খুলনার উপকূলে রেমাল আতঙ্ক: বইছে দমকা হাওয়া, মোকাবিলায় প্রস্তুত জেলা প্রশাসন

খুলনা ব্যুরো, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ২৬ মে ২০২৪, ১৯:৩১
অ- অ+

ঘূর্ণিঝড় রেমাল আতঙ্কে রয়েছে খুলনার উপকূলবাসী। রেমালের প্রভাবে অঞ্চলে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকার পাশাপাশি দুপুর থেকে বইছে দমকা হাওয়া। তবে সম্ভাব্য ক্ষতি এড়াতে প্রস্তুত রয়েছে জেলা প্রশাসন।

রবিবার সকালে দুয়েকবার সূর্যের দেখা মিললেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আবার মেঘে ঢাকা পড়ে আকাশ। এরপর দুপুর থেকে শুরু হয় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি।

খুলনা আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ সিনিয়র আবহাওয়াবিদ মো. আমিরুল আজাদ বলেন, খুলনায় ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেওয়া হয়েছে। সকাল থেকে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন। বইছে দমকা হাওয়া। সন্ধ্যায় উপকূলে আঘাত হানবে রেমাল সময় বৃষ্টি আরও বাড়বে। বাতাসের গতিবেগ ১১০ থেকে ১২০ কিলোমিটার বেগে বয়ে যেতে পারে। ঘূর্ণিঝড়টি বর্তমানে মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ১৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে।

এদিকে ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে খুলনা জেলা প্রশাসন। প্রস্তুত রাখা হয়েছে জেলার সকল সাইক্লোন শেল্টার স্থায়ী-অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্র। প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৩টি মুজিব কিল্লা পাঁচ সহস্রাধিক স্বেচ্ছাসেবক। এসব আশ্রয় কেন্দ্রে লাখ ১৫ হাজার মানুষ থাকতে পারবে বলে জানা গেছে। এছাড়া খুলনা, বাগেরহাট সাতক্ষীরায় প্রস্তুত রয়েছে ফায়ার সার্ভিসের ৩০টি টিম। খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম।

খুলনা জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিজ নিজ কর্মস্থলে থাকার জন্য বলা হয়েছে। সতর্ক থাকার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদেরকেও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সচেতনতায় মাইকিং, পরিস্থিতি বিবেচনায় শুকনো খাবার, ওষুধ, ঢেউটিন নগদ টাকা প্রস্তুত রাখার জন্য বলা হয়েছে।

এদিকে রেমাল মোকাবিলায় প্রস্তত রয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, পানি উন্নয়ন বোর্ড। সব মিলিয়ে প্রস্তুতিতে কোনো ঘাটতি নেই বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।

খুলনা জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফিন জানান, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলার জন্য জেলার ৬০৪টি সাইক্লোন শেল্টার ৩টি মুজিব কেল্লা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যাতে পরিস্থিতি অনুযায়ী ঝুঁকিপূর্ণ লোকজন সেখানে আশ্রয় নিতে পারেন। এসব সাইক্লোন শেল্টারে মোট লাখ ১৫ হাজার ১৮০ জন মানুষ আশ্রয় নিতে পারবে এবং ৩টি মুজিব কিল্লায় ৪৩০ জন মানুষ ৫৬০টি গবাদি পশু রাখা যাবে। এছাড়া কয়রা, দাকোপ পাইকগাছা উপজেলায় হাজার ২৮০ জন স্বেচ্ছাসেবককে প্রস্তুত রয়েছে।

ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্স খুলনার উপপরিচালক মামুন মাহমুদ বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবিলায় খুলনা, সাতক্ষীরা বাগেরহাটের ৩০টি টিম শনিবার সকাল ৬টা থেকে কাজ শুরু করেছে। এরমধ্যে খুলনায় ১৪টি ফায়ার স্টেশন রয়েছে। যার মধ্যে একটি রিভার ফায়ার স্টেশন আছে। এছাড়া বাগেরহাটে ১০টি এবং সাতক্ষীরায় ৬টি ফায়ার স্টেশনের টিম কাজ করছে। টিমের সদস্যরা মানুষকে সচেতন করার পাশাপাশি রেসকিউ, বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থা, নিরাপদে আশ্রয় কেন্দ্রে আনাসহ যাবতীয় কাজ করবে। জল স্থল উভয় পথে ফায়ার সার্ভিসের টিম এবং যাবতীয় সরঞ্জাম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। খুলনা সদরদপ্তরে স্ট্যান্ডবাই রাখা হয়েছে ২০ সদস্যের স্পেশাল টিম। খোলা হয়েছে মনিটরিং সেল।

তিনি বলেন, ফায়ার সার্ভিসের মনিটরিং সেল, বিভাগীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ সারাক্ষণ সংবাদ সংগ্রহে নিয়োজিত থাকবে। যেকোনো জরুরি প্রয়োজনে সেবা গ্রহণের জন্য ফায়ার সার্ভিসের নিকটবর্তী ফায়ার স্টেশন, বিভাগীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ, কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষের হটলাইন নম্বর ১৬১৬৩ অথবা খুলনা বিভাগীয় মনিটরিং সেলের জরুরি মোবাইল নম্বর ০১৭৩৩০৬২২০৯- ফোন করার জন্য সবাইকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। এছাড়া জরুরি প্রয়োজনে ১০২ এবং ৯৯৯ হটলাইনে কল করে তথ্য জানানো যাবে।

(ঢাকাটাইমস/২৬মে/প্রতিনিধি/পিএস)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
অক্সফাম ও ওয়াটারএইড ‘অনির্বাণ –রাইজ অ্যান্ড লিড’ শীর্ষক  উদ্যোগ চালু করল
সুপ্রিম কোর্টে শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য, নিরাপত্তা জোরদার
সোনারগাঁ সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে প্রক্সি দলিল লেখকের দাপট
বোয়ালমারীতে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা স্মৃতিস্তম্ভ ভেঙে দিল ছাত্র-জনতা
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা