হরিরামপুরে আহ্বায়ক কমিটি দিয়েই যুবলীগের অর্ধযুগ পার

​সায়েম খান, হরিরামপুর (মানিকগঞ্জ)
 | প্রকাশিত : ০৯ অক্টোবর ২০২৩, ১৩:৫৩

মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে ছয় বছর পূর্বে যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দিয়েছিল কেন্দ্রীয় যুবলীগ। একজন আহ্বায়ক, দুইজন যুগ্ম আহ্বায়ক এবং ১৮ জন সদস্যের সমন্বয়ে গঠিত হয়েছিল কমিটি। এই কমিটিকে তিন মাসের মধ্যে (৯০ দিন) উপজেলা শাখার সম্মেলন করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু ছয় বছর পার হলেও সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়নি। গঠন করা হয়নি পূর্ণাঙ্গ কমিটি। ফলে, উপজেলা কমিটিতে পদপ্রত্যাশী এবং ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মাঝে দেখা দিয়েছে হতাশা ও চাপা ক্ষোভ।

যুবলীগের নেতাকর্মীরা জানান, ২০১৭ সালের ৩০ জুলাই আমিনুর রহমান চৌধুরী মিল্টনকে আহ্বায়ক, মো. ফরিদ মোল্লা ও মো. কামাল হোসেনকে যুগ্ম আহ্বায়ক করে ২১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় যুবলীগ। কমিটির অনুমোদনপত্রে ৯০ দিনের মধ্যে সকল ইউনিয়নের সম্মেলন শেষ করে উপজেলা শাখার সম্মেলন করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু ছয় বছর দুই মাস পার হলেও এখনো সকল ইউনিয়ন কমিটিই শেষ হয়নি।

উপজেলা কমিটিতে পদপ্রত্যাশী কয়েকজন বলেন, দীর্ঘদিনেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি না হওয়ায় অনেক নেতাকর্মীই নিষ্ক্রীয় হয়ে পড়েছেন। দলীয় ও জাতীয় বিভিন্ন কর্মসূচিতে নেতাকর্মীরা অংশ নিতে আগ্রহ হারাচ্ছেন। তিন মাস পরেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। দ্রুত পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন না হলে নির্বাচনে অনেক নেতাকর্মীর দলের পক্ষে প্রচার প্রচারণায় অংশ না নেওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৯ সালের অক্টোবরে উপজেলা শাখার সম্মেলনের উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা হয়নি। বর্তমানে উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের মধ্যে ৯টি ইউনিয়নে যুবলীগের কমিটি রয়েছে। যার মধ্যে তিনটি ইউনিয়ন পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করেছে। রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নে শুধু সাধারণ সম্পাদককে দিয়েই কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। গত ১১ সেপ্টেম্বর আংশিক ইউনিয়ন কমিটিকে পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ করতে নির্দেশনা দেয় উপজেলা কমিটি। তবে, এখনো সব ইউনিয়ন কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতে পারেনি।

এ বিষয়ে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান এবং যুবলীগের পদপ্রত্যাশী মো. আজিম খান বলেন, তিন মাসের কমিটিতে ছয় বছর পার হয়ে গেছে। পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে আমাদের নেতৃবৃন্দেরই একটা অনিহা দেখা গেছে। যার ফলে ছয় বছরে পা দিয়েছে আহ্বায়ক কমিটি। দলের স্বার্থে দ্রুত পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা উচিত। উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং গালা ইউনিয়ন যুবলীগের সদস্য রাজিবুল হাসান রাজিব বলেন, দীর্ঘদিনেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি না হওয়ায় দল ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সময়মতো কমিটি হলে আমরা নতুন নতুন নেতৃত্ব পেতাম। হরিরামপুরে যুবলীগ আরও বেগবান ও গতিশীল হতো। সামনে জাতীয় নির্বাচন। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় ও জেলা যুবলীগ নেতৃবৃন্দ এবং আমাদের এমপি মহোদয়ের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে অনুরোধ জানাবো দ্রুত সম্মেলনের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ কমিটি দিতে। এতে যুবলীগ বেগবান হবে, শেখ হাসিনার হাত শক্তিশালী হওয়ার পাশাপাশি আগামী নির্বাচনে নৌকার ভোটও বাড়বে।

উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক আমিনুর রহমান চৌধুরী মিল্টন বলেন, আমাদের সকল ইউনিয়নেরই পূর্ণাঙ্গ কমিটি এখনো গঠন হয়নি। সম্মেলনের আগে অনেক কাজ আছে। সেসব কাজ শেষ করে তারপর সম্মেলন দিতে হয়। জাতীয় নির্বাচনের আর মাত্র তিন মাস সময় রয়েছে। এখন কি নির্বাচনই করবো, নাকি সম্মেলন করবো।

মানিকগঞ্জ জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক আব্দুর রাজ্জাক রাজা বলেন, সামনে জাতীয় নির্বাচন। নির্বাচনের আগে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করা মনে হয় সম্ভব হবে না। তবে, দ্রুত পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনে আমাদের চেষ্টা থাকবে।

যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক জহির উদ্দিন খসরু বলেন, সম্মেলনের জন্য কেন্দ্র থেকে অনুমতি নিতে হবে। অনুমতির জন্য জেলা ও উপজেলা কমিটিকে কাউন্সিলর তালিকা, কমিটির তালিকা, সাংগঠনিক রিপোর্ট-এগুলো কেন্দ্রে পাঠাতে হয়। এগুলো তো তাদেরকে করতে হবে। এগুলো যদি তারা পাঠায় তাহলে আমরা সম্মেলনের অনুমতি দিয়ে দেবো।

ঢাকাটাইমস/০৯অক্টোবর/ এআর

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :