ছোট বোনকে বাঁচাতে একে একে প্রাণ দিল বড় ৩ বোন
মা-বাবা কর্মস্থলে। চার বোন ছিল বাসায়। হঠাৎ বাসায় আগুন ধরে যায়। সবার ছোট আড়াই বছর বয়সী বোনটির যাতে কোনো ক্ষতি না হয়, তার শরীরের ওপর ‘মানবঢাল’ তৈরি করেন বড় তিন বোন। আগুনে দগ্ধ তিনজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু তিন সপ্তাহের মধ্যে একে একে তিন বোনই মারা যায়। নিজেদের জীবনের বিনিময়ে ছোট বোনের প্রাণরক্ষার এমন মর্মস্পর্শী ঘটনা ছুঁয়ে গেছে পাড়া-প্রতিবেশীসহ সবাইকে। চোখের সামনে একে একে ৩ মেয়েকে প্রাণ হারাতে দেখলেন মিঠুন ও আরতি দম্পতি।
ঘটনাটি ঘটেছে গত ২০ জুন ভোরে। সেদিন সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে ঘরের ভেতরে আকস্মিক বিকট শব্দ হয়। মুহূর্তেই দাউ দাউ করে পুরো ঘরে আগুন ধরে যায়। আড়াই বছরের ছোট বোন সুইটি রানী দাশের গায়ে যাতে আগুন না লাগে, সেই কারণে মানব ঢাল হয়ে দাঁড়ায় ৩ বোন। এতে শরীরের বেশিরভাগ অংশ পুড়ে যায় তাদের। অগ্নিকাণ্ডে সামান্য পুড়লেও রক্ষা পায় ছোট বোন। পরে আগুনে দগ্ধ তিনজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হয়।
এরপর গত ২২ জুন শারীরিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় সারথি ও হ্যাপিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেয়া হয়। ঘটনার প্রায় ২৪ দিনের ব্যবধানে আগুন লাগার ঘটনায় একে একে ৩ বোনের মৃত্যু হয়।
নিহতরা হলো- সারথি রানী দাশ (১৭), সাখশী রানী দাশ (১৩) ও হ্যাপি রানী দাশ (৬)। সবশেষ বুধবার রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে মারা গেছে হ্যাপি।
এর আগে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩০ জুন একই ইনস্টিটিউটে সারথি ও তার আগে ২৪ জুন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে মারা যায় সাখশী। নিহতরা চট্টগ্রাম নগরের বান্ডেল রোডের সেবক কলোনির বাসিন্দা মিঠুন ও আরতি দম্পতির মেয়ে। নিহত সারথি সপ্তম শ্রেণির, সাখশী পঞ্চম ও হ্যাপি কেজি শ্রেণির ছাত্রী ছিলেন।
উল্লেখ্য, গ্যাসের চুলা থেকে আগুনের সূত্রপাত। নিহত তিন বোনের শরীরের ৯০ শতাংশের ওপর আগুনে পুড়ে গিয়েছিল।
(ঢাকাটাইমস/১২জুলাই/এআর)