শরতের শুভ্রতায় সেজেছে কাশফুল

মো. ইমরান মাহমুদ, জামালপুর
 | প্রকাশিত : ০৩ অক্টোবর ২০২৩, ১৩:০৭
মেলান্দহ উপজেলার কাপাশহাটিয়া মুক্তি সংগ্রাম জাদুঘর পুকুর পাড় ও ঝিনাই নদীর পাড়ে কাশফুলের ছবি

নীল আকাশে চলছে সাদা-কালো মেঘের লুকোচুরি। ধরণীর বুকে কাশফুল দিচ্ছে উঁকি ঝুকি। কাশফুলের শুভ্রতায় আকাশের সাদা ঘন মেঘ যেন পেঁজা তুলোর মতো নেমে আসে ধরণীতে, কাশফুল হয়ে!

বর্ষা অনেকের প্রিয় ঋতু হলেও নৈসর্গিক সৌন্দর্যের দিক থেকে শরৎ অনন্য। যখন শিশিরের শব্দের মতো টুপটাপ শিউলি ঝরে, তখন অনুভবে শরৎ আসে। বর্ষার বৃষ্টিমুখর অনুজ্জ্বল দিনের পর শরতের মেঘের মতো আমাদের মনও যেন হালকা হয়ে যায়। শরতের আকাশ, নদী, ফুল—সবই শান্ত, মায়াময়। ভাদ্র-আশ্বিনের এই শুভ্র রূপ পবিত্রতার প্রতীক। বিলের শাপলা, নদীতীরের কাশ ফুল, আঙিনার শিউলি সবই কোমল, পবিত্র।

শিশিরভেজা শিউলি, বাতাসে মৃদু দোল খাওয়া কাশবনের মঞ্জরি, পদ্ম-শাপলা-শালুকে আচ্ছন্ন জলাভূমি শরতের চিরকালীন রূপ। কাশবনে দল বেঁধে আসে চড়ুই পাখিরা। এমনি দৃশ্য দেখা যায় জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার ঝাউগড়া ইউনিয়নের কাপাশহাটিয়া মুক্তি সংগ্রাম জাদুঘর পুকুর পাড়ে ও ঝিনাই নদীর পাড়ে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, কাশ ফুলের মাঠে ছেলে-মেয়েরা মেতে উঠেছে আনন্দ উচ্ছ্বাসে। নির্মল বাতাসে সাদা কাশফুলের মন মাতানো দোল খাওয়া শীষ দেখতে তরুণ-তরুণীসহ বিভিন্ন বয়সী মানুষ বিকালে ঘুরে বেড়াচ্ছেন কাশবনে। কাশ ফুলের শুভ্রতার সৌন্দর্য উপভোগ করার পাশাপাশি ভ্রমণ ও প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যের সাক্ষী হতে নিজেদের ধরে রাখছেন ছবির ফ্রেমে।

কাশফুলে ঘুরতে আসা দর্শনার্থী শারমিন আক্তার বলেন, গোধূলির সময় মাঠজুড়ে সবুজের সমারোহ ও সাদা কাশফুল যখন বাতাসে দুলতে থাকে তখন মনটা আনন্দে ভরে যায়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নূর এ জান্নাত বলেন, শরৎ সেজেছে কাশফুলে থরে-বিথরে বালুচরে! সাদা মেঘের শতদল উড়ছে অপরূপা নীলাম্বরে! ষড়ঋতুর দেশ বাংলাদেশ। দুইমাস পর পরই আমাদের দেশে ঋতূর পরিবর্তন হয়। এই ঋতূ পরিবর্তনে এখন বইছে শরৎকাল। নাগরিক কোলাহল আর যাপিত জীবনের নানা ব্যস্ততার মধ্যে চুপিচুপি আসে শরৎ। আর প্রকৃতিতে যখন শরৎকাল আসে তখন কাশফুলই জানিয়ে দেয় শরতের আগমনী বার্তা। শরতের বিকালে নীল আকাশের নিচে দোলা খায় শুভ্র কাশফুল।

কাশফুলের ইংরেজি নাম Kans Grass ও উদ্ভিদতাত্ত্বিক বৈজ্ঞানিক নাম Saccharum Sportaneum। কাশ ছন গোত্রীয় এক ধরনের ঘাস। এ উদ্ভিদটি সাধারণত ৩ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। গাছটির চিরল পাতার দুই পাশ বেশ ধারালো। নদীর ধার, জলাভূমি, চরাঞ্চল, শুকনো এলাকা, পাহাড় কিংবা গ্রামের উঁচু জায়গায় কাশের ঝাড় বেড়ে ওঠে। তবে নদীর তীরেই কাশফুল বেশি জন্মাতে দেখা যায়। শরতের এ কাশফুল শুধু প্রকৃতিপ্রেমীদের চাহিদাই মেটায় না। এ ফুলের শুকনো গাছ জ্বালানি, ঘরের বেড়া ও ঝাড়– তৈরির উপকরণ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এছাড়াও গ্রাম্য কবিরাজরা কাশফুল ও গাছের মূল ঔষধি কাজেও ব্যবহার করে আসছে যুগ যুগ ধরে।

(ঢাকা টাইমস/০৩অক্টোবর/এসএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :