পিতৃত্বকালীন ছুটি চালু করল রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
 | প্রকাশিত : ০২ অক্টোবর ২০২৩, ২১:৪৬

মাতৃত্বকালীন ছুটি থাকলেও বাবারা সেই সুযোগ থেকে বরাবরই ছিলেন বঞ্চিত। তবে বাবাদের নিয়ে ভেবেছে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে প্রতিষ্ঠিত রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়টি দেশে প্রথমবারের মতো পিতৃত্বকালীন ছুটি চালু করেছে। ফলে একজন শিক্ষক ১৫ দিনের পিতৃত্বকালীন ছুটি পাবেন।

সোমবার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের জনেসংযোগ কর্মকর্তা মো. শাহ আলী।

এ ছুটির বিধিমালা প্রণয়ন করা হয় রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৪তম সিন্ডিকেট সভায়। উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. শাহ্ আজমের সভাপতিত্বে সিন্ডিকেট সভায় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার ড. ফিরোজ আহমদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবু মো. দেলোয়ার হোসেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব জহুরুল ইসলাম, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব জনাব সুব্রত ভৌমিক, লেজিসলেটিভ বিভাগের যুগ্ম-সচিব মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান নূর, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান শারমিন সুলতানা এবং রেজিস্ট্রার মো. সোহরাব আলী।

মাতৃত্বকালীন ছুটি চারমাস থেকে ছয় মাস করার পর থেকেই পিতৃত্বকালীন ছুটি নিয়ে বিভিন্ন মহলে চলেছে আলোচনা। দীর্ঘ প্রত্যাশার অবসান ঘটিয়ে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. শাহ্ আজমের মাধ্যমে নতুন এক অধ্যায়ে পা দিয়েছে বাংলাদেশ।

এ বিষয়ে তিনি ঢাকা টাইমসকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মী ব্যবস্থাপনার বিষয়টি আমাকে ভাবিয়েছে। কারণ উদ্বিগ্ন ও চিন্তিত কর্মী দিয়ে ভালো কাজ প্রত্যাশা করা যায় না। আমি দেখেছি যখন কারও স্ত্রী সন্তানসম্ভাবা থাকে তখন সে ভীষণ উদ্বিগ্ন থাকে। বিশেষ করে সংকটকালীন অর্থাৎ ডেলিভারির সময়টা বা এর পরে দুই সপ্তাহ এই সময়টায় সে অফিস কিংবা ঘর কোথাও পূর্ণ মনোযোগ দিতে পারে না। ফলে এই অস্থিরতা কাজের উপর প্রভাব ফেলে। এছাড়া শিশুকে বিশ্বের সঙ্গে পরিচিত করানোর দায়িত্বটা একা মায়ের নয়। এখানে বাবারও বড় ভূমিকা রয়েছে। কিন্তু চাকরির নিয়মে বাধা পড়ে বাবারা সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়ে পড়েন। তাই আমি মনে করেছি তাদের মেডিকেল সাপোর্ট এবং নার্সিং সাপোর্টগুলো যেন নির্বিঘ্নে করতে পারে সেজন্য আমাদের তরফ থেকে সহযোগিতা করা প্রয়োজন এবং এটা একটা ন্যায্য সহায়তা বলে মনে করি।

পিতৃত্বকালীন ছুটি কাটিয়ে কাজে ফিরলে বাবারা কাজে আরও বেশি মনোযোগী হতে পারবেন বলেও মনে করেন তিনি। এছাড়া এই বিষয়টি দেশের মানুষ কীভাবে গ্রহণ করে সেটি নিয়ে উপাচার্য সংশয়ে ছিলেন। পরে ইতিবাচক সাড়া পেয়ে সংশয় কেটে গেছে। এই বিষয়টি দীর্ঘদিন ধরে বাস্তবায়নের ইচ্ছা ছিলো উপাচার্যের। তিনি বলেন, আমার এক সন্তান বিদেশে জন্মগ্রহণ করেছে। তখন আমার পিএইচডি চলছে। সেই সময় আমি পিতৃত্বকালীন ছুটি পেয়েছিলাম। সেই ছুটি আমার জন্য বেশ উপকারে এসেছিলো। তখন থেকেই আমার মনে হয়েছে আমি যদি একাডেমিক কার্যক্রমের পাশাপাশি এই সুবিধা পেয়েছিলাম তাহলে এখানেও তো নতুন বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে নবীন কর্মী রয়েছে। তাহলে তাদেরও এই সুযোগ দিয়ে দেখি। যেহেতু দেশে প্রথম। তাই কিছুটা সংশয়ে ছিলাম। এখন সেই শঙ্কা কেটে গেছে।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাবাদের জন্য ভিন্ন ভিন্ন মেয়াদে পিতৃত্বকালীন ছুটির ব্যবস্থা রয়েছে। রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় তাদের শিক্ষক এবং কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা যারা নব বিবাহিত তারা সর্বোচ্চ দুইবার পিতৃত্বকালীন ছুটি নেওয়ার সুযোগ পাবেন।

সন্তানের মানসিক বিকাশে পিতৃত্বকালীন ছুটি বেশ সহায়ক হবে বলে মনে করেন মনোবিদ মেখলা সরকার।

তিনি ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘জন্মের পর শিশু প্রথম দিন থেকেই মায়ের পাশাপাশি বাবার স্পর্শে যুক্ত থাকতে পারলে একটা বন্ধন তৈরি হয়। এই বন্ধনের কারণে শিশুর মানসিকভাবে পরিপক্ক হয়। এছাড়া সন্তানের সঙ্গে বাবাদের দূরত্ব না থাকায় সে নিরাপদবোধ করে যা সারাজীবনের জন্য বেশ দরকার। আর এটা সম্ভব হয় প্রথম ১৫ দিনের বাবার অংশগ্রহণের মাধ্যমে।

(ঢাকাটাইমস/০২অক্টোবর/টিএ/ইএস)

সংবাদটি শেয়ার করুন

শিক্ষা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :