মুরগির দাম কমাতে প্রয়োজনে বর্ডার খুলে দেওয়া হবে: ভোক্তার ডিজি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৩ মার্চ ২০২৩, ১৭:৪৫

ব্রয়লার মুরগির দাম কমাতে প্রয়োজনে বর্ডার খুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) এ. এইচ. এম. সফিকুজ্জামান।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে জাতীয় ভোক্তা অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে ব্রয়লার মুরগির অযৌক্তিক মূল্য বৃদ্ধির কারণ ব্যাখ্যা সংক্রান্ত শুনানি শেষে তিনি এসব বলেন।

এ. এইচ. এম. সফিকুজ্জামান বলেন, এফবিসিসিআই থেকে আজকে মিটিং হয়েছে। যদি মুরগির দাম কমার কোনও সমাধান না হয় তাহলে প্রয়োজনে আমরা বর্ডার ওপেন করে দিব। আমরা ইমপোর্ট ওপেন করে দিব। সেটার জন্য আমরা রিকমেন্ডেশন দিবো।

মহাপরিচালক বলেন, ব্রয়লার মুরগি গতকাল আমরা নিউ মার্কেটে দেখেছি। সে দাম অযৌক্তিক। গতকাল আমরা ২৭০ টাকায় বিক্রি হতে দেখেছি, কোথাও কোথাও ২৮০ টাকা। কিন্তু এটা ২০০ টাকার বেশি হতে পারে না। ফার্ম পর্যায়ে ২২০-২৩০ টাকা দরে ব্রয়লারের কেজি বিক্রি হচ্ছে৷ অথচ হাত বদল হয়ে ভোক্তা পর্যায়ে এই অবস্থা।

তিনি বলেন, আমি তাদের আহ্বান করেছি, আপনারা এই রমজান মাসে একটু কম লাভ করেন। তারা এক মত হয়েছেন। ফার্ম থেকে ব্রয়লার আসছে ২২০ থেকে ২৩০ টাকা রেটে৷ সে ক্ষেত্রে তো খোলা বাজারে ২৫০ টাকা হবেই।

এ সময় কাজী ফার্ম কর্তৃপক্ষ জানান, আমাদের কর্পোরেট পর্যায়ে পোল্ট্রির উৎপাদন ফার্মের যারা এখানে এসে উপস্থিত হয়েছেন তাদের সঙ্গে আলোচনা ফলপ্রসু হয়েছে। আমরা যে কয়জন আজ উপস্থিত হয়েছি তাদের মধ্যে কথা হয়েছে রমজান মাসে আমরা মূল্য স্বাভাবিক রাখবো। আমরা আসা করছি খুব শিগিরই উৎপাদন বেড়ে দাম কমে যাবে। আশা করছি এই মাসে ব্রয়লারের দাম সহনশীল পর্যায়ে থাকবে।

তিনি বলেন, রোজার মাসে আমরা ফার্মগুলো থেকে ১৯০ থেকে ১৯৫ টাকা মুরগির দাম রাখবো। আগে ২৩০টাকা রাখা হতো বলেও জানান তিনি।

রমজানে ২২০ টাকা থেকে কমিয়ে ব্রয়লার বিক্রি করবেন ১৯০ থেকে ১৯৫ টাকায়৷ এ বিষয়ে একমত পোষণ করছেন আফতাব, প্যারাগন ও সিপি কোম্পানি।

এ ক্ষেত্রে বাজারে কেজিতে ৩০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত ব্রয়লারের দাম কমতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক। খামার থেকে আসা ব্রয়লার মুরগি হাত বদলে যেন দাম খুব বেশি না বাড়ে সে বিষয়ে সংস্থাটি নজর রাখবে বলে জানান তিনি।

বাচ্চা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান কতৃপক্ষ জানান, পোল্ট্রি খাবারের দাম বৃদ্ধির কারণেই মুরগির দাম বেড়েছে। তবে খাদ্যের দাম কত টাকা বাড়ার প্রভাবে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকার মুরগি দাম বেড়ে ৩০০ টাকা হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কোনও উত্তর দিতে পারেননি।

এদিকে এর আগে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কর্তৃক গত ৯ মার্চ পোল্ট্রি মুরগী উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ও ব্যবসায়ীবৃন্দের সঙ্গে অধিদপ্তরের সভাকক্ষে একটি মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় পোল্ট্রি (ব্রয়লার) মুরগী উৎপাদন ব্যয় কর্পোরেট পর্যায়ে ১৩০টাকা থেকে ১৪০ টাকা ও প্রান্তিক খামারী পর্যায়ে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা যা খুচরা পর্যায়ে পোল্ট্রি (ব্রয়লার) মুরগীর মূল ২০০ টাকার অধিক নয় মর্মে মুরগী উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ অবহিত করে।

কিন্তু গতকাল বুধবার জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, এফবিসিসিআই এবং বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির যৌথ তদারকিকালে নিউমার্কেটের বনলতা কাঁচা বাজারে খুচরা পর্যায়ে ব্রয়লার মুরগী ২৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রয় হতে দেখা যায়। পাশাপাশি কাপ্তান বাজারে পাইকারী পর্যায়ে ২৪৫ থেকে ২৫০ টাকা দরে ব্রয়লার মুরগী বিক্রয় করা হচ্ছে মর্মে পরিলক্ষিত হয়।

এছাড়াও প্রতি কেজি সিলেটে ২২৬ টাকা, কুমিল্লায় ২২৪ টাকা, হবিগঞ্জে ২২১, নরসিংদীতে ২২০ টাকা, টাঙ্গাইলে ২১৮ টাকা, ময়মনসিংহ ও গাজীপুরে ২১৫টাকা দরে বিক্রয় হচ্ছে মর্মে তদারকিকালে দেখা যায়।

গত ৯ মার্চ সভায় পোল্ট্রি মুরগী উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ও ব্যবসায়ীবৃন্দ যৌক্তিক মূল্যে পোল্ট্রি (ব্রয়লার) মুরগী বিক্রয় করবেন মর্মে সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নেয়া হলেও বাজারে তা পরিলক্ষিত হয়নি বলে জানায় ভোক্তা। বরং আরো অধিকমূল্যে তা বিক্রি হচ্ছে যা “ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯” এর ২১ (খ) ধারা অনুযায়ী ভোক্তা-অধিকার বিরোধী অপরাধ।

ফলে বাজারে পোল্ট্রি (ব্রয়লার) মুরগীর অযৌক্তিক মূল্য বৃদ্ধির বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্যাদিসহ উপস্থিত হয়ে কাজী ফার্মস লিঃ, প্যারাগন পোল্ট্রি এন্ড হ্যাচারি লিঃ ও আফতাব বহুমুখী ফার্মস লিঃ ও সিপি বাংলাদেশ ব্যাখ্যা প্রদানের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়।

(ঢাকাটাইমস/২৩মার্চ/কেআর/এসএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

অর্থনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

অর্থনীতি এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :