দায়সারা সংলাপ নির্বাচন কমিশনের

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
| আপডেট : ০৪ নভেম্বর ২০২৩, ২৩:৫৪ | প্রকাশিত : ০৪ নভেম্বর ২০২৩, ২৩:৫৩

*আওয়ামী লীগ বিএনপিসহ রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে চলমান সংকট নিরসনে উদ্যোগ নেবে না ইসি, রাজনৈতিক দলগুলোকেই নিজেদের উদ্যোগে আলোচনা করে নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করে দিতে বলেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। বলেছেন, সংকট নিরসনের সামর্থ্য বা ম্যান্ডেট কোনোটাই আমাদের নেই।

* বিএনপিকে ভোটে আসার আহ্বান জানালেও লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির দায়িত্ব নিচ্ছে না কমিশন

বিএনপি ও সমমনা কয়েকটি দল ছাড়াই অনুষ্ঠিত হলো নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সংলাপ। দেশের নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোকে চিঠি দিয়ে আমন্ত্রণ জানিয়ে শনিবার এ সংলাপে বসে ইসি। এতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও তাদের মিত্র দলগুলো অংশ নেয়।

সংলাপ শেষে বিএনপিকে ভোটে আসার আহ্বান জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, আপনাদের অংশগ্রহণ প্রত্যাশা করছি। কেউ পছন্দ করুক বা না করুক। আপনারা আসুন।

সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ‘স্পেস ও টাইম’ সীমিত উল্লেখ করে সিইসি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর বিবদমান সংকট নিরসনে নির্বাচন কমিশনের কোনো ম্যান্ডেট নেই। দলগুলোকেই নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সংকটের সমাধান করে অনুকূল পরিবেশ তৈরি করে দিতে হবে।

শনিবার বিকালে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতির অগ্রগতি জানানোসহ সার্বিক বিষয়ে আলোচনার জন্য নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আয়োজিত আলোচনা সভা শেষে এ কথা বলেন সিইসি।

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন হবে। নিবন্ধিত ৪৪টি দলের মধ্যে ২৬টির মতামত খুবই ইতিবাচক। নির্বাচনের পরিবেশটা অনুকূল নয়, কিছু কিছু দল এখনো অংশ নিতে পারছে না। আমরা সেটা স্বীকার করেছি।

সিইসি বলেন, আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে এ সভার আয়োজন করা হয়েছে। ২৬টি দল আলোচনায় অংশ নিয়েছে। আলোচনা যথেষ্ট ইতিবাচক ছিল।

তিনি বলেন, ‘পরিবেশ নিয়ে কেউ কেউ বলেছেনÍ অধিকাংশই আমাদের অবস্থানটা বুঝেছেন। নির্বাচনের পরিবেশটা অনুকূল নয়। কিছু কিছু দল এখনো অংশ নিতে পারছে না। আমরা সেটা স্বীকার করেছি।’

পরিবেশ অনুকূল-প্রতিকূল হওয়াটা আপেক্ষিক মন্তব্য করে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘আর রাজনৈতিক যে সংকটগুলো আছে আমরা বলেছি সেগুলো সম্পর্কে আমাদের প্রত্যাশা সবসময় ইতিবাচক। কিন্তু সেই সংকট নিরসন করার সামর্থ্যটা আমাদের নেই বা আমাদের সে ম্যান্ডেটও নেই। আমরাও বলেছি- আপনারাও নিজেদের মধ্যে চেষ্টা করতে পারতেন।’ দলগুলোকে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সমস্যা নিরসনের দায়িত্ব নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

‘আমাদের নির্বাচন বিষয়ে আমাদের রাজনীতিতে বিদেশিরা এসে অনেক পরামর্শ দিচ্ছেন। অথচ আপনারা দিতে পারছেন না। রাজনৈতিক নেতা হিসেবে আপনারা এ দায়িত্বটা নিতে পারতেন। চেষ্টা করতে পারতেন নিজেদের মধ্যে সংলাপ করে একটা অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করার।

ইসির বাধ্যবাধকতার কথা স্মরণ করিয়ে দলগুলোর উদ্দেশ্যে সিইসি বলেন, ‘আমরা স্পষ্টভাবে বলেছি-আমাদের স্পেস এবং টাইম সীমিত। আমরা কিন্তু অনেক বেশি স্পেস নিয়ে কাজ করতে পারি না। আমাদের জন্য সময়সীমা সংবিধানে নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে আমাদের নির্বাচন করতে হবে।’

দলগুলোও তা বুঝতে পেরেছে মনে করে সিইসি বলেন, ‘আমাদের পাশেও খুব বেশি স্পেস নেই, সামনেও খুব বেশি স্পেস নেই। পেছনেও খুব বেশি স্পেস নেই। আশা করি, আমাদের বক্তব্য তারা অনুধাবন করতে পেরেছেন। তাদের বক্তব্য হৃদয়ঙ্গম করতে পেরেছি।’

সব দলের মতো বিএনপি ও অন্য দলগুলোকেও ভোটে আসার প্রত্যাশার কথা জানিয়ে সিইসি বলেন, ‘আমাদের অবস্থান থেকে সবসময় বলে এসেছি- আমরা বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দলকে নির্বাচন চাই। কেউ পছন্দ করুক বা না করুক।’

আন্দোলনে থাকা দলটির প্রতি শুভকামনা জানিয়ে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘আমরা আমাদের নির্বাচন করবো। তাদের প্রতি আমাদের উদাত্ত আহ্বান থাকেবে- আপনারা আসুন। কীভাবে আসবে, সে কোর্সটা আমরা চার্ট করে দিতে পারবো না। আপনারা আসুন, আমাদের শুভকামনা থাকবে। অংশগ্রহণ করে সফল হোক, সে শুভকামনা থাকবে।’

দলগুলো ভোটে অংশ নিয়ে সক্রিয় ভূমিকা নেবে আশা করে তিনি বলেন, ‘আমরা মতবিনিময় করেছি, যাতে আগামী নির্বাচন সবার অংশগ্রহণে অবাধ, নিরপেক্ষ হয়। আমি এককভাবে সব করে দেবো তা নয়, তাদেরও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। আশাকরি, সবাই উজ্জীবিত হয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহী হবেন।

পোলিং এজেন্ট নিয়ে নির্দেশনা প্রসঙ্গে সিইসি বলেন, কিছু কিছু আইন নিয়ে আলোচনা হয়েছে, ডিজিটাল ব্যবস্থাপনা বিষয়ে জানানো হয়েছে। কেউ কেউ মনে করেন নির্বাচন কমিশন এককভাবে একটা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে পারেন।

তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের সামর্থ্য অত্যন্ত সীমিত। আমাদের সামর্থ্য সীমিত। আমরা নির্বাচনটা আয়োজন করি। কিন্তু নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বটা আমাদের হস্তান্তর করে দিতে হয়। তাদের ওপর আমাদের নজরদারি থাকবে।’

রিটার্নিং কর্মকর্তাদের দায়িত্ব স্মরণ করিয়ে দেওয়ার জন্য দলগুলোকে পরামর্শ দেন তিনি। ‘নজরদারি থাকতে হবে প্রতিদ্বন্দ্বী দলের। দল, প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বী করলে সে আসনের প্রতিটি কেন্দ্রে পোলিং এজেন্ট দিতে হবে অবশ্যই। পোলিং এজেন্ট দিয়ে তাদের অবশ্যই নিজ নিজ স্বার্থরক্ষা করতে হবে।’

(ঢাকাটাইমস/০৪নভেম্বর/আরআর/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

দুই অঞ্চলে সর্বোচ্চ ৮০ কিমি বেগে ঝড়ের আভাস, নদীবন্দরে ২ নম্বর হুঁশিয়ারি

আট দফা কমার পর বাড়ল সোনার দাম

গাজীপুরে ট্রেন দুর্ঘটনা: শিডিউল বিপর্যয়ে দিনভর যাত্রীদের ভোগান্তি

মুসলিম উম্মাহর একাত্মতা ফিলিস্তিন সংকট সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

উদ্যোক্তারাই দেশের ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক অগ্রগতির কাণ্ডারি: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী

ভাঙ্গা থেকে পায়রা পর্যন্ত এলিভেটেড রেললাইন হবে: রেলমন্ত্রী

সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আলীর জানাজা বাদ আসর সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে

কারখানা বন্ধের প্রতিবাদ: বনানীতে পোশাক শ্রমিকদের বিক্ষোভ, চলাচলে ভোগান্তি

আজ আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভা

আজ থেকে বাড়ছে ট্রেনভাড়া, জানুন কোন রুটে কত

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :