খোঁজ মেলেনি স্বতন্ত্র প্রার্থী আসিফের, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা
রাত পোহালেই ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের উপনির্বাচনের ভোট। এখনো স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু আসিফ আহমেদের সন্ধান মেলেনি। তার অনুপস্থিতে স্ত্রী মেহেরুন নিছা মেহেরীন কর্মী-সমর্থক ও ভোটারদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষার চেষ্টা করে চলছেন।
মঙ্গলবার দুপুরে মেহেরীন জানান, তিনি স্বামীর সন্ধান পেতে ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিৎ করতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক ও উপনির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তার নিকট লিখিত দরখাস্ত দিয়েছেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার, আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার, আশুগঞ্জ থানার ওসি ও স্থানীয় প্রেস ক্লাবে এ দরখাস্তের অনুলিপি দেয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের ই-মেইলে এ দরখাস্ত পাঠানো হয়েছে বলে তিনি জানান।
তবে মঙ্গলবার বিকাল প্রায় ৫টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক ও উপনির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তার মো. শাহগীর আলম দরখাস্ত প্রাপ্তির কথা স্বীকার করেছেন।
দরখাস্তে আবু আসিফের স্ত্রী মেহেরীন বলেন, প্রচারণার ক্ষেত্রেও আমরা কোনো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড পাইনি। ভোট কেন্দ্রে যাদেরকে এজেন্ট দেবো তাদেরকেও হুমকি দেওয়া হচ্ছে। একজন প্রার্থীকে যেভাবেই হোক জিতিয়ে নেয়া হবে বলে প্রোপাগান্ডা চালানো হচ্ছে। এ অবস্থায় সুষ্ঠু নির্বাচন হবে বলে আমরা মনে করিনা। আমরা বিশ্বাস করি এতকিছুর পরও সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট হলে আমার স্বামী আবু আসিফ আহমেদ বিপুল ভোটে বিজয়ী হবে। এমতাবস্থায় ভয়ে আমরা এ পর্যন্ত লিখিত অভিযোগ করতে পারিনি। কিছু সংখ্যক সংবাদকর্মী স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে আমার বাসায় আসলে আমি তাদেরকে বিষয়টি অবহিত করি। এরপর এ বিষয়ে সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশিত হলে নির্বাচন কমিশন থেকে আমার স্বামীকে খুঁজে বের করাসহ তদন্তের নির্দেশ এসেছে বলে আমরা জানতে পারি।
তিনি জানান, এলাকায় প্রচার করা হচ্ছেএ ভোটাররা ইভিএমে আঙ্গুলের ছাপ দেয়ার পর বিশেষ প্রার্থীকে জেতানোর জন্য অন্যরা প্রতীকের বাটনে চাপ দিয়ে দেবে বলে এলাকায় প্রচার করা হচ্ছে।
এছাড়া তিনি দরখাস্তে সরাইল উপজেলার কুট্টাপাড়া পূর্ব, কুট্টাপাড়া পশ্চিম, সৈয়দটুলা গরের পাড়, হাবিসটুলা, সরাইল অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও উচালিয়া সরকারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ বলে উল্লেখ করেন।
এদিকে গত বুধবার থেকে নিখোঁজ থাকা নির্বাচনী প্রচারণার প্রধান সমন্বয়ক আবু আসিফের শ্যালক শাফায়াত সুমন সোমবার রাতে বাসা ফিরে আসেন।
উল্লেখ্য, আবু আসিফ আহমেদ আশুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ উপনির্বাচনে বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা ও পাঁচবারের সংসদ সদস্য উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়ার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী তিনি।
গত ২৭ জানুয়ারি (শুক্রবার) বিকালে তিনি মোবাইল ফোন বাসায় রেখে বেড়িয়ে আর বাসায় ফেরেনি। এর আগে গত ২৫ জানুয়ারি (বুধবার) আবু আসিফের নির্বাচনী প্রচারণাপ্রধান মুসা মিয়াকে ডিবি পুলিশ উঠিয়ে নিয়ে যায়। তিনি একজন ৮০ বছর বয়সী বৃদ্ধ মানুষ ও এলাকার স্বনামধন্য সালিশকারক। পরে গ্রাম্য ঝগড়ার মীমাংসিত ঘটনার একটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাকে জেল হাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ। ওই দিন থেকে নির্বাচনী প্রচারণার সমন্বয়ক আবু আসিফের শ্যালক শাফায়াত সুমনও নিখোঁজ ছিলেন।
(ঢাকাটাইমস/৩১জানুয়ারি/এআর)