌসুমে নরসুন্দায় এসেছে অতিথি পাখি। পাখিদের কিচির-মিচির কলরবে ঘুম ভাঙে দুই তীরের বাসিন্দাদের। শীত আর অতিথি পাখি যেন ওৎপ্রোতভাবে জড়িত। প্রতি বছরের মতো এবারের শীতেও অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখরিত হয়ে আছে নরসুন্দা নদের তীর। নরসুন্দা নদের আকাশে অতিথি পাখির বিচরণ এক অপরূপ পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। উপযুক্ত পরিবেশ আর নিরাপদ আশ্রয়ে এসব অতিথি পাখি এখানে নির্ভাবনায় মেতে উঠেছে কলকাকলি ও জলকেলিতে। কেউ আবার ডুব সাঁতারে ব্যস্ত।
তাদের এ কার্যকলাপ দেখতে এবং ক্যামেরাবন্দি করতে ছুটে আসে জেলার দূর-দুরান্ত থেকে দর্শনার্থীরা। অতিথি পাখি দেখতেই দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষণীয়।
এসব অতিথি পাখির কলকাকলি আর কিচির-মিচির শব্দে গুরুদয়াল সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে মধুময় সুরের আবহ বিরাজ করছে। এখন ক্যাম্পাসবাসীর ঘুম ভাঙে অতিথি পাখির কলকাকলিতেও। আবার সারাদিন কর্মব্যস্ততা শেষে অতিথি পাখির মধুময় সুরে ঘুমিয়ে পড়েন তারা। তবে অতিথি পাখি এলেও নরসুন্দা নদে কচুরীপনায় ভরে গেছে। শাপলার অস্তিত্ব প্রায় বিলীন হয়ে গেছে। এক সময়ে লাল শাপলার মাঝে অতিথি পাখির উঁকি দেখতে কত না মধুর ছিল।
প্রতি বছর উত্তরের শীতপ্রধান দেশ সাইবেরিয়া, মঙ্গোলিয়া, নেপাল, সিনচিয়াং ও ভারত থেকে হাজার হাজার অতিথি পাখি দক্ষিণ এশিয়ার বাংলাদেশে আসে। বাংলাদেশে আসা পাখিদের ৮-৯ শতাংশ এই ক্যাম্পাসে আসে। মূলত অক্টোবরের শেষ ও নভেম্বরের প্রথম দিকেই এরা এ দেশে আসতে শুরু করে। মার্চের শেষ দিকে তারা আপন ঠিকানায় ফিরে যায়।
এছাড়াও কিশোরগঞ্জের হাওরা লে অসংখ্য পাখির আগমন ঘটেছে। এদের বেশিরভাগই হাঁস জাতীয় ও পানিতে বসবাস করে। এর মধ্যে সরালি, পচার্ড, ফ্লাইফেচার, গার্গেনি, ছোট জিরিয়া, মুরগ্যাধি, কোম্বডাক ও পাতারি অন্যতম। এছাড়া মানিক জোড়, কলাই, ছোট নগ, জলপিপি, নাকতা, খঞ্জনা, চিতাটুপি, লাল গুড়গুটি প্রভৃতি পাখি এদেশে অতিথি হয়ে আসে প্রতি বছর।
নরসুন্দা নদের দুই তীরকে পরিচ্ছন্ন করে পাখিদের জন্য আশ্রয়স্থল গড়ে তোলা হলে প্রকৃতি ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা হতো বলে সচেতন মহলের ধারণা।
(ঢাকাটাইমস/২২ডিসেম্বর/এলএ/এসএ)