ফার্মাসিউটিক্যাল ব্যবসার আড়ালে প্রতারণা, বিচার দাবিতে মানববন্ধন

সাভারে চাকরি দেওয়ার সময় ব্ল্যাংক (ফাঁকা) চেক গ্রহণ করে পরবর্তীতে চেক ডিজঅনার মামলা দায়ের করে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে ‘মেডিমেট ফার্মাসিউটিক্যালস’ নামে এক ওষুধ কোম্পানির বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা কামনা করে মিথ্যা মামলা থেকে মুক্তিসহ প্রতারক ফার্মাসিটিক্যাল কর্তৃপক্ষের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করেছেন।
মঙ্গলবার দুপুরে সাভারের ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাকিজা এলাকায় সবুজ আন্দোলন সাভার শাখার সামনে এ মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করেন ভুক্তভোগীরা।
আয়োজিত মানবন্ধন থেকে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, মেডিমেট ফার্মাসিউটিক্যাল প্রতিবছর জানুয়ারিতে বেশি বেতনে চাকরির লোভ দেখিয়ে সারাদেশ থেকে পাঁচ শতাধিক লোক সংগ্রহ করে। চাকরি দেওয়ার সময় সিকিউরিটি হিসেবে প্রার্থীদের কাছ থেকে ‘ব্ল্যাংক চেক’ জমা নেয়। পরবর্তীতে চাকরিরত অবস্থায় বিভিন্ন অযৌক্তিক অযুহাত দেখিয়ে বেতন-ভাতা পরিশোধ না করেই পর্যায়ক্রমে সবাইকে চাকরিচ্যুত করলেও কাউকে জমা নেয়া ‘ব্ল্যাংক চেক’ ফেরত দেয় না।
এমনকি রিজাইন লেটারও গ্রহণ করে না। পরের বছর একইভাবে আবারও লোক নিয়োগ দেয় এবং আগের ছাটাকৃতদের কাছ থেকে জমা নেওয়া চেকের বিপরীতে চেক ডিজঅনার মামলা দায়ের করেন। এটাই তাদের মূল ব্যবসা।
ভুক্তভোগী আব্দুল আজিজ বলেন, আমি ‘ব্ল্যাংক চেক’ জমা দিয়ে ১ বছর চাকরি করার পর আমাকে কোনো বেতন-ভাতা না দিয়ে চাকরিচ্যুত করে মেডিমেট ফার্মাসিটিক্যাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তারা আমার চেকও ফেরত দেয়নি, রিজাইন লেটার গ্রহণ করেনি। উল্টো আমার কাছে টাকা পাওনা দাবি করে আদালতে চেক ডিজঅনার মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। মূলত ‘ব্ল্যাংক চেক’ নিয়ে প্রতারণা করাই কোম্পানিটির মূল ব্যবসা।
ভুক্তভোগী আল- মামুন বলেন, আমি নারায়ণগঞ্জের এরিয়া ম্যানেজার ছিলাম। আমাদের কোনো সেল নাই। মেডিমেট ফার্মাসিউটিক্যালস মূলত মিটফোর্ডে আন্ডাররেটে ব্যবসা করে। গ্রামের সহজ সরল লোকদেরকে প্রতি বছর ভূয়া নিয়োগ দিয়ে তাদের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলে। সাধারণ মানুষকে মামলা দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে সর্বশান্ত করা এই প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের উপযুক্ত বিচার চাই। আমাদের মতো আর কোনো লোক যেন মেডিমেট ফার্মাসিউটিক্যালসের প্রতারণার শিকার না হয় সেজন্য প্রশাসন এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষন করে প্রতারকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান ভুক্তভোগীরা।
এরিয়া ম্যানেজার মো. সেলিম অভিযোগ করেন, আমার অধীনে ৭ জন লোক কাজ করতো। আমরা যে ওষুধ দোকানে দুই’শ টাকায় বিক্রি করতাম কোম্পানি সেই ওষুধ মিটফোর্ডে ৯০ টাকায় বিক্রি করে। ফলে আমাদের কাছ থেকে পরে আর কেউ মাল নিতো না এবং আমাদের সেল টার্গেট পূরণ হতো না। এখন আমার বিরুদ্ধে ৭ লাখ টাকার চেক ডিজঅনার মামলা দিয়েছে। আমিতো কোম্পানি থেকে কোনো বেতন পাইনি, উল্টো মামলার ভয়ে পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে। এখন বাপের জমিও নাই বিক্রি করে তাদের প্রতারণার টাকা পরিশোধ করবো। তাই সরকারের ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতারক মেডিমেট ফার্মাসিউটিক্যালস এর বিরুদ্ধে সুষ্ঠু তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তিনি।
কোম্পানিটির প্রতারণা বিষয়ে জানতে তাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করে দেখা যায় মেডিমেট ফার্মাসিউটিক্যালস এর হেড অফিস রাজধানীর সেগুন বাগিচায় এবং কারখানা বরিশালের রুপাতলিতে। কিন্তু তাদের যোগাযোগের জন্য দেওয়া মোবাইল নাম্বারগুলোতে ফোন করা হলে সবগুলোই বন্ধ পাওয়ায় কারো সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
(ঢাকাটাইমস/২১ নভেম্বর/ইএইচ)

মন্তব্য করুন