সুন্দরবনে পুশইন ৭৫ জন ফিরলেন ঘরে, তিনজন কারাগারে

ভারতের গুজরাট রাজ্যের বস্তি এলাকা থেকে ধরে এনে সুন্দরবনের বঙ্গোপসাগর তীরবর্তী মান্দারবাড়িয়া চরে পুশইন ৭৮ ব্যক্তির মধ্যে ৭৫ জনের নাগরিকত্ব যাচাই শেষে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে বাংলাদেশ সরকার। বাকি তিনজন ভারতীয় নাগরিক হিসেবে নিজেদের পরিচয় দিলেও বৈধ কাগজপত্র না থাকায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মঙ্গলবার শ্যামনগর থানা চত্বরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান বাংলাদেশ কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের অপারেশন কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আবরার হাসান।
উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম, কালিগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিথুন সরকার এবং শ্যামনগর থানার ওসি হুমায়ুন কবির মোল্লা।
আবরার হাসান জানান, গত ৯ মে ভোররাতে ভারতের বিএসএফ ও নৌবাহিনীর সদস্যরা গোপনে ৭৮ জনকে মান্দারবাড়িয়া চরে ফেলে রেখে যায়। তারা পরবর্তীতে মান্দারবাড়ি ফরেস্ট অফিসে আশ্রয় নেয়। খবর পেয়ে পরদিন ১০ মে কোস্টগার্ড উদ্ধার অভিযান চালিয়ে তাদের নিরাপদে সরিয়ে আনে এবং প্রাথমিক খাবার ও চিকিৎসা সহায়তা দেয়।
উদ্ধারকৃতদের বরাতে জানা যায়, তারা গুজরাটের আহমেদাবাদ ও সুরাট এলাকার বিভিন্ন বস্তিতে শ্রমজীবী হিসেবে বসবাস করতেন। ২৬ এপ্রিল রাতের দিকে ভারতীয় পুলিশ তাদের বাড়িঘর বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেয় এবং নির্যাতনের পর চোখ বেঁধে সামরিক বিমানে করে স্থানান্তর করে। পরে জাহাজে করে বাংলাদেশের জলসীমায় এনে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. রনী খাতুন জানান, ১১ মে রাতে কোস্টগার্ডের কাছ থেকে উদ্ধারকৃতদের গ্রহণ করা হয়। সোমবার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সম্পন্ন না হওয়ায় হস্তান্তর সম্ভব হয়নি, তবে মঙ্গলবার ৭৫ জনকে স্বজনদের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম জানান, যে তিনজন নিজেদের ভারতীয় নাগরিক বলে দাবি করেছে তারা হলেন খুলনার আব্দুর রহমান (২০), নড়াইলের হাসান শাহ (২৪) ও সাইফুল শেখ (১৯)। তারা গুজরাটের নেহেরীনগর এলাকার বাসিন্দা বলে দাবি করলেও কোনো বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। বিষয়টি তদন্তসাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, উদ্ধার হওয়া ৭৮ জনের মধ্যে নড়াইল জেলার ৬৭ জন, খুলনার ৬ জন, যশোরের ২ জন এবং সাতক্ষীরা, ঢাকা ও বরিশালের একজন করে রয়েছেন।(ঢাকা টাইমস/১৩মে/এসএ)

মন্তব্য করুন