উত্তরা আধুনিক মেডিকেলে অটোমেশনের নামে ওষুধ সিন্ডিকেট, জিম্মি রোগীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ২২ মে ২০২৪, ০৮:৫৪| আপডেট : ২২ মে ২০২৪, ০৮:৫৬
অ- অ+

ভর্তি রোগীদের নির্দিষ্ট ফার্মেসি থেকে অধিক দামে ওষুধ কিনতে বাধ্য করার অভিযোগ উঠেছে উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। একাধিক ভর্তি রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, ভর্তি রোগীকে হাসপাতালের ডাক্তাররা কি ওষুধ দিচ্ছেন তার কোনো রসিদ দেওয়া হয় না।

নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই আইসিইউর ভেতরে বসানো হয়েছে ফার্মেসির ডেস্ক। ডাক্তার কোনো রোগীর জন্য ওষুধ লিখলে সেটি হাসপাতালের নার্স বা ব্রাদারের মাধ্যমে চলে যায় ফার্মেসির ডেস্কের লোকের কাছে। তারা বিল করে নিচে পাঠালে স্বয়ংক্রিয়ভাবে হাসপাতালের নিচে অবস্থিত ফার্মেসি থেকে ওষুধ তাদের নিজস্ব লোকজনের মাধ্যমে চলে আসে আইসিইউতে থাকা রোগীদের স্বজনদের কাছে। পরে স্বজনদেরকে বাধ্য করে স্বাক্ষর নেওয়ার পর ওষুধ চলে যায় আইসিইউতে থাকা রোগীর কাছে। ওষুধের রসিদ চাইতে গেলে বাধে বিপত্তি। রোগীর স্বজনদের সঙ্গে করা হয় খারাপ আচরণ। এখানে ওষুধের মূল্য যাচাইয়ের কোনো সুযোগ নেই। নির্দিষ্ট ফার্মেসি থেকে ওষুধ নিতে বাধ্য করা হচ্ছে।

বহিরাগত মানুষ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কিছু অসাধু কর্মকর্তার সহযোগিতায় শক্তিশালী সিন্ডিকেট করে অনিয়মের আখড়ায় পরিণত করেছে হাসপাতালটিকে। প্রকাশ্য দিবালোকেই আইসিইউতে ভর্তি রোগীদের স্বজনদের জিম্মি করে পকেট কাটছে এ শক্তিশালী সিন্ডিকেট।

তারা আরো জানায়, হাসপাতালের ফার্মেসির ওষুধের মূল্য আর বাইরের যেকোনো ফার্মেসির ওষুধের মূল্যহার আকাশ-পাতাল ব্যবধান। মেনুফেমিন এক প্যাকেট ওষুধের দাম বাইরের যেকোনো ফার্মেসিতে ৬৩০ টাকা থেকে ৬৫০ টাকায় পাওয়া যায়, কিন্তু হাসপাতালের ফার্মেসিতে নেওয়া হচ্ছে ১২০০ টাকা। এসব কিছু দেখার কেউ নেই। প্রতিনিয়ত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের লোকজন এসে নিচের নররূপা ফার্মেসি থেকে ওষুধ কেনার পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে। এমনকি ডিউটিরত ডাক্তাররাও।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউর সামনে অপেক্ষারত ভর্তি রোগীদের স্বজনদের কাছ থেকে গলায় নবরূপা ফার্মেসির কার্ডধারী লোকজন রোগীর স্বজনদের জোর করে ওষুধের বিলের কাগজে ওষুধ বুঝে পাওয়ার স্বাক্ষর নিচ্ছেন এবং এক প্রকার অসহায় হয়ে ভর্তির রোগীর স্বজনরা এই বিলের কাগজে স্বাক্ষর করতে বাধ্য হচ্ছেন। এ বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাৎক্ষণিক যোগাযোগ করা হলেও কোনো ব্যাখ্যা বা বিশ্লেষণ পাওয়া যায়নি।

রোগীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ, আইসিইউতে ফার্মেসির ডেস্ক ও অধিক মূল্য দিয়ে ওষুধ ক্রয়ে বাধ্য করাসহ বিভিন্ন বিষয়ে জানতে চাইলে উত্তরা আধুনিক মেডিকেলে অবস্থিত নবরূপা ফার্মেসির মালিক তুম্মান বলেন, এই মুহূর্তে আমি কথা বলতে পারছি না। আপনাকে পরে ফোন দিব।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আইসিইউ বিভাগের প্রফেসর ডা. পারভেজ বলেন, নবরূপা ফার্মেসির বিষয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। আমি চিকিৎসা বিষয়ে কাজ করি। এ বিষয়ে আমার কোনো মতামত নেই। ডাইরেক্টর সাহেবের সঙ্গে কথা বলেন।

জানতে চাইলে উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বর্তমান অনারি সেক্রেটারি মেজর জেনারেল রফিকুল ইসলাম বলেন, এটা একটা ম্যানেজমেন্টের বিষয়। এখানে পুরো হাসপাতালের মধ্যে অটোমেশনের কাজ চলছে। আইসিইউ থেকে শুরু করে প্রত্যেকটা বিলিং একটা সিস্টেমের মধ্যে... এটা তো আপনার কাছে শেয়ার করতে পারব না। এগুলো আমাদের ইন্টারনাল ম্যাটার। এটা অটোমেশনের অংশ। বিলিং কি হবে না হবে এসব ব্যাপার। How do I reply to this complaint?

এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাসপাতালের পরিচালক মেজর জেনারেল মিজানুর রহমান কোনো মন্তব্য দিতে রাজি হননি।

(ঢাকাটাইমস/২২মে/টিইউ/কেএ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
এপ্রিলের ২৯ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ২৬০ কোটি ৭৬ লাখ ডলার
নির্ধারিত সময়ের দুই মাস আগেই সব দেনা পরিশোধ করল পেট্রোবাংলা
ব্যবসায়িক পরিবেশ উন্নত করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করব: অর্থ উপদেষ্টা
উপদেষ্টাদের সঙ্গে পুলিশের মতবিনিময়, বিভিন্ন প্রস্তাব বাস্তবায়নের আশ্বাস
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা