টাকা নিয়ে লাপাত্তা সেই ছাত্রলীগ নেতার ফেসবুক স্ট্যাটাস

কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে শান্ত কুমার রায় নামে এক ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে। এই অবস্থায় শুক্রবার বিকাল ৫টার দিকে আত্মগোপনে থাকা ছাত্রলীগ নেতা শান্ত কুমার রায় তার ফেসবুক আইডি থেকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন।

সেই স্ট্যাটাসে তিনি দাবি করেন, একজন তার কাছে দুই কোটি টাকা দাবি করলেও তিনি ৪০ লাখ দিয়েছিলেন। তারপর তিনি হুমকিতে থাকায় পালিয়ে গেছেন বলে জানান।

শান্ত কুমার রায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার বড়িকান্দি ইউনিয়নের থোল্লাকান্দি গ্রামের নির্মল রায়ের ছেলে। তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক উপ-সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদক এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক।

ছাত্রলীগের রাজনীতির পাশাপাশি সক্রিয় সদস্য ছিলেন ইসকনের (ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনশাসনেস) সাথে। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে তিনি পলাতক রয়েছেন।

শুক্রবার পর্যন্ত টাকা পাওয়ার অভিযোগ তুলে তার বিরুদ্ধে ১২ জন লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

তার স্ট্যাটাসে লিখেন- 'প্রিয় দেশবাসী আজ আমি সবার কাছে খারাপ। কিন্ত বিবেচনা করুন, আমি কেন এমন হলাম! যে আমি বিনামূল্যে একটি চকলেটও কারও কাছ থেকে খাইনি কেন এত বড় অপরাধী হইলাম, যাকে কোটি কোটি টাকা দিলাম, জীবনের শ্রেষ্ঠ সময় নষ্ট করলাম তার জন্য আজ আমার এই অবস্থা, যার কথা বলছি, সে কিছুদিন আগে আমার কাছ থেকে দুই কোটি টাকা চাইল। আমি ৪০ লাখ টাকা দিলাম, পরে বললাম ভাই আমি আর পারছি না, সে বলল তোমার বাবার কাছে বলো। আমি বললাম- আমার বাবার সাথে সম্পর্ক ভাল না। তাছাড়া আমার বাবার ব্যবসা এখন নষ্ট হয়ে গেছে, আমার সাথে যোগাযোগ নেই। তারপর সে বলে আমি কিছু বুঝি না টাকা আমার লাগবে, পরে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ, আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দিতে থাকে সে ও তার সহযোগীরা। মেরে ফেলবে টাকা না দিলে তার সহযোগীরা খবর পাঠায়। এই ভয়ে আমি আমার বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাই। আমার কাছে অডিও, ভিডিও-রেকর্ড সব আছে। কিন্তু আমার পরিবারের সদস্যদের জীবন বাঁচানোর জন্য তার নাম প্রমাণগুলো প্রকাশ করতে পারছি না। বাড়ি থেকে যখন বের হই, আমার কাছে সাত হাজার টাকা ছিল এখন আমার বিরুদ্ধে কোটি টাকার অভিযোগ!

আর হে ও আমি ব্যবসা করেছি তাই আমার দেনা পাওনা আছে, কিন্তু আজ সে তিলকে তাল করে আমার ও আমার বাবার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ও খবর প্রকাশ করছে।

যারা আমার কাছ থেকে সত্যিকারের টাকা পাওনা, তারা একদিন তা ফেরত পাবেন। আর যারা মিথ্যা বানোয়াট অভিযোগ করেছেন, তাদের বিচার আইন দেখবে। যত দিন বেঁচে আছি, আমি আমার দেশকে ভালবাসি আমি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ভালবাসি।

আমি দেশরত্ম শেখ হাসিনাকে আমাদের অস্তিত্ব হিসেবে মেনে যাব। আমি আমার দেশের আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। বাংলাদেশের আইন আমার সব কিছু বিবেচনা করে আমাকে যে বিচার প্রদান করবে তা আমি মাথা পেতে নেব। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট আমি আমার পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তার আকুল আবেদন করি।

পরম করুণাময় সৃষ্টিকর্তা দয়া করলে আবারও সবার মাঝখানে দাঁড়িয়ে প্রাণভরে বলব জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু। ধন্য হোক বঙ্গবন্ধুর স্বপনের সোনার বাংলা।’

তবে তিনি তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে তার কাছে দুই কোটি টাকা কেন বা কে দাবি করেছিলেন, তা বিস্তারিত প্রকাশ করেননি। কোথায় অবস্থান করছেন, তাও জানাননি।

নবীনগর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইফুদ্দিন আনোয়ার জানান, শান্ত রায়ের ফেসবুক স্ট্যাটাস ইতোমধ্যে আমাদের নজরে এসেছে। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। তার বিষয়ে তদন্ত অব্যাহত আছে।

(ঢাকাটাইমস/২৫ফেব্রুয়ারি/এলএ)