দেরিতে আসায় হলে ঢোকার অনুমতি পায়নি দুই এসএসসি পরীক্ষার্থী, আত্মহত্যার চেষ্টা

ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ৩০ এপ্রিল ২০২৩, ১৫:২০

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে দুই এসএসসি পরীক্ষার্থীকে পরীক্ষার হলে ঢুকতে না দেওয়ায় সড়কে বাসের নিচে পড়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। পরে দুই শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে উপজেলা নির্বাহীর কার্যালয়ে নিয়ে যান প্রত্যক্ষদর্শীরা ।

পরীক্ষার্থীরা হলেন, পৌর শহরের জগনাথপুর এলাকার হাজী ইউছুফ আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র রোমান আহমেদ (১৫) ও ভৈরব এম পি গার্লস হাইস্কুলের ছাত্রী তিশা আক্তার (১৫)। পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদিকুর রহমান সবুজ তাদের অভিভাবকদের ডেকে এনে দুইজনকে হস্তান্তর করে।

রবিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ভৈরব উপজেলা কার্যালয়ে এই ঘটনাটি ঘটেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রবিবার সারাদেশে ছিল এসএসসি পরীক্ষার প্রথম দিন। ভৈরবের উক্ত দুইজন পরীক্ষার্থীর নাকি বন্ধুদের কাছে থেকে জেনেছিল বাংলা প্রথমপত্র পরীক্ষা দুপুর ২টায় অনুষ্ঠিত হবে। পরে সকাল ১০টায় জানতে পারে পরীক্ষার সময়সূচি সকাল ১০ টায়। তারপর তারা দ্রুত সকাল পৌনে ১১টায় স্থানীয় পরীক্ষা কেন্দ্র সরকারি কেবি পাইলট মডেল হাইস্কুলে ছুটে গেলে কর্তৃপক্ষ দুজনকে স্কুলে ঢুকতে দেয়নি। তখন সময় গড়িয়ে প্রায় ১১টা বেজে যায়। পরে হতভম্ব হয়ে তারা দুজন উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে ছুটে যায়। সেখানে ইউএনওকে না পেয়ে তারা উপজেলা পরিষদের সামনে ভৈরব-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কে চলাচলকারী বাসের নিচে পড়ে আত্মহত্যা করতে ছুটে যায়। এসময় ঘটনাটি প্রত্যক্ষ করছিল সেখানে উপস্থিত গণমাধ্যম কর্মী আরিফুল ইসলাম মামুন। দুজনের ঘটনা দেখে মামুন তাদের পেছনে পেছনে গিয়ে পথচারী ও জনতার সহায়তায় দুজনকে আত্মহত্যা থেকে রক্ষা করে প্রাণে বাঁচায়। খবর পেয়ে দুজনের অভিভাবকরা বাসা থেকে ছুটে আসে ঘটনাস্থল উপজেলা পরিষদে। পরে তাদের অভিভাবকরা দুজনকে নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্র কেবি স্কুলে গিয়ে ইউএনও'র নিকট ঘটনাটি অবহিত করলেও তারা পরীক্ষা দিতে পারেনি।

ইউসুফ আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রোমান মিয়ার চাচা উজ্জ্বল মিয়া বলেন, আমার ভাতিজা মোবাইলে দেখেছে তার পরীক্ষা নাকি বিকালে। তারপর সে সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে ভৈরব সরকারি কেবি স্কুল কেন্দ্রে প্রবেশ করতে গেলে কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ তাকে ঢুকতে দেয়নি। তখন তারা বলেন পরীক্ষার সময় পার হয়ে যাওয়ায় পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ নেই, আমাদেরকে ইউএনওর কাছে পাঠায়। সেখানে যাওয়ার পর ইউএনও পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে না তিনি বলে দেন। তারপরই এই কথা শুনে দুই শিক্ষার্থী সড়কের দিকে আত্মহত্যার জন্য ছুটে যান। পরে রা তাদের উদ্ধার করি।

ভৈরব এমপি গ্লালস স্কুলের শিক্ষার্থী তিশা আক্তার বলেন, বান্ধবীর কাছ থেকে জেনেছি আজকের পরীক্ষা নাকি বিকালে হবে সেজন্যই আমি বিকালের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। পরে হঠাৎ করে জানতে পারলাম পরীক্ষা তো সকাল ১০টায়। পরে পরীক্ষা দেয়ার জন্য বাসা থেকে আধাঘন্টা পর বের হয়ে কেন্দ্রে গেলে কর্তৃপক্ষ আমাকে ঢুকতে দেয়নি। পরীক্ষার আধাঘন্টা পার হয়ে যাওয়ায় তারা পরীক্ষার সুযোগ দেয়নি।

পরীক্ষা কেন্দ্র ভৈরব সরকারী পাইলট মডেল কেবি হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. নুরুল ইসলাম জানান, দুজন পরীক্ষার্থী নৈর্বৈত্তিক পরীক্ষা শেষ হয়ে গেলে বেলা সাড়ে ১১টায় কেন্দ্রে পৌঁছে, এই কারণে তাদের পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢুকতে দেয়া হয়নি। নিয়মের বাইরে কেন্দ্রে উপস্থিত হলে পরীক্ষা দেয়ার কোনো সুযোগ আমরা দিতে পারি না।

পাবলিক পরীক্ষা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদিকুর রহমান জানান, বিষয়টি আমি অবগত হয়ে ঢাকা বোর্ডের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবগত করি। কিন্ত কর্তৃপক্ষ অনুমতি না দেয়ার কারণে অসময়ে তাদের পরীক্ষা নেয়ার ব্যবস্থা করা আমার পক্ষে সম্ভব হয়নি। তারা পরীক্ষা দেবে সময়সূচি জানবে না এ ধরনের ভুল দুঃখজনক। তাদের অভিভাবকদের বলেছি, বাকি পরীক্ষাগুলি দিতে। এক বিষয় পরীক্ষা আগামী বছর দিতে পারবে। নিয়মের বাইরে গিয়ে তাদেরকে পরীক্ষা দেওয়ার অনুমতি আমি দিতে পারি না। তিনি বলেন অভিভাবকদেরকে অনুরোধ করেছি তাদেরকে বুঝিয়ে সান্ত্বনা দিতে।

(ঢাকাটাইমস/৩০এপ্রিল/এআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :