আমার ভোট আমি দিব, যাকে খুশি তাকে দিব

‘আমার ভোট আমি দিব, যাকে খুশি তাকে দিব,’ এটা মূলত আওয়ামীলীগের শ্লোগান। সেখান থেকে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ একচুলও নড়েনি। এখনও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সুষ্ঠুভাবে ভোট হবে প্রতিটি ভোটার নাগরিক ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে।
এর মধ্যে বহির্বিশ্ব আওয়ামীলীগের এই অঙ্গীকারের সাথে তাল মিলিয়ে ঘোষণা করেছে যে তারা সকলেই সুষ্ঠু ভোট চায়। যেমন আমেরিকা বলেছে বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যারা নাগরিকের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সহিংসতা করবে, বিশৃংখলা করবে বা অধিকার প্রতিষ্ঠায় বাঁধা হবে তাদেরকে বা তাকে আমেরিকা প্রবেশের অনুমতি দিবে না।
দেখা যাচ্ছে একটি গ্রুপ বা অংশীজন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে না কারণ তাদের দলীয় প্রধান এবং ডেপুটি প্রধান সাজাপ্রাপ্ত হওয়ায় নির্বাচন করতে পারবে না। ফলে তারা নানান টালবাহানা করবে এবং নির্বাচন করবে না। আবার, এদের সহযোগি বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিরোধী শক্তি ও যোদ্ধা জামায়াত ইসলাম দেশে চরম বিশৃংখলা তৈরি করতে চাইবে যেন সারাবিশ্বের নিকট তুলে ধরা যায় যে সরকার ব্যর্থ, নির্বাচন কমিশন ব্যর্থ এবং আওয়ামীলীগ নাগরিককে ভোট দিতে দেয়নি, অন্যকে প্রার্থী হতে দেয়নি, ভোটারকে ভোট কেন্দ্রে যেতে দেয়নি। এমনকি নকল কেন্দ্র বানিয়ে (ডিজিটাল প্রযুক্তি দিয়ে) নকল ব্যালট পেপার বানিয়ে ভোট দেওয়া হয়েছে। এধরনের ঘটনা ঘটানোর বা প্রোপাগাণ্ডা ছড়ানোর পায়তারা করবে।
আরেকটা ব্যাপারে আওয়ামীলীগের প্রার্থী, নেতা, কর্মী ও সমর্থকদের বিরোধীরা চ্যালেঞ্জ করবে যেন দলের ভিতর থেকেই কেউ যদি ধর মারো কাটো ইত্যাদি কথা বলে উস্কে দেয়, প্রভোক করে এরকম লোকদের থেকে যেন সতর্ক থাকে। মনে রাখতে হবে পরাধীন ও শোষণ নির্যাতনের সময়েও আওয়ামীলীগ কখনোই সন্ত্রাসী কাজ করেনি, দাঙ্গা হাঙ্গামা করেনি, বিশৃঙ্খলা করেনি। উপমহাদেশের একমাত্র অহিংস দল কিন্তু বাংলাদেশ আওয়ামীলীগই। দেশ স্বাধীনের পর আওয়ামীলীগের সরকার পরিচালনায় কোন শোষণ, শাসন, ত্রাস নেই তাই আওয়ামীলীগ কখনোই বিশৃঙ্খলা করেনি আর করবেও না, দাঙ্গা করবে না, অন্যের অধিকার প্রতিষ্ঠায় বাঁধা হয়নি আর হবেও না। এসব আওয়ামীলীগের নীতি নয়।
যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতির কারণে এখন আসলে বিপদে পরল বিএনপি। কারণ যুক্তরাষ্ট্র স্পষ্ট বলে দিয়েছে যারা নির্বাচনে বাধা দিবে তারা নিষেধাজ্ঞায় পড়বে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসানীতি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতিকে সমর্থন করে। নতুন মার্কিননীতি বরং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আমাদের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করেছে।
তিনি আরও বলেন, সরকার অগ্নিসংযোগ, সহিংসতা ও ধ্বংসযজ্ঞ চায় না।বিএনপির জন্য বড় চাপ তৈরি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি সারা বছর আন্দোলনে বিএনপির ‘ধীরে চলো নীতি’ থাকলেও আগামী নির্বাচনের আগে তা হতো সহিংস। অনেকটা ২০১৪ সালের জ্বালাও পোড়াও আন্দোলনের মতো। কিন্তু তাদের বড় বাধা হয়ে দাড়ালো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রদত্ত ভিসানীতি। কারণ ভিসানীতি অনুযায়ী কোনো দল বা ব্যক্তি নির্বাচনে বাধা দিলে কিংবা বানচাল করার জন্য কোনো ধরনের সহিংসতা ঘটানোর চেষ্টা করলে তারাই এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বে। এমনকি ভাষাগত বিষয় প্রয়োগ করা যেমন বিভিন্ন উসকানীমূলক বক্তব্য বা কেউ যদি বলে ‘নির্বাচন করতে দেওয়া হবে না’ শুধু এই শব্দটাও উচ্চারণ করে, তাহলে সেটাও বাধা দানের পর্যায়ে পড়বে।
জানা গেছে, বর্তমানে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে দলটি। বিএনপির পক্ষ থেকে নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলা হয়েছে, কোনো সভা সমাবেশে বক্তব্য দেওয়ার আগে সবাইকে শব্দ প্রয়োগে সচেতন হতে হবে এবং কেন্দ্রীয় পর্যায়ে কোনো বক্তব্য দিতে হলে সেখানে যে যেই বিষয়ে বক্তব্য দিবে সেগুলো আগে লিখিত আকারে দিতে হবে। সেখানে ভাষাগত বিষয় কিংবা উসকানিমূলক কোনো শব্দ থাকলে সংশোধনের পর তবেই তা প্রকাশ করতে পারবে।
এদিকে মার্কিন ভিসানীতির পরে প্রথমবারের মতো কেরানীগঞ্জে পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করে বিএনপি নেতাকর্মীরা। সেখানে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সরাসরি হামলা করে বিএনপি। এই ঘটনা নিয়ে দলের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা চলছে। দলের কেউ কেউ বলছেন, সদ্য ঘোষিত মার্কিন ভিসানীতির পরে বিএনপির কর্মসূচি দেয়া ঠিক হয়নি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক’রা জানান, ভিসানীতির ফলে বিএনপি অনেক চাপে রয়েছে। নির্বাচন বর্জন করা গণতন্ত্রকে বাধাগ্রস্ত করা আর নির্বাচন প্রতিহত করা তো সংঘাত তৈরি করা। এগুলো তো এখন আর বিএনপি করতে পারবে না। এটাতে তো বিএনপির ওপর বড় চাপ তৈরি করেছে।
পররাষ্ট্র দপ্তরের এক বিবৃতিতে বলা হয়, বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর অধীনে একটি গণতান্ত্রিক ও রাজনৈতিকভাবে স্থিতিশীল দেশ হিসেবে জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে ধারাবাহিক নির্বাচন অনুষ্ঠানের অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের রয়েছে। জনগণের ভোটাধিকারের অধিকারকে আওয়ামী লীগ সরকার একটি রাষ্ট্রীয় পবিত্রতা হিসেবে বিবেচনা করে যে দলের সেই অধিকার রক্ষার জন্য নিরলস সংগ্রাম ও আত্মত্যাগের রাজনৈতিক উত্তরাধিকার রয়েছে। সরকার সব শান্তিপূর্ণ ও বৈধ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য সমাবেশ ও সংঘটনের স্বাধীনতাকে গুরুত্ব দেয়।
লেখক-আশিকুর রহমান অমি, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
(ঢাকাটাইমস/৩জুন/এসএটি)
সংবাদটি শেয়ার করুন
মতামত বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
মতামত এর সর্বশেষ

স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা জননেত্রী শেখ হাসিনা

জনম ও জনকল্যাণে উৎসর্গীকৃত এক জীবন শেখ হাসিনার

শুভ জন্মদিন দেশরত্ন শেখ হাসিনা

উন্নয়নের বঙ্গরত্ন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

শেখ হাসিনা: স্রষ্টার পরিকল্পিত রাজনৈতিক নেতৃত্ব

বেলজিয়ামের সাংবাদিকের দৃষ্টিতে বঙ্গবন্ধু হত্যা, জিয়ার ভূমিকা

অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ১১ সুপারিশ

এস. এম জাহাঙ্গীর আলম সরকার: এক অকুতোভয় শিল্পী ও শব্দসৈনিকের কিছু প্রাসঙ্গিক সৃষ্টির সাতকাহন

ফুটবল প্রশ্নে কেন ইমরুল হাসান আলাদা?
