মৌলভীবাজারের ‘দুঃখ’ মনু নদ, হাজার কোটি টাকার প্রকল্পে ধীরগতির অভিযোগ

চিনের ‘দুঃখ’ হোয়াং হো নদীর মতো মৌলভীবাজারের মানুষের দুঃখ মনু নদ। বর্ষা মৌসুমে পানির সঙ্গে বাড়ে মনু নদের দুই পাড়ের লাখো মানুষের দুঃখ দুর্দশা। বাদ যায় না মৌলভীবাজার জেলা শহরও। স্থানীয়রা এ কষ্ট সহ্য করে পার করেছেন দিনের পর দিন, মাসের পর মাস এবং বছরের পর বছর। এ সমস্যার স্থায়ী সমাধানের দাবিতে তারা আন্দোলনও করেছেন। এক পর্যায়ে মনু নদকে ঘিরে প্রায় হাজার কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নেয় পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। ৯৯৬ কোটি ২৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘মনু নদের ভাঙন থেকে কুলাউড়া, রাজনগর ও মৌলভীবাজার সদর রক্ষা’প্রকল্পটি ২০২০ সালের জুন মাসে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদনও দেওয়া হয়। ২০২৩ সালের জুনে এ প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু ভূমি অধিগ্রহণ ও একটি পয়েন্টে বিএসএফের বাধাসহ বিভিন্ন জটিলতার কারণে কাজটি শেষ করা যায়নি। বাধ্য হয়ে প্রকল্পের মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানো হয়। চলতি বছর জুন মাসে কাজটি শেষ হওয়ার কথা। অথচ এখন পর্যন্ত কাজের অগ্রগতি মাত্র ৪২ শতাংশ। ফলে নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ হওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। এতে জেলা জুড়ে বন্যার ঝুঁকি বেড়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, প্রকল্প অনুমোদনের পর বিভিন্ন জরিপ শেষে ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে মাঠ পর্যায়ে কাজ শুরু করা হয়। কিন্তু বিভিন্ন কারণে কাজের তেমন অগ্রগতি হয়নি।
কুলাউড়া উপজেলার পৃথিমপাশা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ বলেন, প্রকল্পের কাজ যে গতিতে এগোচ্ছে তাতে আরও দুই বছরে কাজ শেষ হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
তিনি বলেন, আগামী এপ্রিল-মে মাসে মনু নদে ফ্লাশ ফ্লাড হলে আগাম বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জাবেদ ইকবাল বলেন, এ পর্যন্ত ২২৮ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। ৫০টি প্যাকেজে ৬৮টি স্থানে ব্লক প্রস্তুত করা হয়েছে। কিন্তু কুলাউড়া উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নে বিএসএফের বাধায় কাজ করা যাচ্ছে না। এ নিয়ে দুই দেশের যৌথ নদী কমিশনের সভা করেও সমাধান পাওয়া যাচ্ছে না। বর্তমানে কাজের অগ্রগতি ৪২ শতাংশ। আর অর্থ পাওয়া গেছে ২০-২২ শতাংশ।
(ঢাকাটাইমস/২৬জানুয়ারি/প্রতিনিধি/পিএস)

মন্তব্য করুন