ঘাটাইলে বনের গাছ চুরির হিড়িক

টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে বনের শাল ও গজারি গাছ কেটে নিচ্ছে সংঘবদ্ধ গাছ চোর চক্রের সদস্যরা। দিন রাত সব সময়ই চলছে গাছ কাটা। ফলে বিলুপ্তির পথে রয়েছে সংরক্ষিত বনের গাছ। এ ঘটনায় সংঘবদ্ধ গাছ চোর চক্র, অসাধু কাঠ ব্যবসায়ী, বন কর্মকর্তা ও বনের ভেতর গড়ে ওঠা অবৈধ করাতকল মালিকদের দায়ী করছেন স্থানীয়রা।
গত শনিবার বটতলী ও ঝড়কা বিট অফিসের ছনখোলা ও কুশারিয়া এলাকা থেকে গজারি গাছ বোঝাই একটি কাভার্ডভ্যান এবং আকাশমনি গাছের কাঠ বোঝাই একটি মিনি ট্রাক জব্দ করেছে বন বিভাগ।
বন বিভাগের ওই দুই বিটের দায়িত্বে থাকা হেলাল উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয় বন বিভাগের দেওয়া তথ্য মতে, বর্তমানে ঘাটাইল উপজেলায় বনভূমির পরিমাণ ২৫ হাজার ৭১১ একর। ’৯০-এর দশকে বন বিভাগের সামাজিক বনায়ন কর্মসূচি আসার পর থেকেই প্রাকৃতিকভাবে গড়ে ওঠা এই বন ধ্বংস করা শুরু হয়। শাল ও গজারি গাছসহ নানা ধরনের দেশীয় গাছ কেটে বনে লাগানো হয় বিদেশি নানা জাতের গাছ। গজারি গাছ কাটা সরকারিভাবে নিষিদ্ধ হলেও কেউ মানছে না। জানা যায়, গাছের গোড়া থেকে চারা গজায়, কিন্তু চোরচক্র গাছের গোড়া উপড়ে নিয়ে যাওয়ায় গাছের বংশবৃদ্ধিও হচ্ছে না। ফলে বিলুপ্তির পথে রয়েছে বনের শাল ও গজারি গাছ।
সরেজমিন বন বিভাগের বটতলা চৌরাশা ও ঝড়কা বিটের বগা, খাগরাটা, দেওপাড়া, কুশারিয়া ও ছনখোলা এলাকা ঘুরে দেখা যায়, একসময় গজারি গাছে ভরা টিলাগুলো খালি করে ফেলা হয়েছে। তুলে নেওয়া হয়েছে গাছের গোড়াও।
স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায়, ঝুঁকি কম থাকায় চুরি করা কাঠ পাচারের জন্য ব্যবহার করা হয় কাভার্ডভ্যান। আর এসব চোরাই কাঠ বিক্রি হচ্ছে বনের ভেতর গড়ে ওঠা শতাধিক করাতকল ও পাশের ইটভাটায়।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) বিভাগীয় সমন্বয়কারী গৌতম চন্দ্র বলেন, ‘মধুপুরের শালবন রক্ষায় হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন করা হয়েছে। রিট পিটিশনের জন্য মহামান্য আদালত একটি নির্দেশনা জারি করেছেন। তথ্য প্রমাণ পেলে ঘাটাইলের বন রক্ষায়ও একই কাজ করা হবে।’
ঘাটাইল ধলাপাড়া রেঞ্জ কর্মকর্তা ওয়াদুদ রহমান জানান, ইতোমধ্যে বেশ কিছু গজারি গাছ জব্দ করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলাও হয়েছে।
(ঢাকাটাইমস/২১জানুয়ারি/প্রতিনিধি/পিএস)

মন্তব্য করুন