নাভালনির স্ত্রী-কন্যার সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বাইডেন
রাশিয়ার বিরোধীদলীয় নেতা ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কট্টর সমালোচক আলেক্সি নাভালনির স্ত্রী ইউলিয়া ও কন্যা দাশা নাভালনিয়ার সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এ সময় বাইডেন জানান নাভালনির মৃত্যুর প্রতিক্রিয়ায় এই সপ্তাহের মধ্যে মস্কোর বিরুদ্ধে বড় ধরনের নতুন নিষেধাজ্ঞা জারি করবে যুক্তরাষ্ট্র।
বৃহস্পতিবার ক্যালিফোর্নিয়ার সান ফ্রান্সিসকোয় এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
হোয়াইট হাউস এ বিবৃতিতে জানিয়েছে, নাভালনির স্ত্রী ইউলিয়া ও কন্যা দাশা নাভালনিয়ার সঙ্গে বৈঠকে নাভালনির মৃত্যুতে তাদের যে ভয়াবহ ক্ষতি হয়েছে তা অপূরণীয় উল্লেখ করে আন্তরিক সমবেদনা জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট। পাশাপাশি এই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় রাশিয়ার ওপর আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
বিবৃতিতে বলা হয়, এই রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বাইডেন জোর দিয়ে বলেন- নাভালনির উত্তরাধিকার রাশিয়া ও সারা বিশ্বের মানুষ বহন করবে। সারা বিশ্বের মানুষ স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের জন্য লড়াইয়ে নাভালনির কাছ থেকে অনুপ্রেরণা পাবে।
হোয়াইট হাউস আরও বলছে, তিনি নিশ্চিত করেছেন যে আলেক্সির মৃত্যু, রাশিয়ার দমন ও আগ্রাসন এবং ইউক্রেনে তার নৃশংস ও অবৈধ যুদ্ধের প্রতিক্রিয়ায় তার প্রশাসন আগামীকাল ( আজ শুক্রবার) রাশিয়ার বিরুদ্ধে বড় নতুন নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করবে।
গত শুক্রবার হোয়াইট হাউসে টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে নাভালনির মৃত্যুর জন্য প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে দায়ী করেছেন বাইডেন। তিনি বলেন, নাভালনির মৃত্যু রুশ প্রেসিডেন্টের নিষ্ঠুরতার প্রমাণ।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ওয়াশিংটন নাভালনির মৃত্যুর সঠিক বিবরণ জানে না, তবে এতে কোনো সন্দেহ নেই যে নাভালনির মৃত্যু পুতিন এবং তার সহযোগিরা যা করেছে তারই পরিণতি।
বাইডেন আরও বলেন ‘রাশিয়ান কর্তৃপক্ষ তাদের নিজস্ব গল্প বলতে যাচ্ছে। কোন ভুল করবেন না, কোন ভুল করবেন না, নাভালনির মৃত্যুর জন্য পুতিন দায়ী। পুতিনই দায়ী। নাভালনির সঙ্গে যা ঘটেছে তা পুতিনের বর্বরতার প্রমাণ, কাউকে বোকা বানানো উচিত নয়।’
প্রসঙ্গত, নাভালনি এখন পর্যন্ত রাশিয়ার সবচেয়ে বিখ্যাত বিরোধী নেতা। ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে নাভালনিকে বন্দি করে রাখা হয়েছিল। চরমপন্থি কার্যকলাপের জন্য তাকে ১৯ বছরের কারদণ্ড দেয় রুশ আদালত। সব অভিযোগই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে তিনি উড়িয়ে দিয়েছেন। এরপর থেকে তাকে সবচেয়ে সুরক্ষিত জেলে রাখা হয়। গত শুক্রবার কারাবন্দি অবস্থাতেই তিনি মারা যান।
রাশিয়ান জেল পরিষেবার বিবৃতিতে অনুযায়ী, শুক্রবার মস্কো থেকে প্রায় ১৯০০ কিলোমিটার দূরে আর্কটিক সার্কেলের উত্তরে পেনাল কলোনি কারাগারে হাঁটার সময় হঠাৎ জ্ঞান হারান নাভালনি। এরপর দ্রুত তার জন্য অ্যাম্বুলেন্স ও প্যারামেডিক ডাকা হলেও তার কিছু করতে পারেননি। তবে কী কারণে তার মৃত্যু হলো সে বিষয়টি এখন জানার চেষ্টা চলছে।
(ঢাকাটাইমস/২৩ফেব্রয়ারি/এমআর)