শরিকদের নৌকা দিতে ইসিতে চিঠি দিচ্ছে আওয়ামী লীগ

জাফর আহমেদ, ঢাকা টাইমস
| আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ২২:০৫ | প্রকাশিত : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ২০:০২

নির্বাচনি কৌশলের অংশ হিসেবে এবার কিছু আসনে দলীয় প্রার্থীকে সরিয়ে শরিকদের নৌকা প্রতীক দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আওয়ামী লীগ। বিষয়টি নিয়ে ক্ষমতাসীন দলটি নির্বাচন কমিশনে চিঠিও দিতে যাচ্ছে। এর ফলে সমঝোতার মাধ্যমে শরিক দলের প্রার্থী হিসেবে যারা চূড়ান্ত হচ্ছেন তারা নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করবেন। দলের সংশ্লিষ্ট সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা ঢাকা টাইমসকে জানান, ইতিপূর্বে নৌকা প্রতীক দেওয়া প্রার্থীদের মধ্য থেকে সুনির্দিষ্ট কিছু আসনে পরিবর্তন আনা হচ্ছে। সেসব আসনে দলীয় প্রার্থী সরিয়ে শরিক দলের প্রার্থীর নাম দেওয়া হবে।

২০০৮ সাল থেকে টানা ১৫ বছর ধরে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটবদ্ধভাবে নির্বাচন করে আসছে কেন্দ্রীয় ১৪ দলীয় জোটের শরিক নেতারা। বিগত বছরের মতো এবারও তারা আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক নৌকা নিয়ে নির্বাচন করবেন। বিগত বছরের তুলনায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শরিক দলের প্রার্থী তালিকা লম্বা হবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে আওয়ামী লীগ।

কেন্দ্রীয় ১৪ দলের শরিকরা এবার ৩০টা আসন দাবি করলেও আওয়ামী লীগ তা দেবে না। এ নিয়ে দফায় দফায় শরিকরা বৈঠক করে। শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নির্বাচনে অংশ নেওয়া শরিক দলগুলো ছয় থেকে সাতটি আসন পাচ্ছে। তবে শরিকরা বিগত নির্বাচনে আরও বেশি আসন পেয়ে আসছিল। ফলে আসন ভাগাভাগি নিয়ে শরিকদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে।

গত ৪ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের শরিকরা গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে ১৪ দলের সঙ্গে আসন সমঝোতার বিষয়ে আলোচনার জন্য একটি কমিটি গঠন করে দেন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। এই কমিটিতে আমির হোসেন আমু ও ওবায়দুল কাদের ছাড়াও আওয়ামী লীগের দুজন কেন্দ্রীয় নেতা আছেন। এরপর ১৪ দলের মুখ্য সমন্বয়ক আমির হোসেন আমুর সঙ্গে বৈঠক করেন শরিক দলের নেতারা।

আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, শরিক দলগুলো নির্বাচনে পাস করার নিশ্চয়তা চাইলেও এ বিষয়ে অপারগতা প্রকাশ করেছে আওয়ামী লীগ। ক্ষমতাসীন দলটি শরিকদের ছয় নেতাকে ছয়টি আসন ছাড় দেওয়ার বিষয়ে সম্মতি জানিয়েছে। এরপর ১৪ দলের নেতারা আরও আসনের দাবি করলে আওয়ামী লীগের পক্ষে বিষয়টি বিবেচনা করা হবে বলে জানানো হয়।

যেসব আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী পাল্টাবে: রাজশাহী-২ আসনে ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা, কুষ্টিয়া-২ আসনে জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, বরিশাল-২ অথবা বরিশাল-৩ আসনে রাশেদ খান মেনন, পিরোজপুর-২ আসনে আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, চট্টগ্রাম-১ আসনে তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারীকে নৌকা দিতে সম্মত হয়েছে আওয়ামী লীগ। এছাড়া ঢাকা-১৪ আসনে নৌকা পাচ্ছেন জেপি (মঞ্জু) মহাসচিব শেখ শহীদুল ইসলাম। ঢাকার বাইরে আরও দুজনের নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করার সম্ভাবনা আছে।

আওয়ামী লীগ সূত্রে আরও জানা গেছে, নির্বাচনে অংশ নেওয়া অনেক দলের সঙ্গে সমঝোতায় গিয়ে বিভিন্ন আসন ছাড় দিতে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীকে প্রতীক বরাদ্দ না দিতে চিঠি দেবে। এদিকে জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটবদ্ধ নির্বাচন করছে না। এ কারণে তাদের জন্য কিছু আসন ছেড়ে দিতে হচ্ছে। সব মিলিয়ে ৩০ থেকে ৩৫ জন দলীয় প্রার্থীকে নিষ্ক্রিয় করবে আওয়ামী লীগ।

সূত্র বলছে, জাপা ৫০টির বেশি আসনে ছাড় দাবি করলেও আওয়ামী লীগ প্রথমে ২০টি ও পরে প্রায় ৩০টি আসন ছাড় দিতে রাজি হয়েছে। জাপার প্রস্তাব অনুযায়ী, আওয়ামী লীগ যে কয়টি আসনে ছাড় দেবে সেগুলোতে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী রাখা হবে না।

শরিকদের সঙ্গে আসন সমঝোতার বিষয়ে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও কেন্দ্রীয় ১৪ দলের মুখপাত্র আমির হোসেন আমু ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘শরিকদের জন্য আসন ছাড় দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তাই যেসব আসন ছাড় দেওয়া হবে সেখানে দলীয় প্রার্থী সরিয়ে শরিক দলের প্রার্থীকে নৌকা প্রতীক বরাদ্দ দিতে চিঠি দেওয়া হবে ইসিকে। বৃহস্পতিবার আমরা চিঠি দেব আশা করছি।’

আওয়ামী লীগ ছাড়া ১৪ দলের বর্তমান শরিক দলগুলো হলো-বাংলাদেশের ওয়ার্কাস পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ), গণতন্ত্রী পার্টি, সাম্যবাদী দল (এমএল), তরিকত ফেডারেশন, কমিউনিস্ট কেন্দ্র, ন্যাপ (মোজাফফর), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ, রেজাউর), জাতীয় পার্টি (জেপি, মঞ্জু), গণতান্ত্রিক মজদুর পার্টি এবং গণআজাদী লীগ।

শুরুতে আওয়ামী লীগ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ), ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ) ও ১১ দলীয় জোট মিলে এই জোট গঠিত হয়। কিন্তু জোট গঠনের পরপরই ১১ দল থেকে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ, জামান) সহ কয়েকটি দল বেরিয়ে যায়।

২০০৭ সালের এক-এগারোর রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর গণফোরাম জোটটি ত্যাগ করে। এ ছাড়া ২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি (জেপি) ও নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারীর নেতৃত্বাধীন তরিকত ফেডারেশন জোটে যোগ দেয়।

(ঢাকাটাইমস/১৪ডিসেম্বর/জেএ/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজনীতি এর সর্বশেষ

৭৫ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে বিএনপি: ওবায়দুল কাদের

আ.লীগ জনগণকে কবরস্থ ক‌রে ক্ষমতা দখলে রাখতে চায়: রিজভী

বাংলাদেশ ও ভারত ভবিষ্যৎ বিশ্বে নানা ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দেবে: ড. সেলিম মাহমুদ

রাজনৈতিক দলগুলো কথা বন্ধ রাখলে গণতন্ত্র পিছিয়ে পড়বে: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী

স্বাধীন ফিলিস্তিনের দাবিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পতাকা ওড়ানোসহ ছাত্রলীগের একগুচ্ছ কর্মসূচি ঘোষণা

একদলীয় শাসনে বাংলাদেশে আজ মুক্ত গণমাধ্যম অনুপস্থিত: মঈন খান

উপজেলা নির্বাচনও ডা‌মি, বর্জন করুন: রিজভী 

সত্য বললে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থে আঘাত লাগলে কিছু করার নেই: ওবায়দুল কাদের

আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সভা সোমবার

ঝিনাইদহ-১ আসনের উপনির্বাচনে নৌকার প্রার্থী নায়েব আলী

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :