ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে জেলেদের চাল আত্মসাতের অভিযোগ

সায়েম খান, হরিরামপুর (মানিকগঞ্জ)
| আপডেট : ০৬ মে ২০২৪, ১৯:২৯ | প্রকাশিত : ০৬ মে ২০২৪, ১৮:২৭
চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ (ছবি: সংগৃহীত)

মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে জেলেদের জন্য বরাদ্দকৃত ভিজিএফের চাল আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে চালা ইউপি চেয়ারম্যান মো. আব্দুল মজিদের বিরুদ্ধে। বিতরণ দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা ট্যাগ অফিসারের সঙ্গে আঁতাত, জেলেদের ভুয়া টিপসহি এবং এক নাম একাধিকবার ব্যবহার করে চাল আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে।

উপজেলা মৎস্য দপ্তর সূত্রে জানা যায়, জাটকা আহরণে বিরত থাকা জেলে পরিবারকে মানবিক সহায়তা কর্মসূচির আওতায় চালা ইউনিয়নে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে দুই ধাপে মোট ১০০ জনের জন্য মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। নিয়ম অনুযায়ী বরাদ্দকৃত চাল মৎস্য দপ্তরকে অবহিত করে এবং ট্যাগ অফিসারের উপস্থিতিতে বিতরণ করার কথা থাকলেও ইউপি চেয়ারম্যান তা করেননি।

দুই ধাপের তালিকার ১০০ জনের মধ্যে ৪৪ জন জেলে তাদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতির তথ্য পাওয়া গেছে।

তালিকা যাচাই করে দেখা যায়, কোনো কোনো জেলের নাম থেকে বার ব্যবহার করে চাল আত্মসাৎ করা হয়েছে। চাল বিতরণের মাস্টাররোলে ভুয়া টিপসহি ব্যবহার এবং চাল না পাওয়ার অভিযোগও করেছেন জেলেরা।

দিয়াবাড়ি গ্রামের দুলাল রাজবংশীর ছেলে স্বপন রাজবংশীর নাম দুই তালিকায় মোট তিনবার উল্লেখ করা হয়েছে। সে হিসেবে তার জন্য মোট বরাদ্দ ২৪০ কেজি চাল। অথচ স্বপন রাজবংশীর স্ত্রী ভারতী রাজবংশী বলেন, ‘আমরা - মাস আগে একবার ৩০ কেজির এক বস্তা চাল পেয়েছি। আর কোনো চাল পাইনি।

সট্টি গ্রামের আব্দুর রহিমের নাম দুই তালিকাতেই রয়েছে। তার নামে বরাদ্দ মোট ১৬০ কেজি। আব্দুর রহিম বলেন, ‘আমি জীবনেও জেলে কার্ডের কোনো চাল পাইনি।

সট্টি গ্রামের রহমান কাজী এবং বাবুপুর গ্রামের মনোরঞ্জন রাজবংশীও চাল পাননি।

দিয়াবাড়ি গ্রামের পবন রাজবংশী, পরি রাজবংশী, নিরঞ্জন রাজবংশী, সুজন রাজবংশী, সুরেশ রাজবংশী জিতেন রাজবংশী এবং কল্যাণপুর গ্রামের সুশান্ত রাজবংশী, সুরেশ রাজবংশী, গোবিন্দ রাজবংশী, শংকর রাজবংশী, পরেশ রাজবংশী রবি রাজবংশী প্রত্যেকে ৮০ কেজির জায়গায় ৩০ কেজি করে চাল পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন।

বাবুপুর গ্রামের প্রফুল্ল রাজবংশী এবং কল্যাণপুর গ্রামের সুবল রাজবংশী পরিমল রাজবংশী এবং ভবেশ রাজবংশীর নাম দুই তালিকায় থাকলেও তারা একবার ৩০ কেজি করে চাল পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ইউপি সদস্য বলেন, পরবর্তী ধাপের মেট্রিক টন চাল চেয়ারম্যান বিতরণ না করে আত্মসাৎ করেছেন।

বিষয়ে জানতে চাইলে, চালা ইউপি চেয়ারম্যান কাজী আব্দুল মজিদ চাল আত্মসাতের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, চাল আত্মসাৎ করা হয়নি। বরাদ্দের চেয়ে পাওয়ার যোগ্য জেলে বেশি থাকার কারণে একজনের চাল কয়েকজনকে ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। একই নাম একাধিকবার থাকার বিষয়টিও অস্বীকার করেছেন তিনি।

চাল বিতরণ পরিদর্শনের দায়িত্বে থাকা ট্যাগ অফিসার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা হাসান মতিউর রহমান বলেন, আমি বিতরণকালে ছিলাম না। পরবর্তীতে চাল বিতরণ করা হয়েছে মর্মে জানালে আমি তালিকায় স্বাক্ষর করে দিয়েছি।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. নূরুল ইকরাম বলেন, চাল বিতরণের কথা আমাদের জানানোর কথা থাকলেও তিনি জানাননি। আমরা কয়েকজন জেলের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের মধ্যে পাঁচজন চাল পাননি বলে জানিয়েছেন। বিষয়টি ইউএনও স্যারের কাছে রিপোর্ট দিয়েছি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাহরিয়ার রহমান বলেন, বিষয়টি শুনেছি। বিষয়ে মৎস্য কর্মকর্তাকে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি আমিও তদন্ত করছি। অভিযোগের সত্যতা পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(ঢাকাটাইমস/০৬মে/প্রতিনিধি/পিএস)

সংবাদটি শেয়ার করুন

সারাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

সারাদেশ এর সর্বশেষ

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে সেতুমন্ত্রীর ভাই: সুষ্ঠু নির্বাচন দিয়ে কোম্পানীগঞ্জের আ.লীগ ও জনগণকে বাঁচান

ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাব: কক্সবাজারে ১০ গ্রাম প্লাবিত

শার্শায় আ.লীগ কার্যালয় ভাঙচুর: চেয়ারম্যানসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা

সাতক্ষীরায় ঝড়ের মধ্যে আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার পথে বৃদ্ধের মৃত্যু

দিনাজপুরে শেষ মুহূর্তে ভোটারদের মন জয় করতে মরিয়া প্রার্থীরা

শেরপুরে চাচিকে দেখতে এসে লাশ হয়ে ফিরল শিশু জিম

পাবনায় জমে উঠেছে উপজেলা নির্বাচনের প্রচারণা

কোম্পানীগঞ্জে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক ও ছাত্রদলের যৌথ সভা, নির্বাচন বর্জনের ডাক

রাঙ্গাবালীতে রেমালের প্রভাব: নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ

খুলনার উপকূলে রেমাল আতঙ্ক: বইছে দমকা হাওয়া, মোকাবিলায় প্রস্তুত জেলা প্রশাসন

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :