মিডল অর্ডারের ব্যর্থতায় ২৫৬ রানে থামল বাংলাদেশ

ক্রীড়া ডেস্ক, ঢাকা টাইমস
| আপডেট : ১৯ অক্টোবর ২০২৩, ১৯:৫২ | প্রকাশিত : ১৯ অক্টোবর ২০২৩, ১৮:৩১
তিনটি চার ও তিনটি ছয়ের সাহায্যে ৩৬ বলে ৪৬ রান করেন মাহমুদুল্লাহ

উড়ন্ত শুরুর পরেও মিডল অর্ডারের ব্যর্থতায় মাত্র রানেই থামল বাংলাদেশের ইনিংস। টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে দুই ওপেনারের ঝড়ো ইনিংসে মাত্র ১৭ ওভারে দলীয় শতক তুলে নেওয়া বাংলাদেশের ইনিংস থেমেছে ২৫৬ রানে। জয়ের জন্য ভারতের দরকার ২৫৭ রান।

বিশ্বকাপে নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে ওপেনাররা দারুণ শুরু করেন। প্রথমে রান না পেলেও উইকেট ধরে রাখেন। এরপর খোলস থেকে বেরিয়ে এসে ভারতীয় বোলারদের ওপর চড়াও হন তারা। দুই ওপেনারই আজ ব্যক্তিগত অর্ধশতক তুলে নেন। আজ বাংলাদেশর ওপেনিং জুটি থেকে আসে ৯৩ রান।

ওপেনাররা ভালো শুরু এনে দিলেও মিডল অর্ডারের ব্যর্থতায় নিজেদের ইনিংস বেশদূর নিয়ে যেতে পারেনি বাংলাদেশ। মিডল অর্ডারে শান্ত, মিরাজ, হৃদয় সবাই ছিলেন ব্যর্থ। একমাত্র মুশফিক আর মাহমুদউল্লাহ আজ ছিলেন ব্যতিক্রম। মুশফিকের ৩৮ আর শেষের দিকে মাহামুদউল্লাহর ৩৬ বলে ৪৬ রানে ভর করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ২৫৬ রান তুলে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের হয়ে আজও ওপেনিংয়ে নামেন লিটন দাস ও তানজিদ হাসান তামিম। শুরু থেকে এই দুই ওপেনার দেখেশুনে খেলতে থাকেন। শুরুর দিকে রান নিতে না পারলেও তাড়াহুড়ো না করে উইকেট ধরে রাখেন এই দুই ওপেনার।

দেখেশুনে খেলতে থাকা দুই ওপেনার প্রথম পাওয়ার প্লের শেষের দিকে খোলস থেকে বেরিয়ে আসেন। এরপরই ভারতের বোলারদের ওপর চড়াও হন এই দুই ওপেনার।

এই জুটিতে ভর করে বাংলাদেশ দলীয় অর্ধশতক পূর্ণ করে ৯ ওভার ২ বলে। আর প্রথম পাওয়ার প্লেতে বিনা উইকেটে তুলে নেয় ৬৩ রান।

বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে আজ ওপেনিংয়ে সর্বোচ্চ রানের জুটি গড়েছেন তামিম ও লিটন। বিশ্বকাপ ছাড়া দ্বিপাক্ষিক সিরিজে ভারতের বিপক্ষে আগের সর্বোচ্চ ছিল ২০১১ সালে মিরপুরে তামিম ইকবাল ও ইমরুল কায়েসের ৫৬ রান। তবে বিশ্বকাপে ওপেনিং জুটিতে সর্বোচ্চ রান ছিল ১৯৯৯ বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে মেহরাব হোসেন ও শাহরিয়ার হোসেনের ৬৯ রান। এবার সেটি ছাড়িয়ে গেলেন তারা।

বাংলাদেশের বিপক্ষে আজ বিরাট কোহলিও বল করেন

ভারতের বিপক্ষে আজ নিজের ব্যক্তিগত অর্ধশতক তুলে নিয়েছেন তানজিদ হাসান তামিম। ৪১ বলে ৫০ করেন তিনি। যার মধ্যে রয়েছে ৫টি চারের মার ও ৩টি ছয়ের মার।

অর্ধশতক তুলে নেওয়ার পর নিজের ইনিংসকে আর বেশিদূর নিয়ে যেতে পারলেন না তানজিদ তামিম। দলীয় ৯৩ রানে কুলদ্বীপ যাদবের শিকার হয়ে ফিরে যান তিনি।

৪৩ বলে ৫১ রান করা তামিম কুলদ্বীপ যাদবের বলে এলবিডব্লিউয়ের শিকার হয়ে ফিরে গেলেন সাজঘরে। তার বিদায়ে ৯৩ রানে ভাঙে বাংলাদেশের ওপেনিং জুটি।

তানজিদ তামিম ফিরে গেলেও শান্তকে নিয়ে লড়তে থাকেন লিটন। কিন্তু দলীয় ১১০ রানে রবীন্দ্র জাদেজার বলে এলবিডব্লিউয়ের শিকার হয়ে শান্ত ফিরে গেলে ভেঙে যায় এই জুটি। ১৭ বলে ৮ রান করে ফেরেন তিনি।

এর পরেই নিজের ব্যক্তিগত অর্ধশতক তুলে নেন লিটন দাস। ৬২ বলে ৫০ রান করেন তিনি। যার মধ্যে রয়েছে ৫টি চারের মার।

তামিম, শান্তর পর দলীয় ১২৯ রানে ফিরে যান মেহেদেী হাসান মিরাজও। মোহাম্মদ সিরাজের বলে ১৩ বরে ৩ রান করে ফিরে যান তিনি।

মিরাজের পর সাজঘরে ফিরে যান অর্ধশতক তুলে নেওয়া লিটন দাস। রবীন্দ্র জাদেজাকে তুলে মারতে গিয়ে শুবমান গিলের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফিরে যান। আউট হওয়ার আগে করেন ৮২ বলে ৬৬ রান।

লিটনের বিদায়ের পর তাওহীদ হৃদয়ের সঙ্গে জুটি গড়নে মুশফিকুর রহীম। তাওহীদকে নিয়ে তিনি দলের বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করেন। কিন্তু তাওহীদের ব্যাট হাসছিলো না। রান পাচ্ছিলেন না তিনি। রানের জন্য তাওহীদ হৃদয় দলীয় ১৭৯ রানে ফিরে যান প্যাভিলিয়নে।

রান না পাওয়া হৃদয় শার্দূল ঠাকুরকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে শুবমান গিলের হাতে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন। আউট হওয়ার আগে করেন ৩৫ বলে ১৬ রান।

১৭৯ রান উইকেট পড়ে যাওয়ার পর ‘মিস্টার ডিপেন্ডেবল’ খ্যাত মুশফিক জুটি বাঁধেন মাহামুদউল্লাহর সঙ্গে। কিন্তু এই জুটিও বেশি সময় টিকতে পারেনি।

দলীয় ২০১ রানে জাসপ্রিত বুমরার বলে রবীন্দ্র জাদেজার হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফিরে যান সাজঘরে। আউট হওয়ার আগে করেন ৪৬ বলে ৩৮ রান।

এরআগে ভারতের বিপক্ষে খেলতে নেমে দারুণ এক রেকর্ড গড়েছেন মুশফিক। বাংলাদেশের দ্বিতীয় ব্যাটার হিসেবে বিশ্বকাপের হাজার রানের ক্লাবে প্রবেশ করেছেন। তার আগে এই মাইলফলক পেরিয়েছেন টাইগার অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। আজকের আগে মেগা আসরটিতে এক হাজার রান পূর্ণ করতে মুশফিকের প্রয়োজন ছিল ৪ রান।

তবে এমন আনন্দের দিনেও নিজেরে ইনিংসটাকে বেশিদূর নিয়ে যেতে পারলেন না। ৩৮ রানেই ফিরে গেলেন আজ।

মুশফিকের বিদায়ের পর দলের হাল ধরেন ‘সাইলেন্ট কিলার’ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। নাসুমকে নিয়ে একাই লড়তে থাকেন। কিন্তু দলীয় ২৩৩ রানে নাসুমের বিদায়ে এই জুটিওে ভেঙে যায়। ১৮ বলে ১৪ রান করে মোহাম্মদ সিরাজের শিকার হয়ে ফিরে যান তিনি।

শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত নাসুমের শেষ বলের ছক্কায় ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৫৬ রান করতে সক্ষম হয় বাংলাদেশ। মাহমুদউল্লাহ ৪৬ রানে ফিরে যান সাজঘরে।

ভারতের হয়ে মোহাম্মদ সিরাজ ও রবীন্দ্র জাদেজা ২টি, জাসপ্রিত বুমরাহ, শার্দূল ঠাকুর, কুলদ্বীপ যাদব একটি করে উইকেট নেন।

বাংলাদেশ একাদশ: লিটন দাস, তানজিদ হাসান, নাজমুল হোসেন (অধিনায়ক), তাওহিদ হৃদয়, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ, মেহেদী হাসান মিরাজ, নাসুম আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান, শরীফুল ইসলাম ও হাসান মাহমুদ।

ভারত একাদশ: রোহিত শর্মা, শুভমান গিল, বিরাট কোহলি, শ্রেয়াস আইয়ার, লোকেশ রাহুল, রবীন্দ্র জাদেজা, হার্দিক পান্ডিয়া, কুলদীপ যাদব, শার্দূল ঠাকুর, মোহাম্মদ সিরাজ, জাসপ্রিত বুমরাহ।

(ঢাকাটাইমস/১৯অক্টোবর/এনডব্লিউবি/ইএস)

সংবাদটি শেয়ার করুন

খেলাধুলা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :