‘বিএনপির নৈরাজ্য প্রতিরোধে আ.লীগ রাজপথে আছে, থাকবে’

রাজশাহী ব্যুরো, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ২২:১৫

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেছেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জনগণের দল। জনগণের রায়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে। বিএনপি যাতে আন্দোলনের নামে দেশের রাজনীতিকে অস্থিতিশীল বা নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে না পারে, সেজন্য আওয়ামী লীগ রাজপথে আছে। আমরা রাজপথে ছিলাম, আছি এবং আগামীতেও থাকব।

বিএনপির দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র, অপরাজনীতি, চক্রান্ত ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে শনিবার বিকালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের উদ্যোগে সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে আয়োজিত শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন আরো বলেন, বিএনপি নেতৃত্বের দেউলিয়ায় চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে গিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে। বিএনপি নির্বাচনে যেতে ভয় পায়। কারণ বিএনপি জানে তারা নির্বাচনে জিততে পারবে না।

বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচির সমালোচনা করে খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, আজকে বিএনপি পদযাত্রা করছে। এর আগেই দেশের বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে সমাবেশের নামে তারা পিকনিক করেছে। আপনারা বলেছিলেন, ‘১০ ডিসেম্বরের পর থেকে বাংলাদেশ বিএনপির কথায় চলবে।’ কোথায় গেল আপনাদের সেই কথা? এখনো তো শেখ হাসিনাই প্রধানমন্ত্রী আছেন। তাহলে বিএনপির ভাই-বোনেরা আপনাদের মুখ থাকে আর? মুখ রক্ষা করা যায় আর? সেই জন্য বলতে চাই এটি তো পদযাত্রা নয়, শবযাত্রা। এটি মরদেহ নিয়ে, লাশ নিয়ে যাত্রা। বিএনপির ঘাঁড়ের একটি লাশ আছে, সেই লাশটি গত ৭ বছর ধরে বিএনপি টেনে নিয়ে বেড়াচ্ছে। এই লাশটি তারা দাফন করতে চায়। রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে, কোন আওয়াজ নেই, কোন স্লোগান নেই, চুপচাপ মানুষ যেমন লাশ নিয়ে যায়, সেভাবে তারা যাচ্ছে। এইভাবে আর যাই হোক বাংলাদেশের সরকারকে, শেখ হাসিনার সরকারকে পতন ঘটানো কোনদিন সম্ভব নয়।

খায়রুজ্জামান লিটন আরো বলেন, আজকে বিএনপির এক নেতা মন্তব্য করেছেন- ‘যেদিন আওয়ামী লীগ শান্তি সমাবেশ করবে, আমাদের যদি জানিয়ে দেওয়া হয়, সেদিন আমরা পদযাত্রা কর্মসূচি দেব না।’ বিএনপির সেই নেতাকে উদ্দেশে করে আমি বলতে চাই, আওয়ামী লীগ রাজপথে থাকলে আপনাদের অসুবিধা কী? জনগণের জানমালের ক্ষতি করতে সুবিধা হয়? দোকানপাট লুটপাট-ভাঙচুর করতে সুবিধা হয়? আগুন দিতে সুবিধা হয়? যেটা আপনারা করেছেন ২০১৪/২০১৫ সালে, সেটা পুরো বাংলার মানুষ জানে, সারা পৃথিবীর মানুষ জানে। সেটি আর হতে দেওয়া হবে না।

তারেক রহমানের উদ্দেশ্যে খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, তার সম্পর্কে বলার মতো মানসিকতা আমার নেই, তারপরেও বলতে চাই, ৮ হাজার মাইল দূরে লন্ডনে বসে থেকে কলকাঠি নাড়িয়ে আর যাই হোক আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ভয় দেখানো যাবে না, ঘরেও ঢোকানো যাবে না। রাজনীতি করার যখন এতই শখ, ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য যখন এতই লালায়িত, তাহলে আসুন না দেশে, আপনি দাসখত লিখে মুচলেকা দিয়ে আর রাজনীতি করবেন না বলে দেশ ছেড়ে পালিয়েছিলেন। ইতোমধ্যে আপনি ও আপনার স্ত্রীর বিরুদ্ধে আদালত পরোয়ানা জারি করেছে, আপনাদের দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য আদালত প্রক্রিয়া করছে, বাংলার মাটিতে কিভাবে এদের বিচার করতে হয় বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা খুব ভালোমতোই জানেন। জাতির পিতার হত্যাকারী, একাত্তরের হত্যাকারী, রাজাকার, আলবদর, আল শামসদের বিচারের মাধ্যমে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। আর আপনি তো কোন তারেক জিয়া। আমি পরিষ্কার ভাষায় বলতে চাই, এই বাংলাদেশের মানুষ, আমরা যারা আওয়ামী লীগ করি, আমরা যারা দেশের প্রকৃত ভালো চাই, আমরা যারা আমাদের পূর্বপুরুষদের রক্তের মূল্য দিয়ে দেশবাসীকে দুই বেলা নয় তিন বেলা খাওয়ানোর চেষ্টা করি, সেই আওয়ামী লীগকে এত হালকা করে দেখার কোন সুযোগ নেই।

তিনি আরো বলেন, বিএনপি নাকি মে-জুন মাসে আন্দোলন চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যাবে, অত দিন লাগবে না, নির্বাচনের প্রস্তুতির মাধ্যমে তাদের সমুচিত দাঁতভাঙা জবাব আওয়ামী লীগ দেবে। আওয়ামী লীগকে ভয় দেখিয়ে, দেশরত্ন শেখ হাসিনাকে ভয় দেখিয়ে, কোন লাভ নাই। তিনি রক্তে মাংসে গড়া মানুষ মনে হলেও তার শরীরের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ইস্পাতের মতো দৃঢ়। যে ইস্পাতকে ধ্বংস করা যায় না, তাকে ১৯ বার হত্যা চেষ্টা করেছেন, মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় তাকে হত্যা সম্ভব হয়নি। দেশ গড়তে ও বাংলার মানুষের উন্নয়নের আরো কাজ বাকি আছে, সৃষ্টিকর্তা তাকে দিয়ে সে সকল কাজ করাবেন বলেই তিনি বারবার মৃত্যুর হাত থেকে ফিরে এসেছেন।

তিনি তৎকালীন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসেঞ্জারের বাংলাদেশ তলাবিহীন ঝুড়ি মন্তব্যের প্রসঙ্গে বলেন, বাংলাদেশ এখন ফুলে ফলে পরিপূর্ণ একটি জাতিতে পরিণত হয়েছে, বাংলাদেশ এখন খাদ্যে পরিপূর্ণ, আমরা রপ্তানি করতে পারি, আমরা দেশের বাইরে কোন দুঃস্থ দেশকেও সাহায্য করতে পারি, আমরা শ্রীলঙ্কাকে ঋণ দিয়েছি, বাংলাদেশ নেপালকে সাহায্য দিয়েছি। এতে করে প্রতিয়মান হয় যে, হেনরি কিসেঞ্জারের মন্তব্য মিথ্যা বলে প্রমাণিত করেছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াতের নরপিশাচরা যারা দেশটাকে ভিক্ষুকের জাতিতে পরিণত চায়। তাদের একজন অর্থমন্ত্রী ছিলেন সাইফুর রহমান, বাড়ি সিলেটে। তিনি একটি মন্তব্য করেছিলেন দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়া ভালো না, তাহলে বিদেশের সাহায্য কমে যায়, এটা কি কোন বিবেকবান মানুষের কথা? এটা কি দেশের আত্মসম্মানবোধসম্পন্ন মন্ত্রীর কথা হতে পারে? আসলে বিএনপি জাতিকে ভিক্ষুক করে রাখতে চায় যাতে করে বিদেশ থেকে সাহায্য এনে তাদের নেতাকর্মীদের উদরপূর্তি করে হৃষ্টপুষ্ট করতে চায়। দেশ ও জনগণ চুলোয় যাক, এটাই হলো বিএনপির রাজনীতি।

তিনি আরো বলেন, সরকারের কৃষিবান্ধব নীতির ফলে যে সব চরে বালির পর বালি, ধু ধু বালি চর, লালমনিরহাট-তিস্তা-যমুনার চরসহ বিভিন্ন এলাকায় শুধু বালি ছাড়া আর কিছু নাই, সেসব এলাকায় মিষ্টি কুমড়া, লাউসহ বিভিন্ন কৃষি পণ্য উৎপাদন হচ্ছে, এটি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার বুদ্ধি ও মেধার ফলে সম্ভব হয়েছে।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, বিএনপির ষড়যন্ত্র সম্পর্কে সজাগ থাকতে হবে, তারা যেন দেশে কোন রকম সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না করতে পারে। তাদের সকল ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত নসাৎ করে দিয়ে আগামী নির্বাচনে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলবে।

রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামালের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকারের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বেগম আখতার জাহান, রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহসানুল হক পিন্টু, সাংগঠনিক সম্পাদক মীর ইশতিয়াক আহমেদ লিমন, বোয়ালিয়া (পূর্ব) থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল কুমার ঘোষ, মহানগর শ্রমিক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওয়ালী খান, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি আব্দুল মমিন, মহানগর ছাত্রলীগ সভাপতি নূর মোহাম্মদ সিয়াম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সভাপতি গোলাম কিবরিয়া।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের যুগ্ম সম্পাদক মোস্তাক হোসেন, দপ্তর সম্পাদক মাহাবুব-উল-আলম বুলবুল, প্রচার সম্পাদক দিলীপ কুমার ঘোষ, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক মীর তৌফিক আলী ভাদু, আইন বিষয়ক সম্পাদক মুসাব্বিরুল ইসলাম, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম জাহিদ, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক রবিউল আলম রবি, মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা ইয়াসমিন রেজা ফেন্সি, যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক মকিদুজ্জামান জুরাত, শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক ওমর শরীফ রাজিব, উপ-দপ্তর সম্পাদক পংকজ দে, সদস্য জহির উদ্দিন তেতু, নজরুল ইসলাম তোতা, শাহাব উদ্দিন, আশরাফ উদ্দিন খান, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মান্নান, আতিকুর রহমান কালু, সৈয়দ হাফিজুর রহমান বাবু, আব্দুস সালাম, মজিবুর রহমান, ইসমাইল হোসেন, বাদশা শেখ, আলিমুল হাসান সজল, জয়নাল আবেদীন চাঁদ, ইউনুস আলী, মোখরেশুর রহমান কচি, মাসুদ আহমদ, কেএম জুয়েল জামান, থানা আওয়ামী লীগের মধ্যে রাজপাড়ার থানার সাধারণ সম্পাদক শেখ আনসারুল হক খিচ্চু, বোয়ালিয়া (পূর্ব) থানার সাধারণ সম্পাদক শ্যামল কুমার ঘোষ, বোয়ালিয়া (পশ্চিম) থানার সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জামান রতন, মতিহার থানার সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন, নগর কৃষক লীগ সভাপতি রহমত উল্লাহ সেলিম, নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ সাধারণ সম্পাদক জেডু সরকার, নগর মহিলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক কানিফ ফাতেমা মিতু, নগর যুব মহিলা লীগ সাধারণ সম্পাদক নিলুফার ইয়াসমিন নিলু, নগর ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক সিরাজুম মুবিন সবুজ, নগর তাঁতী লীগ সভাপতি আনিসুর রহমান আনার, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু প্রমুখ।

(ঢাকাটাইমস/১৮ফেব্রুয়ারি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজনীতি এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :