কসবায় স্কুলছাত্র হত্যা: ১৭ বছর পালিয়ে থেকে অবশেষে গ্রেপ্তার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় স্কুলছাত্র হত্যা মামলায় ১৭ বছর পলাতক থাকার পর গ্রেপ্তার হলেন যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি।
গত বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টা ৪০ মিনিটে চাঁদপুরের শাহরাস্তী থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার শওকত আলী (৩৪), ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার মো. হাছন আলীর ছেলে।
শুক্রবার সকালে র্যাবের সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) সিনিয়র এএসপি মো. ফজলুল হক এ তথ্য জানিয়েছেন।
র্যাব জানিয়েছে, ২০০৬ সালের ১ অক্টোবর কসবার আড়াইবাড়ি এলাকায় একটি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মো. শওকত আলীসহ অন্য আসামিরা মিলে সপ্তম শ্রেণির ছাত্র আতিকুর রহমান শাকিলকে(১৪) মারধর করেন। শাকিলের মা প্রতিবাদ করলে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং শাকিলের রক্ত দিয়ে গোসল করার হুমকি দেন। এর জের ধরে ১৫ অক্টোবর রাতে শাকিল তারাবির নামাজ পড়ার জন্য মসজিদে যাওয়ার পথে শওকত আলীসহ অন্য আসামিরা তাকে অপহরণ করে পার্শ্ববর্তী জাহের মিয়ার ধানখেতে নিয়ে গলা গেটে হত্যা করে। এরপর মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য পায়ের রগ কেটে দেয় আসামিরা। ওই ঘটনায় কসবা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।
এ ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলায় তদন্তকারী কর্মকর্তা ১১ জনের নামে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। বহুল আলোচিত এ ঘটনাটি স্পর্শকাতর ও চাঞ্চল্যকর বিবেচনায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জেলা আদালতের পরিবর্তে চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুন্যালে মামলাটি বিচারের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুন্যাল দীর্ঘ বিচারিক কার্যক্রম শেষে ২০০৯ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি ১১ জন আসামির মধ্যে ১ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও ১০ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। এদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১ জন ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ৬ জন আসামি পলাতক রয়েছেন।
গত বছরের ২৫ এপ্রিল হাইকোর্ট শওকতের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল রাখেন।
গ্রেপ্তারকৃত মো. শওকত আলী আদালতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত হলেও তিনি পলাতক ছিলেন।
র্যাব আরও জানিয়েছে, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-২ এর একটি আভিযানিক দল গত ১৯ জানুয়ারি বিকাল ৪টা ৪০ মিনিটে চাঁদপুরের শাহরাস্তী থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে মো. শওকত আলীকে গ্রেপ্তার করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শওকত আলী জানিয়েছেন, এ ঘটনা পর থেকে তিনি রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নিজের নাম পরিবর্তন করে প্রথমে ঢাকায় একটি লন্ড্রিশপে এবং পরবর্তীতে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন কাজ করে আত্মগোপনে ছিলেন। সর্বশেষ চাঁদপুরে একটি বেকারি পণ্যের সেলসম্যানের কাজ করতেন।
(ঢাকাটাইমস/২০জানুয়ারি/এফএ)