যমুনার ভাঙন রোধে স্থায়ী বাঁধের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ

ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৬ জুলাই ২০২৩, ১৮:৩৮

উজান থেকে নেমে আসা ঢল ও টানা বৃষ্টিতে যমুনা নদীতে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে আশঙ্কাজনকহারে পানি বৃদ্ধি কারণে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর অংশে ব্যাপক আকারে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ফলে বসত-ভিটা, ঘরবাড়ি, ফসলি জমি, মসজিদ, মন্দির ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ নানা স্থাপনা বিলীন হচ্ছে নদী গর্ভে। এতে করে দিশেহারা পড়ে পড়েছেন নদীপাড়ের ভাঙন কবলিত মানুষ। এসব ভাঙন কবলিত পরিবারের লোকজন মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

এমন অবস্থায় ভয়াবহ ভাঙনের শিকার শতশত পরিবার দিশেহারা হয়ে ভাঙনরোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবিতে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব-ভূঞাপুর-এলেঙ্গা আঞ্চলিক মহাসড়ক উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের চিতুলিয়াপাড়ার এলাকায় আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। এ অবরোধ কর্মসূচি দুপুর ১২টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। পরে উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে অবরোধটি তুলে নেয় এলাকাবাসী।

এর আগে খবর পেয়ে বেলা ১১টার দিকে গোবিন্দাসী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. দুলাল হোসেন চকদার মানববন্ধনে আসে। পরে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঘটনাস্থলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. বেলাল হোসেন উপস্থিত হন। তিনি তাৎক্ষণিক ভাঙন কবলিত এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলার আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেয়া হয়। এ অবরোধের ফলে উভয় দিকে প্রায় ৪ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়।

ভাঙনরোধে প্রতিকার চেয়ে মানববন্ধন ও অবরোধ কর্মসূচিতে অংশ নেন ৭৫ বয়সী বৃদ্ধা ছমিদা বেগম। তিনি বলেন, এবার বর্ষার শুরু থেকেই ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। নদীর তীরে থাকা কয়েকদিন আগেও আমার টিনের চালের ঘরটি ছিল। সে সময় যদি আপাতত জিওব্যাগ ফেলা হতো তাহলে ঘরটি আজ হারাতে হতো না। গত মঙ্গলবার থেকে ধীরে ধীরে বসতভিটি যমুনা নদী গ্রাস করেছে। তাই ভাঙনরোধ ঠেকাতে সবার সাথে অংশ নিয়েছি।

বসতভিটা ও ফসলি জমি হারিয়ে নিঃস্ব আনোয়ার হোসেন বলেন, গত প্রায় একমাস থেকে এই এলাকায় ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। ভাঙনে আমার বসতভিটা ও ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়েছে। আমি পরিবার নিয়ে এখন মানবেতর জীবনযাপন করছি। প্রভাবশালী ব্যক্তিরা নিজ নিজ বাড়ি রক্ষায় তদবির করে জিওব্যাগ ফেলছে। এ নিয়ে কিছু বলাও যায় না। তাই আমি এলাকার ভাঙন রোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. বেলাল হোসেন বলেন, ভাঙনরোধে স্থায়ী বাঁধের দাবিতে সড়ক অবরোধ করছিল চিতুলিয়াপাড়ার লোকজন। এ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত পৌঁছে তাৎক্ষণিক ভাঙনরোধে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া ও ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রাণ সহায়তা দেয়ার ঘোষণা দিলে তারা অবরোধ তুলে নেন। যারা বসতভিটা ও ঘর-বাড়ী হারিয়েছে তাদের তালিকা করে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়া বিষয়টি জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানানো হয়েছে।

প্রসঙ্গত, যমুনা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করায় টাঙ্গাইলের ভুঞাপুর উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের মধ্যে গোবিন্দাসী, নিকরাইল, গাবসারা ও অর্জুনা ইউনিয়নে ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়। এতে প্রতি বছরই শতশত বসত-ভিটা, ফসলি জমি, মসজিদ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ নানা স্থাপনা বিলীন হয়ে যায়। এতে দিশেহারা ও নিঃস্ব হন নদীপাড়ের মানুষ। কিন্তু জনপ্রতিনিধিরা ভাঙনরোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের বার বার আশ্বাস দিলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি।

(ঢাকাটাইমস/৬জুলাই/এআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :