রাফাতে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি বিমান হামলা, নিহত ৩৫

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকা টাইমস
 | প্রকাশিত : ২৭ মে ২০২৪, ১৩:৪৬

গাজা উপত্যকার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফাহতে বাস্তুচ্যুতদের একটি শিবিরে ইসরায়েলের ভয়াবহ বিমান হামলায় অন্তত ৩৫ জন নিহত এবং বহু মানুষ আহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন গাজার চিকিৎসা ও জরুরি কর্মকর্তারা। খবর আনাদোলু।

গাজা মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, রবিবার তাল আল-সুলতানে ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের সংস্থার (ইউএনআরডব্লিউএ) লজিস্টিক ঘাঁটির কাছে বাস্তুচ্যুতদের বেশ কয়েকটি তাঁবু লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র এবং ২ হাজার পাউন্ড বোমা হামলা চালিছে ইসরায়েলি বিমানগুলো।

এর আগে গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা বাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছিল, তারা বোমা হামলার পর নিহত ও আহতসহ ৫০ জনকে হাসপাতালে নিয়ে গেছে। এতে বলা হয়েছে, লক্ষ্যবস্তুকৃত এলাকা অন্তত এক লাখ বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি আশ্রয় নিয়েছে।

ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি একটি সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলেছে, তাদের অ্যাম্বুলেন্স ক্রুরা ক্ষতিগ্রস্তদের কাছাকাছি চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যাচ্ছে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, এই হামলার ফলে এলাকাটিতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে, যা এখনও জলছে।

একজন ফিলিস্তিনি প্যারামেডিক আনাদোলুকে বলেছেন, ‘ইসরায়েলি বোমাবর্ষণের স্থান থেকে অনেক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করেছি, যার মধ্যে মাথাবিহীন একটি শিশু এবং কয়েকটি শিশুর ছিন্ন বিছিন্ন মরদেহ রয়েছে।’

গাজার মিডিয়া অফিস বিবৃতিতে আরও বলেছে, গাজা উপত্যকায় বাস্তুচ্যুত মানুষের জন্য ১০টিরও বেশি আশ্রয়কেন্দ্রে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর লক্ষ্যবস্তুতে গত ২৪ ঘন্টায় কমপক্ষে ১৯০ ফিলিস্তিনি নিহত ও আহত হয়েছে।

এদিকে, রবিবার গভীর রাতে এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী স্বীকার করেছে- রাফাহতে চালানো বিমান হামলায় বেসামরিক মানুষ হতাহত হয়েছে।

বিবৃতিতে ইসরায়েলিবাহিনী দাবি করেছে, ‘রাফাতে হামাসের একটি ঘাঁটিতে বিমান হামলা চালানো হয়েছে। এতে এলাকায় আগুন ছড়িয়ে পড়ার ফলে বেশ কয়েকজন বেসামরিক হতাহত হয়েছে এবং ঘটনাটি পর্যালোচনা করা হচ্ছে।’

অন্যদিকে এই বিমান হামলার নিন্দা জানিয়ে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস বলছে, আইসিজে-এর সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে অপরাধী ইহুদিবাদী দখলদার বাহিনী এমন একটি এলাকায় বাস্তুচ্যুত নাগরিকদের শিবিরে একটি জঘন্য হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে, যাকে নিরাপদ ঘোষণা করা হয়েছিল।’

বিবৃতিতে হামাস আরও বলছে, ‘আমরা মার্কিন প্রশাসন এবং বিশেষ করে, প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে এই গণহত্যার জন্য সম্পূর্ণরূপে দায়ী করি, যা জায়নবাদী সত্তাকে সমর্থন এবং রাফাহ আক্রমণের জন্য সবুজ সংকেত দিয়েছে।’

প্রসঙ্গত, গত ৬ মে রাতে হামাস যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে রাজি হওয়ার পর সেটাকে উপযুক্ত নয় বলে প্রত্যাখ্যান করে নেতানিয়াহু সরকার। এরপর দিন থেকেই মিশরের সঙ্গে রাফাহ ক্রসিং- গাজায় প্রবেশের একমাত্র দখল করে নেয় ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। একই সঙ্গে রাফায় স্থল অভিযান শুরু করে।

জাতিসংঘের মতে, গাজায় ইসরায়েলি আক্রমণ শুরুর পর সীমান্ত শহরটির (রাফাহ) জনসংখ্যা প্রায় ২ লাখ ৭৫ হাজার থেকে বেড়ে ১৫ লাখে পৌঁছেছিল। কারণ যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর গাজা উপত্যকার শেষ নিরাপদস্থল হিসেবে এই বিশাল সংখ্যক ফিলিস্তিনি সেখানে আশ্রয় নিয়েছেন, যা গাজার মোট জনসংখ্যার দুই-তৃতীয়াংশ।

তবে পূর্ব রাফাহ থেকে ফিলিস্তিনিদের জন্য সরে যাওয়ার ইসরায়েলের আদেশ জারি করার একদিন পর থেকে প্রায় ৮ লাখ ফিলিস্তিনি রাফাহ থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।

(ঢাকাটাইমস/২৭মে/এমআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

আন্তর্জাতিক বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :