স্বপ্নের পথে বাধা: শিক্ষার্থীদের সংগ্রাম ও সফলতা

জয়া রানী পাল
  প্রকাশিত : ২৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১৪:০০| আপডেট : ৩০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৪:৫৭
অ- অ+

স্বপ্ন প্রত্যেক মানুষের জীবনের চালিকাশক্তি। জীবনের জন্য যেমন অক্সিজেন প্রয়োজন তেমনি জীবনে বড় হওয়ার জন্য প্রয়োজন স্বপ্নের। জীবনের সফল হওয়ার স্বপ্ন প্রায় প্রতিটি শিক্ষার্থীর মনের কোণে বাসা বাঁধে। কেউ বিজ্ঞানী হতে চায়, কেউ চিকিৎসক আবার কেউ শিক্ষক বা উদ্যোক্তা। স্বপ্ন পূরণের পথে বাধা আসবেই কিন্তু যারা হাল ছাড়ে না তারাই সফল হয় ।

বাংলাদেশের বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। দেখা যায় যে সেই সব পরিবারে বাবাই একমাত্র উপার্জনকারী ব্যক্তি। এসব পরিবারের সন্তানদের উচ্চতর পড়াশোনা করে চালিয়ে যাওয়া অনেক ক্ষেত্রে কঠিন হয়ে দাঁড়ায় । শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন পূরণের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায় টিউশন ফি, পড়াশোনার সরঞ্জাম বা প্রয়োজনীয় রিসোর্সের অভাব। অনেকেই হয়তো শখের বই কিনতে পারে না। কিন্তু তারপরও কিছু শিক্ষার্থী এই পরিস্থিতিতে নত হয় না, তারা সংগ্রাম করে তাদের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেয়। সেলফ-স্টাডি, ছোটখাটো কাজ করে, টিউশন করিয়ে কিংবা স্কলারশিপের মাধ্যমে তারা তাদের স্বপ্নে পৌঁছায়।

শিক্ষার্থীরা শুধু আর্থিক নয়, সামাজিক ও মানসিক চাপেরও সম্মুখীন হয়। মেয়েদের ক্ষেত্রে দেখা যায় উচ্চ মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরোতে না পেরোতেই বিয়ে হয়ে যায়। যার ফলে অনেক শিক্ষার্থী তাদের পড়াশোনা থেকে দূরে সরে যায়। আবার অনেক শিক্ষার্থী পরীক্ষার ফলাফলের চাপ, পারিবারিক প্রত্যাশা, প্রতিযোগিতার পরিবেশ এগুলোর সাথে পেরে উঠে না। পরীক্ষার ফলাফল খারাপ হলে তারা ভেঙে পড়ে । তারা তাদের মা-বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে পারবে না এই মনোভাব পোষণ করে বিষণ্ণতায় ভোগে। কিন্তু তাই বলে কি কোনো শিক্ষার্থী তাদের স্বপ্নগুলো পূরণ করছে না? তাদের স্বপ্নগুলো কি ঐসব সমস্যাতেই থমকে যাচ্ছে ?

কখনোই না, যে শিক্ষার্থীরা এই বাধাগুলো কাটিয়ে উঠতে পারে তাদের জন্য অপেক্ষা করে সাফল্যের দ্বার। স্বপ্ন পূরণ করার জন্য প্রয়োজন দৃঢ় মনোবল, লক্ষ্যকে স্থির রাখতে হয়।

একটি ছোট্ট গ্ৰামে এক শিক্ষার্থী তার স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করার জন্য যেভাবে প্রতিদিন সংগ্ৰাম করেছিল সে জানতো না একদিন সে দেশের শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হবে। তবে সে জানতো যদি সে চেষ্টা না করে , কখনো কিছু অর্জন হবে না। অবস্থা যখনই কঠিন, তখনই শক্তি আসে। একটি গ্ৰামের মেয়ে যখন তার পরিবারের আর্থিক অবস্থা খুবই খারাপ ছিল তখন তার সামনে অন্য কোনো পছন্দ ছিল না। সে নিজের পড়াশোনার প্রতি এতটাই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিল যে, সে গ্ৰামের একটি স্কুলের লাইব্রেরি থেকে বই ধার করে পড়ত। আজ সে একজন সফল প্রকৌশলী। আরেকজন শিক্ষার্থী যার সমস্যা ছিল মানসিক চাপ। যখন সে ক্লাসের অন্য শিক্ষার্থীদের থেকে অনেক পিছিয়ে ছিল ,তখন সে নিজের প্রতি হতাশ অনুভব করতো। কিন্তু সে বুঝতে পারে এগিয়ে যেতে হবে শুধু নিজের জন্য, তার ওপর বিশ্বাস রেখে সে পরিশ্রম শুরু করে এবং অবশেষে সেই সংকট জয় করে ।

চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও আমরা যদি মনোবল না হারাই এবং প্রতিদিন ছোট ছোট পদক্ষেপ নিই তাহলে বড় লক্ষ্য অর্জন অসম্ভব কিছু নয় । আজ পর্যন্ত যারা সফলতার শীর্ষে পৌঁছেছেন, সকলেই কঠোর পরিশ্রম করেছেন। যেকোনো সফল কাজের পিছনেই সংগ্রাম রয়েছে ও থাকবেই, হয়তো কখনো সেটা আমাদের সামনে দৃশ্যমান হয় আবার কখনো অগোচর থাকে। আমাদের কখনোই ভেঙে পড়া যাবে না, বরং ওই সমস্যাটুকুকে সমাধানের পথে নিয়ে নতুন গন্তব্য তৈরি করতে হবে।

জয়া রানী পাল: শিক্ষার্থী, লোকপ্রশাসন বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
দিনাজপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি বাচ্চু, সম্পাদক দুলাল
রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের প্রতি জাতিসংঘের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করলেন গুতেরেস
অবশেষে ভুটানের লিগে খেলতে বাফুফে থেকে ছাড়পত্র পেলেন মাসুরা-রুপনা
সোনারগাঁয়ে ইফতার ও ঈদ সামগ্রী বিতরণ 
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা