টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ
নেপালকে হারিয়ে দেড় যুগ পর সুপার এইটে বাংলাদেশ

ঈদের আনন্দ আরও বাড়িয়ে দিলো বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। চলতি বিশ্বকাপে গ্রপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে নেপালকে ২১ রানে হারিয়ে ১৭ বছর পর আবারও বিশ্বকাপের সুপার এইটে জায়গা করে নিলো টাইগাররা।
সোমবার (১৭ জুন) সেন্ট ভিনসেন্টের আর্নস ভ্যালে স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের দেওয়া ১০৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশি বোলারদের বোলিং তোপে ২৬ রানেই ৪ উইকেট হারিয়ে বসে নেপাল। এরপরেই জুটি গড়েন দীপেন্দ্র সিং ও কুশল মাল্লা। ক্রমেই ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠেছিল এই জুটি। অবশেষে এই জুটিকে থামান মুস্তাফিজ। ৫২ রানে এই জুটি ভেঙে গেলে আর এগোতে পারেনি নেপাল। শেষ পর্যন্ত ১৯ ওভার ২ বলে ৮৫ রানেই থামে নেপালের ইনিংস। আর বাংলাদেশ তুলে নেয় ২১ রানের জয়। এই জয়ে ১৭ বছর পর বিশ্বকাপের সুপার এইটে জায়গা করে নিলো বাংলাদেশ।
সহজ লক্ষ্য তাড়া করর ম্যাচে নেপালের হয়ে ওপেনিংয়ে নামেন কুশল ভুর্টেল ও আসিফ শেখ। তবে এই জুটিকে বেশিদূর এগোতে দেননি তানজিম হাসান সাকিব। তানজিম সাকিবের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরে যান কুশল ভুর্টেল। তার বিদায়ে ৯ রানেই প্রথম উইকেট হারায় ন্পোল।
কুশল ভুর্টেলের বিদায়ের পরে এক বল পরেই অনিল সাহকে ফেরান তানজিম তামিম। তানজিম তামিমের বলে নাজমুল হোসেনের শান্তর হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফিরে যোন অনিল সাহ। তার বিদায়ে ৯ রানেই ২ উইকেট হারালো নেপাল।
৯ রানে ২ উইকেট হারানোর পর জুটি গড়েন আসিফ শেখ ও রোহিত পাউডেল। এই জুটিতে ভর করে ঘুরে দাঁড়নোর চেষ্টা করে নেপাল। তবে এই জুটিও ভাঙেন তানজিম সাকিব। তানজিম সাকিবের বলে রিশাদ হোসেনের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে গেলেন রোহিত পাউডেল। তার বিদায়ে ২০ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে নেপাল।
দলের বিপদ আরও বাড়িয়ে সাজঘরে ফিরে গেলেন আসিফ শেখ। তানজিম সাকিবের পর এবার নেপাল শিবিরে আঘাত হানেন মুস্তাফিজ। মুস্তাফিজের বলে শর্ট কাভারে সাকিব আল হাসানের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফিরে গেলেন আসিফ। তার বিদায়ে ২৪ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বিপর্যযে নেপাল।
মুস্তাফিজের পর নেপাল শিবিরে আবারও আঘাত হানেন তানজিম সাকিব। তানজিম সাকিবের বলে রিশাদ হোসেনের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান সুন্দীপ জোরা। সুন্দীপ জোরার বিদায়ে ২৬ রানেই ৫ উইকেট হারিয়ে বসে নেপাল।
২৬ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর জুটি গড়েন দীপেন্দ্র সিং ও কুশল মাল্লা। ক্রমেই ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠেছিল এই জুটি। অবশেষে এই জুটিকে থামালেন মুস্তাফিজ। মুস্তাফিজের বলে নাজমুল শান্তর হাতে ক্যাচ তুলে দিযে সাজঘরে ফিরে গেলেন ৪০ বলে ২৭ রান করা কুশল মাল্লা। তার বিদায়ে ভাঙল ৫২ রানের জুটি।
মুস্তাফিজের পর নেপাল শিবিরে আঘাত হানেন তাসকিন আহমেদ। তাসকিনের বলে তাওহীদ হৃদয়ের হাতে ক্যাচ তুলে দিযে সাজঘরে ফিরে যান গুলসান ঝা। তার বিদায়ে ৮৫ রানে ৭ উইকেট হারায় নেপাল।
তখনও টাইগারদের গলার কাঁটা হয়ে টিকে ছিলেন দিপেন্দ্র সিং। গত এপ্রিলে কাতারের বিপক্ষে এক ওভারে ৬টি ছয় হাঁকিছিলেন তিনি। দিপেন্দ্রকে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে স্বস্তি এনে দেন মুস্তাফিজুর রহমান। ৩১ বলে ২৫ রান করে উইকেটের পেছনে লিটনকে ক্যাচ দেন দিপেন্দ্র। সোমপাল কামিও একইভাবে সাকিবকে উইকেট দেন।
শেষ পর্যন্ত ১৯ ওভার ২ বলে ৮৫ রানেই থামে নেপালের ইনিংস। আর বাংলাদেশ তুলে নেয় ২১ রানের জয়। এই জয়ে ১৭ বছর পর বিশ্বকাপের সুপার এইটে জায়গা করে নিলো বাংলাদেশ। বাংলাদেশের হয়ে তানজিম হাসান সাকিব ৪ টি, মুস্তাফিজ ৩ টি, সাকিব আল হাসান ২ টি ও তাসকিন আহমেদ ১ টি করে উইকেট নেন।
এর আগে, সোমবার (১৭ জুন) সেন্ট ভিনসেন্টের আর্নস ভ্যালে স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের বিপক্ষে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় নেপাল। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে আবারও ব্যর্থ বাংলাদেশের ব্যাটাররা। নেপালের বোলিং তোপে তাসের ঘরের মতো ভেঙে গেছে বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইন আপ। ব্যাটিংয়ে নেমে মাত্র ৩০ রানেই ৪ উইকেট হারিয়ে বসে টাইগাররা। পঞ্চম উইকেটে জুটি গড়েন দুই অভিজ্ঞ ব্যাটার সাকিব আল হাসান ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তবে দলীয় ৫২ রানে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের বিদায়ে ২২ রানেই ভেঙে যায় এই জুটি। এই জুটি ভাঙার পর আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি নাজমুল শান্তর দল। দশম উইকেটে তাসকিন-মুস্তাফিজের ১৪ বলে ১৮ রানে ভর করে ১৯ ওভার ৩ বলেই সব উইকেট হারিয়ে ১০৬ রান তুলতে সক্ষম হয়েছে বাংলাদেশ।
(ঢাকাটাইমস/১৭ জুন/এনবিডব্লিউ)

মন্তব্য করুন