শিল্প ও সমাজকর্মে অবদান রাখায় মাদার তেরেসা ইন্টারন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড পেলেন নূর আলী

বাংলাদেশের শিল্প ও সমাজকর্মে অবদান রাখায় মাদার তেরেসা ইন্টারন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হলেন ইউনিক গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট শিল্পপতি মোহা. নূর আলী।
মাদার তেরেসা ইন্টারন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড কমিটি এবং অল ইন্ডিয়া মাইনরিটি অ্যান্ড উইকার সেকশন কাউন্সিল যৌথ উদ্যোগে শনিবার দুবাইয়ের কনরাড হোটেলে এ পুরস্কার প্রদান করা হয়।
পুরস্করে ভূষিত অভিভূত নূর আলী মাদার তেরেসা ইন্টারন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড কমিটিকে ধন্যবাদ জানান। সেইসেঙ্গে তিনি মাদার তেরেসাকে স্মরণ করে তার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
মোহা. নূর আলী বলেন, ‘মর্যাদাপূর্ণ মাদার তেরেসা ইন্টারন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড পেয়ে আমিও গভীরভাবে সম্মানিতবোধ করছি। দুবাইতে এই সম্মান পেয়ে আমি রোমাঞ্চিত ও অভিভূত। আমি অত্যন্ত গর্ববোধ করছি এ জন্য যে, প্রখ্যাত এ পুরস্কারটি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শ্রী রাজীব গান্ধী, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী প্রয়াত শ্রী জ্যোতি বসু এবং শিক্ষা, সংস্কৃতি, সঙ্গীত, সমাজকর্ম, খেলাধুলা, শিল্পক্ষেত্রে বিশ্বখ্যাত অনেক সম্মানিত ব্যক্তিকে দেওয়া হয়েছে।’
‘মাদার তেরেসা বিশ্বের দরিদ্র মানুষের জন্য বাতিঘর ছিলেন। তিনি দরিদ্র ও অসহায় মানুষের কল্যাণে তার পুরো জীবন উৎসর্গ করেছেন। তিনি সব বর্ণ ও ধর্মের মানুষকে ভালোবাসতেন। মাদার তেরেসা স্বচ্ছতা, ন্যায়, সততার প্রতি বিশ্বাসী ছিলেন। মানবতার সেবার জন্য তিনি আমাদের চোখ, চিন্তাভাবনার পথ খুলে দিয়েছেন।’
মাদার তেরেসার সঙ্গে তার জীবনের একটি বিষয় মিল আছে উল্লেখ করে মোহা. নূর আলী বলেন, ‘মাদার তেরেসা ৮ বছর বয়সে তার বাবাকে হারান, আর আমি বাবাকে হারাই ৯ বছরে বয়সে।’
বিশিষ্ট এই শিল্পপতি বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৭৮ সালে আমি সমাজবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর পাস করি। তখন আমি ভাবি, আমার এমন একটি পেশা বেছে নেওয়া উচিত যেন আমি মাতৃভূমির উন্নয়নে অবদান রাখতে পারি। তখন আমি দেখতে পাই বাংলাদেশে অনেক বেকার যুবক। তাই আমি মনস্থির করেছি যে মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষের জন্য মানবসম্পদ উন্নয়ন এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির জোর দেওয়া। এরপর এখন পর্যন্ত আমি দেশে ও বিদেশে তিন লাখের বেশি মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছি। যদিও আমাদের ২০টির বেশি বিভিন্ন খাতে ব্যবসা আছে, আমি এখন শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও হসপিটালিটির ওপর গুরুত্ব দিয়েছি। আমি আশা করি, ইন্টারন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড গ্রহণকারীরা এতে অনুপ্রাণিত হবেন, মানবতার জন্য আরও জোরালোভাবে কাজ করবেন।’
মোহা. নূর আলী শুধু একজন ব্যবসায়ীই নন, পাশাপাশি তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, সমাজসেবক, সফল পিতা, স্বামী এবং শেষ পর্যন্ত একজন ক্যারিশম্যাটিক নেতা, দূরদর্শী নেতৃত্বের দ্বারা সফলতার যাত্রাকে তিনি অনেক দূর এগিয়ে নিয়েছেন। এই ব্যতিক্রমী গুণের কারণে তিনি একদম শুরু থেকেই তার বিভিন্ন ব্যবসা ও শিল্প-উদ্যোগের জন্য সঠিক লোকদের চিহ্নিত করতে পেরেছিলেন, যা পরবর্তীতে বিশাল সাফল্যের জন্ম দিয়েছে।
ইউনিক গ্রুপ বাংলাদেশের একটি বৃহৎ ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান। ইউনিক গ্রুপের রয়েছে জনশক্তি সরবরাহ, রিয়েল এস্টেট, হসপিটালিটি ব্যবস্থাপনা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, প্রশিক্ষণ ও উন্নয়ন, জ্বালানি ও শক্তি, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, কৃষি, তথ্যপ্রযুক্তিসহ আরও অনেক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান। ইউনিক গ্রুপের ব্যবসায়িক বৈচিত্র্য, ক্রমাগত উন্নয়ন, শ্রেষ্ঠত্ব ও উদ্ভাবনের জন্য পরিচিতি রয়েছে। ইউনিক গ্রুপের মূল মূল্যবোধ হলো দৃঢ়তা, উচ্চমাত্রার সততা এবং সর্বোত্তম পরিষেবা।
মোহা. নূর আলীর বাড়ি ঢাকার নবাবগঞ্জে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ১৯৭৭ সালে স্নাতক এবং ১৯৭৮ সালে কৃতিত্বের সঙ্গে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে যার গৌরবজ্জল অবদান রয়েছে। একাত্তরে মোহা. নূর আলী জীবনের মায়া ত্যাগ করে অস্ত্র হাতে পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে যুদ্ধ করেন দেশের নানা প্রান্তে। যে কোনো কাজে দেশপ্রেম এবং দেশের মানুষের কল্যাণের কথা সবার আগে চিন্তা করেন মোহা. নূর আলী।
(ঢাকাটাইমস/২৭আগস্ট/ডিএম)

মন্তব্য করুন