নোবিপ্রবির শিক্ষকদের ভাবনায় শোকাবহ আগস্ট

মো. নিয়াজ উদ্দিন, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২০ আগস্ট ২০২৩, ১৩:০০ | প্রকাশিত : ২০ আগস্ট ২০২৩, ১২:১৫

সমগ্র বাঙালি জাতির জন্য শোকার্ত ও বেদনাদায়ক মাস আগস্ট। এ মাস ইতিহাসের নৃশংস কলঙ্কিত এক হত্যাকাণ্ডের সাক্ষী। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাসায় নৃশংসভাবে হত্যা করে কিছু বিপথগামী সেনাসদস্য। যে মহান নেতা জাতির মুক্তির জন্য এত ত্যাগ-তিতিক্ষা, আর অবর্ণনীয় কষ্ট স্বীকার করলেন বিনিময়ে পেলেন তাদেরই নিক্ষিপ্ত বুলেট। জাতির জনকের মৃত্যুর মাস আসলেই বাঙালি জাতির মাঝে নেমে আসে শোকের ছায়া।

এই `শোকাবহ আগস্ট‘ নিয়ে নিজেদের ভাবনা তুলে ধরেছেন উপকূলীয় অক্সফোর্ড খ্যাত নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) শিক্ষকবৃন্দ।

স্বপ্নদ্রষ্টাকে হারানোর মাস

আগস্ট বাঙালির জাতির স্বপ্নদ্রষ্টাকে হারানোর মাস যিনি জন্মছিলেন বলেই আজ আমরা স্বাধীন জাতি। মানবসভ্যতার ইতিহাসে ঘৃণ্য ও নৃশংসতম হত্যাকান্ডের এক কলঙ্কময় দিনটি ঘটে এ মাসের ১৫ তারিখে। এই দিনে সেনাবাহিনীর কিছুসংখ্যক উচ্চাভিলাষী ও বিশ্বাসঘাতক অফিসারের হাতে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হন। তার মৃত্যুর পর বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে নেমে আসে শোকের ছায়া। ঘাতকচক্র বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে ঠিকই, কিন্তু জনগণের মন থেকে তার স্বপ্ন ও আদর্শের মৃত্যু ঘটাতে পারেনি। আমরা এমন এক দেশ গড়তে সমর্থ হব যেখানে সর্ববিধ সংস্কার থেকে মানুষের মুক্তি ঘটবে, শোষণ বঞ্চনার অবসান হবে, প্রত্যেক নরনারীর সৃজনশীলতা অর্গলমুক্ত হবে। স্বপ্ন দেখার সাহস আমাদের ফিরিয়ে আনতে হবে। শোককে শক্তিতে পরিণত করে স্বপ্ন দেখতে হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাদীপ্ত বাংলাদেশের। জাতির প্রধান পথপ্রদর্শক মৃত্যুবরণ করলেও তার স্মৃতি এবং প্রাপ্তি আমাদের আশার আলো জ্বালায় আজও। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণ করতে হলে তার চিন্তা-চেতনাকে ধারণ করতে হবে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় পারে বঙ্গবন্ধুর কাঙ্ক্ষিত স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে।

অধ্যাপক ড. এস এম মাহাবুবুর রহমান, ডীন, ব্যবসায় অনুষদ, নোবিপ্রবি।

সমগ্র জাতির জন্য শোকের মাস

সমগ্র বাঙালি জাতির জন্য এক শোকের মাস আগস্ট। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট দেশীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রান্তে একদল বিপথগামী সেনা সদস্য ধানমন্ডির ৩২নম্বরের বাড়িতে স্বাধীনতার মহান স্থপতি, মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ তার পরিবারের সদস্যদের নির্মম এবং পৈশাচিকভাবে হত্যা করে। বাঙালি জাতির ললাটে এটে দেয় কলঙ্কের তিলক। যাদের হাত হতে রক্ষা পায়নি বঙ্গবন্ধুর আদরের সর্বকনিষ্ঠ সন্তান শেখ রাসেলও। যা স্মরণ হলে হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়। পৃথিবীর ইতিহাসে যতগুলো নৃশংস, মর্মান্তিক এবং লোমহর্ষক ঘটনা ঘটেছে তার মধ্যে অন্যতম জাতির পিতাকে হত্যার ঘটনা। এটি বাঙালি জাতির জন্য একটি কালো অধ্যায়। যে মহান নেতা জাতির মুক্তির জন্য এত ত্যাগ-তিতিক্ষা, আর অবর্ণনীয় কষ্ট স্বীকার করলেন বিনিময়ে পেলেন তাদেরই নিক্ষিপ্ত বুলেট। সেই থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম বাংলার আকাশে বাতাসে ও মানুষের মন থেকে মুছে ফেলতে চেয়েছে ষড়যন্ত্রকারী ঘাতকরা, যা কোনদিন হয়নি, হবেও না। পৃথিবীতে বাঙালি জাতি যতদিন থাকবে, ততদিনই থাকবে বঙ্গবন্ধুর নাম ও তার কর্ম। আসুন আমরা জাতির পিতার হারানোর শোককে শক্তিতে পরিণত করে বঙ্গবন্ধুর অসাম্প্রদায়িক, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলি।

অধ্যাপক ড. মো. আনিসুজ্জামান, প্রভোস্ট, ভাষা শহীদ আব্দুস সালাম হল, নোবিপ্রবি।

দেশের মানুষের স্বপ্নদ্রষ্টা

জাতির পিতা ও বাংলাদেশ একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। যেখানে একটি ছাড়া অন্যটি অর্থহীন। মানবসভ্যতার ইতিহাসে নৃশংস, লোমহর্ষক এবং ঘৃণিত এক কলঙ্কজনক অধ্যায়ের জন্ম হয় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। সেদিন বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি ও জাতির পিতাকে নিজ বাড়িতে সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। বঙ্গবন্ধু ছিলেন এ দেশের মানুষের স্বপ্নদ্রষ্টা। দেশ স্বাধীনের পর তার চিন্তাভাবনা জুড়ে ছিলো বাংলাদেশের অগ্রগতি। স্বাধীন হওয়ার পর মাত্র সাড়ে তিন বছরে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ বঙ্গবন্ধুর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে স্বাভাবিক গতি ফিরে পেয়েছিল। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সদস্যপদ লাভের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক অঙ্গণে বাংলাদেশের উপস্থিতি জানান দেয়। আইএমএফ, কমনওয়েলথ, জাতিসংঘসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার সদস্যপদ লাভ করে বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকান্ড সংঘটিত না হলে দেশের অর্থনীতি ও সামাজিক উন্নয়ন সাধনের মাধ্যমে উন্নত দেশ হিসেবে বিশ্ব দরবারে নিজের অবস্থান জানান দিতে পারত। দেশ থেকে দুর হতো অপরাজনীতির কালো ছায়া। ঘাতকবাহিনী ভেবেছিল বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারকে হত্যার মধ্য দিয়ে আবারও দেশকে পরাধীন করতে। কিন্তু তারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করলেও তার স্বপ্ন ও আদর্শকে হত্যা করতে পারেনি। বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্ন আর আদর্শের স্মৃতিরেখায় দেশ আজ উন্নয়নের দারপ্রান্তে। তার সুযোগ্য কন্যা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। শোকাবহ আগস্ট মাসে এ মহান নেতা ও তার পরিবারের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করি।

ড. মো. রফিকুল ইসলাম, প্রভোস্ট, হযরত বিবি খাদিজা হল, নোবিপ্রবি।

অপূরণীয় ক্ষতির মাস

বঙ্গবন্ধু তার জীবদ্দশায় নিঃস্বার্থভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মানুষের সর্বাঙ্গীন মুক্তির জন্য সংগ্রাম করেছেন। বহুবার জেলবন্দিও হয়েছেন। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর তিনি একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ার দায়িত্ব কাঁধে নিয়েছিলেন। একটি দেশ সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য বাঙালির হাজার বছরের লালিত স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য, মুক্তিযুদ্ধের চেতনানির্ভর একটি সময়োপোযোগী আধুনিক রাষ্ট্র গঠনের জন্য সম্ভাব্য সব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কতিপয় বিপথগামী নরপিশাচদের হাতে পয়েট অব পলিটিক্সখ্যাত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নির্মম হত্যাকান্ডের শিকার হয়। এই হত্যাকান্ডে এ দেশের মানুষ যেমন হারিয়েছিল তাদের অভিভাবককে তেমনি বিশ্ববাসী বঞ্চিত হয়েছিল একজন মহান নেতার সাহচার্য, যা এক অপূরণীয় ক্ষতি। ১৫ আগস্ট আমরা শুধু বঙ্গবন্ধুকেই হারায়নি, আমরা হারিয়েছি বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামাল, শেখ জামাল, ছোট্ট শেখ রাসেল ও বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবসহ আরও অনেককে। বঙ্গবন্ধু এ দেশের উপযোগী করে সমাজতন্ত্র গঠন করতে চেয়েছিলেন। সাদ্দাম হোসেন বঙ্গবন্ধুকে `সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের প্রথম শহীদ‘ বলে উল্লেখ করেন। কিউবার ফিদেল ক্যাস্ট্রো বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে বলেছিলেন " I haven’t seen Himalayas but I have seen Sheikh Mujib. In personality and in courage this man is the Himalayas. "ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা গঠন ছিলো তার আজীবন লালিত স্বপ্ন। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকান্ডের মধ্যদিয়ে দেশবিরোধীরা বাংলাদেশকে একটি ব্যার্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে চেয়েছিলো। প্রকৃতপক্ষে এটি শুধু একজন মহান নেতার মৃত্যু ছিল না, বরং এটি ছিলো বাঙালি জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষার পরাজয়। বঙ্গবন্ধু ছিলেন বাঙালি জাতির এক বিশ্বস্ত বন্ধু। তার মৃত্যু যেন তাই কলঙ্কিত ও রক্তাক্ত করেছে বাঙালি জাতির ইতিহাসকে।

মো. জনি মিয়া, সহকারী প্রভোস্ট, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মালেক উকিল হল, নোবিপ্রবি।

বাংলা ও বাঙালির শোকের মাস

`আগস্ট‘ বাংলা ও বাঙালির শোকের মাস। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাঙালি জাতির ইতিহাসে অন্ধকারতম দিন। গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। এই দিনে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। ঘাতকদের নৃশংসতা থেকে মুক্তি পায়নি বঙ্গবন্ধুর অন্তঃসত্ত্বা পুত্রবধূ এমনকি অবুঝ শিশু শেখ রাসেলও। জীবন নিয়ে ভাবতে ভুলে যাওয়া হতভাগা এই জাতি যখন নিপীড়ন আর নির্যাতনের নির্মম জাঁতাকলে নিষ্পেষিত, তখন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বপ্ন দেখিয়েছেন স্বাধীনতার। দীর্ঘ লড়াই সংগ্রামের মাধ্যমে বাঙালি জাতি পেল একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ । যিনি শোষণহীন, ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত এবং অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে চেয়েছিলেন। বাংলাদেশকে সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা করাই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিলো। যেখানে বাংলার মানুষের থাকবে না কোনো প্রকারের দুঃখ-কষ্ট। বঙ্গবন্ধু আমাদের মাঝে নেই কিন্তু তার আদর্শ ঠিকই রয়ে গেছে। আমাদেরকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে সততার সাথে সোনার বাংলা বিনির্মাণে কাজ করে যেতে হবে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের যে কালো দাগ বাঙালি জাতি বহন করে চলছে তা থেকে পরিত্রাণের একমাত্র উপায় মুজিবাদর্শে উজ্জীবিত হয়ে দেশ ও দেশের মানুষের উন্নয়নে কাজ করা। আগস্টের শোককে আমাদের শক্তিতে পরিণত করতে হবে। আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। আমাদেরকে নিজ নিজ জায়গা থেকে নিজের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে হবে। তাহলে বঙ্গবন্ধুর সকল স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে।

মো. মোজাম্মেল ভূইয়া, সহকারী প্রভোস্ট, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, নোবিপ্রবি।

(ঢাকাটাইমস/২০ আগস্ট/ ইএইচ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

শিক্ষা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিক্ষা এর সর্বশেষ

সাত কলেজ ভর্তি পরীক্ষা: দ্বিতীয় স্থানে সোহরাওয়ার্দী কলেজের গোলাম রাব্বি

দীর্ঘ এক যুগ পর কমিটি পেল হাবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগ

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অধ্যাপক এবং শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তার ও নির্যাতন নিন্দনীয়

শিল্প সমস্যা সমাধানে প্রযুক্তি উদ্ভাবনে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে এগিয়ে আসার আহ্বান ইউজিসির

তিন দিনব্যাপী International Conference on Physics অনুষ্ঠিত

নানা আয়োজনে সোহরাওয়ার্দী কলেজ সাংবাদিক সমিতির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন 

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আবারও উত্তেজনা, মধ্যরাতে অস্ত্রের মহড়া

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে একমাত্র ছাত্রীহলের নাম পরিবর্তন

প্রাক মুঘল আমলের ঢাকার ইতিহাস বের করার তাগিদ

নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে মোবাইল ফটোগ্রাফি প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :