বঙ্গবন্ধু বাঙালির মানসপটে চির অমলিন

যদি রাত পোহালে শোনা যেত
বঙ্গবন্ধু মরে নাই।
যদি রাজপথে আবার মিছিল হতো
বঙ্গবন্ধুর মুক্তি চাই!
তবে বিশ্ব পেত এক মহান নেতা,
আমরা পেতাম ফিরে জাতির পিতা।’
গানের কথাগুলো শুনলেই চোখ ভিজে আসে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকরা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করে। জাতীয় শোক দিবসে আমি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি ১৫ আগস্টের সব শহিদকে এবং মহান আল্লাহ্তায়ালার দরবারে তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করছি।
জাতির পিতার দূরদর্শী ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাঙালি জাতি পরাধীনতা ও দাসত্বের শৃঙ্খল ভেঙে ছিনিয়ে এনেছিল আমাদের মহান স্বাধীনতা। বঙ্গবন্ধু বাঙালির অধিকারের প্রশ্নে কখনো আপোষ করেননি। ফাঁসির মঞ্চেও তিনি বাংলা ও বাঙালির জয়গান গেয়েছেন।
বঙ্গবন্ধু যখন সদ্য স্বাধীন যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে সমগ্র জাতিকে নিয়ে ক্ষুধা-দারিদ্রমুক্ত সোনার বাংলাদেশ গড়ার সংগ্রামে নিয়োজিত, তখনই স্বাধীনতাবিরোধী-যুদ্ধাপরাধী চক্র তাকে হত্যা করে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে তারা বাঙালির স্বাধীনতা, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও অগ্রযাত্রাকে রুদ্ধ করার অপপ্রয়াস চালায়।
ঘাতকদের উদ্দেশ্যই ছিল। অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের রাষ্ট্রকাঠামোকে ভেঙে আমাদের কষ্টার্জিত স্বাধীনতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা এবং বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করা। ইতিহাসের বর্বরোচিত এ হত্যাকাণ্ডের পরে সারা বিশ্বে নেমে আসে তীব্র শোকের ছায়া।
‘দ্য টাইমস অব লন্ডন’র ১৯৭৫ সালের ১৬ আগস্ট সংখ্যায় উল্লেখ করা হয়, ‘সবকিছু সত্ত্বেও বঙ্গবন্ধুকে সব সময় স্মরণ করা হবে। কারণ তাকে ছাড়া বাংলাদেশের বাস্তব কোনো অস্তিত্ব নেই।’
একই দিন লন্ডন থেকে প্রকাশিত ডেইলি টেলিগ্রাফ পত্রিকায় বলা হয়, ‘বাংলাদেশের লাখ লাখ লোক শেখ মুজিবের জঘন্য হত্যাকাণ্ডকে অপূরণীয় ক্ষতি হিসেবে বিবেচনা করবে।’
শেখ মুজিবের সুচিন্তা থেকে আজকের বাঙালিরও শেখার আছে উল্লেখ করে ভারতীয় বাঙালি নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন সম্প্রতি বলেছেন, তাকে ‘বাংলাদেশের জনক’ বা বঙ্গবন্ধু বলাটা নিতান্তই কম বলা। তিনি এর চেয়ে বড় কোনো অভিধা এবং নাম কিনতে চাননি। মানুষ তাকে অন্তর থেকে ভালোবাসতেন।
ঘাতকচক্র বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করলেও তাঁর স্বপ্ন ও আদর্শের মৃত্যু ঘটাতে পারেনি। বাংলাদেশ তথা পৃথিবীর মুক্তিকামী মানুষের কাছে বঙ্গবন্ধু এক প্রেরণার উৎস। বঙ্গবন্ধু বাঙালির মানসপটে চির অমলিন। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন জাতির পিতার নাম এ দেশের লাখো কোটি বাঙালির অন্তরে চির অমলিন, অক্ষয় হয়ে থাকবে।
জাতির পিতা হারানোর শোককে শক্তিতে পরিণত করার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর ত্যাগ এবং তিতিক্ষার দীর্ঘ সংগ্রামী জীবনাদর্শ ধারণ করে সবাই মিলে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের অসাম্প্রদায়িক, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলি- জাতীয় শোক দিবসে এই হোক আমাদের অঙ্গীকার। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।
লেখক: সাধারণ সম্পাদক, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ।
সংবাদটি শেয়ার করুন
মুক্তমত বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
মুক্তমত এর সর্বশেষ

ব্যাংক তুমি যতই খেল তোমার আদায় ৩০০ গুনো

ভাই গিরিশচন্দ্র সেন বনাম মৌলবী নইমুদ্দীন: একটি ভুল প্রচারের ‘ভুল’ নিরসন

প্রজন্মকে বাঁচাতে চাই বৃক্ষরোপণ

ডেঙ্গু প্রতিরোধে চাই সচেতনতা

জীবনবোধ থেকেই মনোবিজ্ঞান অধ্যয়ন জরুরি

বেকারত্ব কমাতে বয়সসীমা বাড়ানো হোক

জ্ঞান অর্জনে বই পড়ার বিকল্প নেই

আসুন মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষা করি

অস্তিত্ব রক্ষার স্বার্থে বৃক্ষ নিধন রোধ করুন, বৃক্ষ রোপণ করুন
