মৌরির গুণেই জব্দ থাকবে হৃদরোগ ও ক্যানসারসহ বহু জটিল রোগ!
প্রকৃতির দয়ায় আমাদের আশপাশেই এমন কিছু উপাদান উপস্থিত রয়েছে যা শরীর সুস্থ রাখতে খুবই। এই তালিকায় একদম প্রথম সারিতেই আসবে মৌরির নাম। এই প্রাকৃতিক উপাদানটি নিয়মিত খেলে হৃদরোগ ও ক্যানসারসহ একাধিক জটিল থেকে জটিলতর সমস্যা থেকে সহজেই দূরে থাকা যায়।
মৌরি একেবারে জিরার মতো দেখতে, তবে সাইজে একটু বড়। সাধারণত খাওয়ার পর মুখশুদ্ধি হিসাবে এই প্রাকৃতিক উপাদানটি খাওয়ার চল রয়েছে। এছাড়া এর তেমন একটা ব্যবহার নেই। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, যত দ্রুত সম্ভব মৌরির ব্যবহার আরও কয়েকগুণ বাড়িয়ে নিতে হবে। তাহলেই একাধিক রোগ-ব্যাধি দূরে থাকবে।
মৌরিতে রয়েছে ভিটামিন সি, ক্যালশিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজসহ একাধিক উপকারী উপাদান। এছাড়া এতে রয়েছে রসম্যারিনিক অ্যাসিড, ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড, কুয়েরসিটিনের মতো উপকারী প্ল্যান্ট কম্পাউন্ড।
তাই নিয়মিত মৌরি খেলে শরীর সুস্থ থাকে। এই কারণেই প্রাচীন আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে মৌরিকে অত্য়ন্ত গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। বিভিন্ন অসুখের চিকিৎসাতেও এর ব্যবহার রয়েছে। তাই আর দেরি না করে মৌরির একাধিক গুণ সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক।
ওজন কমাতে সিদ্ধহস্ত
খাদ্যাভ্যাসের ভুলভ্রান্তি গুরুতর কিছু সমস্যাকে বোগলদাবা করে ডেকে আনে। এই সব সমস্যার মধ্যে ওবেসিটি অন্যতম। এক্ষেত্রে বাইরের তেল, ঝাল, মশলাযুক্ত খাবার বেশি পরিমাণে খেলে ওজন বেড়ে যাওয়া স্বাভাবিক। তাই এই ধরনের খাবার থেকে দূরে থাকতে হবে।
তবে মুশকিল হলো, রাস্তাঘাটে বা অফিসে হঠাৎ করে খিদের তাড়নায় মানুষ এই ধরনের তৈলাক্ত খাবারগুলোকেই বেছে নিচ্ছেন। ফলে ওজন বাড়ছে। তবে ভালো খবর হলো, নিয়মিত মৌরি খেলে খিদেকে বশে আনা যায়। খিদে কমলেই কিন্তু সমানুপাতিক হারে ওজনও হ্রাস পায়। তাই এই দিকটা মাথায় রাখা খুবই জরুরি।
হার্টকে সুস্থ রাখে
হৃৎপিণ্ডকে সুস্থ রাখার কাজে মৌরির কোনো জুড়ি নেই। আসলে এই প্রাকৃতিক উপাদানে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। এই ফাইবার কিন্তু হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমায়। এছাড়া এই প্রাকৃতিক উপাদানে উপস্থিত রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম এবং ক্যালশিয়াম। এসব খনিজ হার্টের স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখার পাশাপাশি ব্লাড প্রেশার কমানোর কাজেও সিদ্ধহস্ত। তাই হৃদরোগের ফাঁদ থেকে বাঁচতে নিয়ম করে মৌরি খান।
ক্যানসারের করাল গ্রাস থেকে বাঁচাতে পারে
মৌরিতে রয়েছে অ্যানেথল নামক একটি উপাদান। এই উপাদান কিন্তু বিভিন্ন ক্রনিক ডিজিজের হাত থেকে আমাদের রক্ষা করে। এমনকি ক্যানসার প্রতিরোধেও অত্যন্ত কার্যকরী এই উপাদান। গবেষণায় দেখা গেছে, এই উপাদানটি ক্যানসার কোষের বৃদ্ধি আটকে দেয়। তাই এই অসুখের গ্রাস থেকে বাঁচতে অবশ্যই মৌরি খান।
ব্যাকটেরিয়ানাশক ক্ষমতা রয়েছে
আমাদের আশপাশেই রয়েছে অসংখ্য ব্যাকটেরিয়ার বাস। একটু এদিক-ওদিক হলেই এই জীবাণুগুলো শরীরে সমস্যা তৈরি করতে পারে। তবে জানলে অবাক হবেন, হাতের কাছে থাকা মৌরির ব্যাকটেরিয়ানাশক ক্ষমতা রয়েছে। ফলে ইসচেরিয়া কোলি, স্টাইফোকক্কাস, ক্যানডিডা অ্যালবিক্যানসের মতো একাধিক জীবাণুর সংক্রমণ প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়। তাই যারা নিয়মিত ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশনে ভোগেন, তারা অবশ্যই মৌরি খান। এর মাধ্যমেই সংক্রমণ প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে।
প্রদাহনাশে সিদ্ধহস্ত
আজকালকার অস্বাস্থ্যকার জীবনযাত্রায় দেহে প্রদাহ তৈরি হতে সময় লাগে না। এই সমস্যার দরুন একাধিক জটিলতা দেহে বাসা বাঁধে। এমনকি বিভিন্ন অঙ্গের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই যেনতেন প্রকারেণ প্রদাহনাশ করতে হবে। এই কাজে আপনাকে সাহায্য করতে পারে মৌরি। প্রতিদিন এক চামচ মৌরি খেলেই সমস্যা থেকে রেহাই মিলবে।
(ঢাকাটাইমস/6জুন/এজে)