ফেনীতে আড়াই কোটি টাকার সুইমিংপুল পরিত্যক্ত, বখাটে ও মাদকসেবীদের আড্ডা

এম শরীফ ভূঞা, ফেনী
 | প্রকাশিত : ২৪ ডিসেম্বর ২০২২, ১৬:৪৩

ফেনীতে আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সুইমিংপুলটি পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে আছে। ব্যবহৃত না হওয়ায় সুইমিংপুল এলাকায় গড়ে উঠেছে বখাটে ও মাদকসেবীদের আড্ডা। পুলে চার বছর আগে মাত্র একবার পানি ছাড়া হয়। এরপর আর পানির দেখা পায়নি পুলটি। সেখানে এখন ফুটবল খেলে স্থানীয় শিশু-কিশোরেরা।

২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় জেলা ক্রীড়া সংস্থার মাধ্যমে প্রায় ১২ লাখ টাকা খরচ করে সুইমিংপুলের দরজা জানালা, টাইলস মেরামত ও রং করা হয়। তখন সুইমিংপুলের দুটি ফটকে তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়, যাতে বহিরাগত বখাটেরা সহজে ভেতরে ঢুকতে না পারে। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি। বহিরাগত বখাটেদের আড্ডা বন্ধ করা যায়নি। বখাটেরা আবারও দুটি ফটক ভেঙে ফেলে ও ভবনের সব কটি জানালার কাচ এবং ভেতরে কয়েকটি স্থানে বেশ কিছু টাইলস আবারও ভেঙে ফেলেছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, পুলের ভেতরের অংশে স্থানীয় শিশু কিশোরেরা দল বেঁধে ফুটবল খেলছে। পুলের ওপর বেশ কিছু কিশোর যুবক স্থানে স্থানে বসে গল্প করছে। সুইমিংপুলের সামনের অংশে মাঠে কেউ ক্রিকেট খেলছে। পুলের দুটি ফটক ও সব কটি জানালার কাচ ভাঙা। দোতলায় ফটকের রড কাটা। সন্ধ্যার পর মাদকসেবীদের আড্ডার খবরও পাওয়া যায়। সুইমিংপুলের দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মচারী করিমুল হক জানায়, স্থানীয় কিশোর–যুবকেরা তাঁর কথা শোনে না। সারা দিন, এমনকি সন্ধ্যায়ও জোর করে ঢুকে আড্ডা দেয়। ফেনী জেলা ক্রীড়া সংস্থার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ফেনী সুইমিংপুল নির্মাণের জন্য ১৯৯৭ ও ২০০১ সালে দুই দফায় মোট ২ কোটি ৫১ লাখ ৮০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়। প্রথম পর্যায়ে ব্যয় ধরা হয় ১ কোটি ৯৯ লাখ ৮৩ হাজার টাকা। দ্বিতীয় পর্যায়ে বরাদ্দ দেওয়া হয় ৫১ লাখ ৯৭ হাজার টাকা। ফেনী শহরের দক্ষিণ-পূর্ব পাশে দাউদপুর সেতুর অদূরে ফেনী মৌজায় তিন একর জমিতে সুইমিংপুলটি নির্মাণ করা হয়।

কাজ শেষে ২০০৩ সালে সুইমিংপুলটি জেলা ক্রীড়া সংস্থার কাছে হস্তান্তর করা হয়। এরপর এটি সম্পূর্ণ পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকে। চুরি হয়ে যাওয়ার ভয়ে গভীর নলকূপের মোটরটি ভাষাশহীদ সালাম স্টেডিয়ামের অফিসকক্ষে নিয়ে রাখা হয়। এরপর থেকে বিভিন্ন সময় সুইমিংপুলের অফিসকক্ষ, বিশ্রামাগার, ড্রেসিং কক্ষের দরজা-জানালা বখাটেরা ভেঙে ফেলে। সব কটি জানালার কাচও ভেঙে দেওয়া হয়। এমনকি টাইলস ও বৈদ্যুতিক সুইচ, বাল্বসহ সবকিছু ব্যবহার অযোগ্য হয়ে পড়ে আছে। সানরাইজ যুব ওয়েলফেয়ার ফাউনন্ডেশনের সাংস্কৃতিক সম্পাদক রবিউল আলম মিঠু বলেন, স্কুল কলেজ পর্যায়ে বিভিন্ন সময় সাঁতার প্রতিযোগিতা হয়। তখন অন্যদের পুকুর ব্যবহার করতে হয়। সুইমিংপুলটি চালু থাকলে সেখানেই এসব প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা করা যেত। তা ছাড়া জেলায় বেশ কিছু শিক্ষার্থী সাঁতারে প্রশিক্ষণ নিতেও ইচ্ছুক। তাদের ভালোভাবে প্রশিক্ষণ দিতে পারলে জাতীয় পর্যায়ে অংশ নিয়ে ভালো কিছু করতে পারত।

জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক আমির হোসেন জানান, দীর্ঘ ১৯ বছরে মাত্র একবার ২০১৮ সালে পুলে পানি দেওয়া হয়। তখন একটি প্রতিযোগিতাও হয়েছিল বলে তাঁর কাছ থেকে জানা যায়। তবে এর পর থেকে মোটর কাজ করেনি। পুলেও পানি ওঠেনি। শুকনো পুলের ভেতরের অংশে স্থানীয় শিশু–কিশোরেরা এখন ফুটবল খেলে। জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি ও ফেনী জেলা প্রশাসক আবু সেলিম মাহমুদ উল হাসান বলেন, তিনি শিগগিরই সুইমিংপুলটি চালুর উদ্যোগ নেবেন। এটি ব্যয়বহুল। জেলা ক্রীড়া সংস্থার সামর্থ্য নেই। সুইমিংপুলের বাইরের খালি জায়গা অন্য কোনো সংস্থাকে ভাড়া দিয়ে হলেও সেটা রক্ষণাবেক্ষণের উদ্যোগ নেওয়ার কথা চিন্তা করা হচ্ছে।

(ঢাকাটাইমস/২৪ডিসেম্বর/এআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

আমাদের স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করেন প্রধানমন্ত্রী: অর্থ প্রতিমন্ত্রী

সাতক্ষীরায় পুকুরে ডুবে শিশুর মৃত্যু

উপজেলা নির্বাচন: মির্জাপুরে ১২ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র দাখিল

চিরনিদ্রায় শায়িত পাইলট আসিম জাওয়াদ

বরিশালে মাদকসহ চার নারী-পুরুষ গ্রেপ্তার 

স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনের লড়াইয়ে ছাত্রলীগ সর্বতোভাবে পাশে থাকবে: গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী

দিনাজপুরে যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা: আহত ২৫

উপজেলা নির্বাচন: চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ ২৬ জনের বিরুদ্ধে সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা

চাঁদপুরে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে পুড়িয়ে হত্যা, বেনাপোলে আটক

মানিকগঞ্জে পৌঁছেছে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত পাইলট আসিম জাওয়াদের মরদেহ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :