কবর সংরক্ষণে নিরুৎসাহে ফি বাড়িয়েছে ডিএনসিসি: মেয়র আতিক

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৬:১৮

কবর সংরক্ষণকে নিরুৎসাহিত করতে ডিএনসিসি সংরক্ষণ ফি বাড়িয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।

তিনি বলেন, ‘ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন কবরাস্থানে কবর দেওয়ার ফি বাড়ানো হয়নি। বরং কবর সংরক্ষণের জন্য ফি বাড়ানো হয়েছে। কবর সংরক্ষণে নিরুৎসাহিত করতেই মূলত সংরক্ষণ ফি বাড়ানো হয়েছে। প্রতিনিয়ত বিপুল সংখ্যক আবেদন আসে কবর সংরক্ষণের জন্য। এভাবে কবর সংরক্ষণ করা হলে কবর দেওয়ার জায়গা কমে যাবে। আশা করছি ফি বৃদ্ধির কারণে কবর সংরক্ষণের আবেদন অনেক কমবে এবং সাধারণ মানুষ কবর দেওয়ার সুযোগ পাবে।’

শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর উত্তরায় ডিএনসিসির উন্নয়নকৃত উত্তরা ৪নং সেক্টর কবরস্থান উদ্বোধনকালে ডিএনসিসি মেয়র এসব কথা বলেন।

ডিএনসিসির কবরস্থানে জনগণ সীমিত ফিতে দাফনের সুযোগ পাচ্ছে উল্লেখ করে মেয়র বলেন, ‘ডিএনসিসির আওতাধীন কবরস্থানে প্রতিটি মৃতদেহ দাফন বাবদ রেজিস্ট্রেশন ফি মাত্র ৫০০ টাকা এবং দুঃস্থ, অসহায় ও বিত্তহীন মৃত ব্যক্তির ক্ষেত্রে এই ফি মাত্র ১০০ টাকা। এছাড়াও কেউ যদি ১০০ টাকাও পরিশোধ করতে অপারগ হয় তার জন্য বিনামূল্যে দাফনের সুযোগও রয়েছে।

মেয়র বলেন, ‘কবরস্থানসহ অন্যান্য স্থাপনা সংরক্ষণের জন্য সিটি কর্পোরেশনের পাশাপাশি জনগণকে, কমিউনিটিকে এগিয়ে আসতে হবে। এলাকাবাসী ও সোসাইটির নেতৃত্বে সিটি কর্পোরেশনের স্থাপনা, ফুটপাত, মাঠ, পার্কগুলো রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে। নির্মাণকাজের জন্য গাছ কাটা যাবে না। আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করি গাছ না কেটে কাজ সম্পন্ন করতে। আমরা সাধারণত একটি গাছ কেটে ৩টি গাছ লাগানোর কথা বলি। কিন্তু এখন বলছি গাছ না কেটেই ৩টি গাছ লাগাবেন।’

তিনি বলেন, ‘মহামারি করোনা এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে যখন পুরো বিশ্ব বিপর্যস্ত তখনো আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সীমিত সম্পদের মধ্যে সর্বোচ্চ কাজ করার চেষ্টা করে যাচ্ছি। ১৮টি নতুন ওয়ার্ডেও আমরা উন্নয়ন কাজ শুরু করেছি। নতুন এলাকায় সবকিছু মাস্টারপ্লান করে ৪ হাজার ২৫ কোটি টাকার প্রকল্প নিয়েছি। অনেক বড় প্রকল্প তাই একটু সময় লাগছে। টেকসই উন্নয়নের জন্য সময় নিয়ে কাজটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।’

এসময় ডিএনসিসির আওতাধীন কবরগুলোর ডিজিটাল ডাটাবেজ তৈরি করা হবে বলেও ঘোষণা দেন ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগে. জেনা জেনারেল মো. জোবায়দুর রহমান, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহ. আমিরুল ইসলাম, আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জুলকার নায়ন, ১নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. আফছার উদ্দিন খান, সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর হাছিনা বারী চৌধুরী, স্থপতি ইকবাল হাবিব, উত্তরা ৪ নম্বর সেক্টর কল্যাণ সমিতির সভাপতি আনিসুর রহমান এবং ডিএনসিসির অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

উত্তরা ৪নং সেক্টর কবরস্থানটিতে যা যা রয়েছে:

কবরস্থানের চতুর্দিকে নিরাপত্তা বেস্টনী, মার্বেল ফ্লোরসহ দৃষ্টি নন্দন দুতলা বিশিষ্ট মসজিদ ভবন, কবরস্থান পরিচালনা ও রক্ষনাবেক্ষণের জন্য একটি আধুনিক অফিস ভবন, প্রয়োজনীয় ওজুখানা ও পর্যাপ্ত টয়লেটের ব্যবস্থা, অভ্যন্তরীন ওয়ার্কওয়ে (৮০০ মিটার), পর্যাপ্ত বৈদ্যুতিক লাইটিং ব্যবস্থা, রোদ-বৃষ্টির জন্য কবরস্থানের অভ্যন্তরে ৫টি ওয়াক-ওয়ে, মৃত ব্যক্তির গোসলের সু-ব্যবস্থা, জানাযার জন্য খাটিয়া রাখার আলাদা প্লাটফর্ম, ১টি দৃষ্টি নন্দন প্রবেশ গেট, কবরস্থানের পূর্ব ও পশ্চিমে এলাকাবাসীর সুবিধার জন্য অতিরিক্ত ২টি পকেট গেট, কবরস্থানে চারিদিকে বাউন্ডারীফেন্সে আরবী হরফে সুদৃশ্য ক্যালিওগ্রাফি, কবরস্থানের অভ্যন্তরে বিভিন্ন প্রজাতির ফুল ও অন্যান্য গাছ (প্রায় ৭০০টি), কবরস্থানের বাহিরের চারিদিকে পায়ে হাঁটার পথসহ অন্যান্য সুবিদাধি।

উল্লেখ্য, নগরবাসীর সামাজিক ও সংস্কৃতিক প্রেক্ষাপটের সঙ্গে সামাঞ্জস্যপূর্ণ, বসবাস উপযোগী কার্যকর ও টেকসই অবকাঠামো বিনির্মাণের মাধ্যমে পরিবেশ উন্নয়ন ও আধুনিকায়নের লক্ষ্যে “ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের উন্মুক্ত স্থানসমূহের আধুনিকায়ন, উন্নয়ন ও সবুজায়ন" শীর্ষক প্রকল্পটি ২০১৭ সালে হাতে নেওয়া হয়। সম্পূর্ণ জিওবি অর্থায়নে প্রায় ২০২.০৭ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। প্রকল্পের আওতায় (ক) ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ১৮টি পার্ক ও ৪টি খেলার মাঠের উন্নয়ন ও আধুনিকায়ন (খ) ২৩টি বিদ্যমান পাবলিক টয়লেট উন্নয়ন এবং আধুনিকায়ন, স্বাস্থ্য সম্মত ও ব্যবহার উপযোগী নতুন ৫০টি পাবলিক টয়লেট নির্মাণ (গ) পর্যাপ্ত খোলা এবং সবুজ স্থান রেখে ২টি কবরস্থান উন্নয়নসহ অন্যান্য কাজ অন্তর্ভূক্ত আছে। ইতোমধ্যে ২টি পার্ক এবং ১টি খেলার মাঠ ব্যতিত প্রকল্পের সকল কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

উত্তরা ৪ নং সেক্টর কবরস্থানের তথ্যাদি:

মোট আয়তন-১ দশমিক ২২৮ একর, উন্নয়ন কাজের ব্যয়-৪ দশমিক ৬৭ কোটি টাকা, মোট কবরের সংখ্যা-৫ হাজার ৮টি, কাজ শুরু হয়ছে গত ২০২১ ডিসেম্বর মাসের ৯তারিখে এবং কাজ শেষ করা হয় ২০২২সালের নভেম্বরের ৩০ তারিখে।

(ঢাকাটাইমস/১০ফেব্রুয়ারি/কেআর/এসএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজধানী বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজধানী এর সর্বশেষ

অজ্ঞান করে সর্বস্ব লুট, টার্গেট মধ্যবিত্তরা

বিমানবন্দরের সামনে ফ্লাইওভারে প্রাইভেটকারে হঠাৎ আগুন  

ডেঙ্গুতে একদিনে ৩ নারীর মৃত্যু, সবাই ঢাকা দক্ষিণ সিটির

‘আমেরিকান ওয়েলনেস সেন্টারে’র কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর

খালে বর্জ্য ফেললে আইনি ব্যবস্থা: মেয়র আতিক

ড্রেনের মধ্যে বোতল-চিপসের প্যাকেট: নাগরিকদের সচেতন হতে বললেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী

সবাইকে টিকার আওতায় আনতে কার্যক্রম জোরদার করবে ডিএনসিসি

২০১৯-এর তুলনায় ২০২৩ সালে ঢাকায় ডেঙ্গু রোগী ৪২ হাজার কম ছিল: মেয়র তাপস

রাজধানীতে ২৪ ঘণ্টায় ২৭ মাদকসেবী ও বিক্রেতা গ্রেপ্তার

ডেমরায় কিশোর গ্যাং প্রতিরোধে র‌্যালি ও লিফলেট বিতরণ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :