একটি চিতই পিঠা কিনলেই ২১ পদের ভর্তা ফ্রি
পিঠা পছন্দ করে না এমন মানুষের সংখ্যা খুঁজে পাওয়া কষ্টের। বিশেষ করে চিতই পিঠা! কেন না শীত আর গরম নেই, বছরজুড়েই এ পিঠার চাহিদা থাকে। আর যদি এমনটি হয় একটি পিঠা ক্রয়ে ২১ পদের ভর্তা খাওয়ার সুযোগ রয়েছে, তাহলে ক্রেতারা তো ভিড় করবেই। এমনই একটি ভাসমান দোকানের দেখা মিলেছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ অংশে।
হাসিঠাট্টার ছলে দুইভাই মিলেমিশে ব্যবসা শুরু করলেও এখন তা নজর কেড়েছে ভর্তাপ্রেমীদের। প্রতিদিন দোকানটি চালু করার আগ মুহূর্তেই উপচে পড়া ভিড় জমান চাকরিজীবীসহ সড়ক দিয়ে চলাচলরত পথচারীরা। দীর্ঘক্ষণ সিরিয়ালে দাঁড়িয়ে থেকেই ভর্তার স্বাদ নেন মানুষজন।
মো. শরিফ ও সজীব নামের এই দুই-ভাইয়ের উদ্যোগে মহাসড়কের শিমরাইল মোড়স্থ কাসসাফ শপিং সেন্টারের সামনের ফুটপাত বসানো হয়েছে এই ভাসমান পিঠার দোকানটি। কাস্টমারের অতিরিক্ত চাপ থাকায় তাদের সঙ্গে মো. জিসান নামক আরেকজন স্টাফ রাখা হয়েছে। তারা উভয়ে পিঠা তৈরি এবং কাস্টমারকে সেবা দিতে ব্যস্ত থাকেন। মূলত বিকালের পর থেকে দোকানটি খোলা হয়।
পিঠা বিক্রির অতি ব্যস্তসময়ের মাঝেও দোকান মালিক দুই-ভাইয়ের সঙ্গে আলাপ হয় ঢাকা টাইমসের প্রতিবেদকের। তারা বলেছেন কীভাবে শুরু করলেন এবং কেমন যাচ্ছে বেচা-বিক্রি।
দেখা গেছে, একটি ভ্যানগাড়ির ওপর টেবিল বানিয়ে তার মধ্যে সারিবদ্ধভাবে সাজানো রয়েছে ২১ আইটেমের ভর্তা। এর অপর পাশে ৬টি চুলায় লাগাতার বানানো হচ্ছে চিতই পিঠা। আর তা খাওয়ার জন্যে লাইন ধরে অপেক্ষা করছেন অসংখ্য মানুষ।
১০ টাকা দরে বিক্রি করা হয় একেকটি চিতই পিঠা। তবে, পিঠাগুলো আকারে ছোট বানানো হয়। জিজ্ঞেস করা হলো টেবিলের ওপর সাজানো একে একে সবগুলো ভর্তার নাম। তারা বলেছেনও।
যেসব আইটেমের ভর্তা পাওয়া যায়
কাঁচা মরিচ, শুকনা মরিচ, বেগুন, টমেটো, বরবটি, ধনেপাতা, সরিষা, কালোজিরা, আলু, রসুন, লইট্টা শুঁটকি, চিংড়ি শুঁটিকি, চেঁপা শুঁটকি, ইলিশ, কালো জিরা, কলা, চানাচুর, জলপাই, আমড়া, ডাল ও টাকি মাছের।
প্রতিদিন ৩ থেকে সাড়ে ৩ ঘণ্টা সময় ব্যয় হন এসব ভর্তা তৈরিতে। স্বল্প পুঁজির ব্যবসায় সন্তোষজনক লাভবান হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দোকানি সজীব। তিনি বলেন, প্রতিদিন ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা ইনভেস্টে সাড়ে ৮ থেকে ৯ হাজারের গড়ে বিক্রি করে থাকেন।
আলাপকালে আরেক ভাই মো. শরিফ বলেছেন, ঘুরেফিরে দিন কাটতো তাদের। হঠাৎ বন্ধু-বান্ধবের আড্ডায় হাসিঠাট্টার মধ্যে পিঠার দোকান দেয়ার কথা হয়। পরবর্তীতে তার ছোট ভাইকে সঙ্গে নিয়ে শুরু করেন। শুরুর পর ক্রেতাদের ব্যাপক সাড়া পান। মাঝে-মধ্যে ভর্তার আইটেম পঁচিশও ছাড়ায় তাদের।
তাদের গ্রামের বাড়ি ভোলা জেলায়। বর্তমানে পরিবার নিয়ে বসবাস করেন সিদ্ধিরগঞ্জের (নাসিক) ৩ নং ওয়ার্ডস্থ বটতলা এলাকায়।
দোকানটিতে পিঠা খেতে আসা কয়েকজনের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় পিঠার দোকান থাকলেও সর্বোচ্চ ৩-৪ রকমের ভর্তা পাওয়া যায়। কিন্তু এখানে তাদের একেবারে ভিন্ন ধরনের আইডিয়া। আইটেম বেশি হওয়ায় সবগুলোর টেস্ট করা কষ্টকর।
(ঢাকাটাইমস/১৩জানুয়ারি/এআর)