হাকালুকি হাওরে কমছে অতিথি পাখির আগমন

আব্দুল বাছিত বাচ্চু, মৌলভীবাজার
| আপডেট : ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০১:১৪ | প্রকাশিত : ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০:৫৮

হাকালুকি হাওরে চলতি বছর ৫২ প্রজাতির ৩৭ হাজার ৭৭৮ জলচর পাখির দেখা মিলেছে। হাওরের বিভিন্ন বিলে পাখিশুমারির পর সংশ্লিষ্টরা এই তথ্য জানিয়েছেন। পাখির এই সংখ্যা গত বছরের চেয়ে বেশি হলেও ৪-৫ বছরের পরিসংখ্যানে কম।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে দেশের শীর্ষ পাখি বিশেষজ্ঞ ইনাম আল হক বলেন, শুধু হাকালুকি হাওরে নয়, কয়েক বছর ধরে এশিয়ার সব দেশেই অতিথি পাখির সংখ্যা কমে আসছে। এর কারণ হিসেবে তিনি পাখির আবাসস্থল কমে যাওয়া ও বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধিকে দায়ী করছেন তিনি ।

শুক্রবার রাতে মুঠোফোনে তিনি ঢাকা টাইমসকে বলেন, এশিয়ার দেশগুলোতে প্রতিবছর ৫ থেকে ১০ শতাংশ জলাশয় কমে আসছে। পাখির আবাসস্থল মানুষ ব্যবহার করলে সেখানে আর পাখি আসে না। এছাড়া জলবায়ু পরিবর্তন ও বৈশ্বিক উষ্ণতা পাখির জীবনযাত্রায় প্রভাব ফেলছে।

পাখি বিশেষজ্ঞ ইনাম আল হক আরও বলেন, হাকালুকি হাওরে সাধারণত এ সময় দুর্বৃত্তরা বিষটোপ ও জাল দিয়ে ফাঁদ তৈরি করে পাখি নিধন করে। বিষে স্বাভাবিকের চেয়ে তিন থেকে চার গুণ বেশি পাখি মারা যায়। কারণ, বিষের প্রভাব দীর্ঘক্ষণ থাকে। জীবন শঙ্কার কথা ভেবে পাখিরা আগের মতো আর ওই হাওরে যায় না। এ কারণেও হাওরে পাখি কমে যাচ্ছে। তাই পাখি নিধন বন্ধে আইনের পাশাপাশি জনসচেতনতা বাড়ানোর পরামর্শ দেন তিনি।

পরিবেশ অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট সুত্র জানায়, মৌলভীবাজারের কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখা এবং সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ ও গোলাপগঞ্জ উপজেলার প্রায় ৪৫ হাজার একর এলাকাজুড়ে হাকালুকি হাওর। এটি এশিয়ার বৃহত্তম হাওর। ১৯৯৯ সালে সরকার এশিয়ার বৃহত্তর এই হাওরকে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) ঘোষণা করে।

বাংলাদেশ বার্ড ক্লাব সূত্র জানিয়েছে, গত ২৮ ও ২৯ জানুয়ারি হাকালুকি হাওরে পাখিশুমারি করে ‘বাংলাদেশ বার্ড ক্লাব’ ও ‘আন্তর্জাতিক প্রকৃতি সংরক্ষণ প্রতিষ্ঠান (আইইউসিএন)’। ছয় সদস্যের দুটি দল হাওরের বিভিন্ন জলাশয়ে পাখিশুমারি করেন। শুমারিতে পাখি বিশেষজ্ঞ ইনাম আল হক নেতৃত্ব দেন।

বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের সভাপতি ইনাম আল হক বলেন, শুমারিতে ৫২ প্রজাতির ৩৭ হাজার ৭৭৮ জলচর পাখির দেখা মিলেছে। এর মধ্যে হাওরের হাওরখাল বিলে সর্বোচ্চসংখ্যক ১২ হাজার ৭৩২টি পাখি দেখা গেছে। এ ছাড়া বেশি দেখা মিলেছে পিয়াং হাঁসের। এর সংখ্যা ৫ হাজার ৪৫৭টি। এরপর ছোট পানকৌড়ির সংখ্যা ৪ হাজার ৫৩৭টি। এদিকে শুমারির সময় হাকালুকিতে বিরল ও বিপন্ন প্রজাতির দুটি ফুলুরি হাঁস দেখা গেছে।

এর আগে ২০২২ সালে শুমারিতে হাওরে ৫১ প্রজাতির ৩৬ হাজার ৫০১টি জলচর পাখির দেখা মিলেছিল। এ ছাড়া ২০২১ সালে ৪৫ প্রজাতির মোট ২৪ হাজার ৫৫১, ২০২০ সালে ৫৩ প্রজাতির ৪০ হাজার ১২৬, ২০১৯ সালে ৫১ প্রজাতির ৩৭ হাজার ৯৩১, ২০১৮ সালে ৪৪ প্রজাতির ৪৫ হাজার ১০০ এবং ২০১৭ সালে ৫০ প্রজাতির ৫৮ হাজার ২৮১টি পাখির দেখা মিলেছিল।

(ঢাকাটাইমস/১১জানুয়ারি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :