সরকারের ধারাবাহিকতায় স্থানীয় সরকার বিভাগে বাজেট বরাদ্দ ছয় গুণ বেড়েছে: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের এক যুগের ধারাবাহিকতায় স্থানীয় সরকার বিভাগের অনুকূলে বাজেট বরাদ্দের পরিমাণ প্রায় ছয় গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা একটি বিরাট মাইলফলক।
রবিবার ‘জাতীয় স্থানীয় সরকার দিবস’ উপলক্ষে শনিবার দেয়া এক বাণীতে একথা বলেন তিনি। এ দিবসের প্রতিপাদ্য ‘স্মার্ট হবে স্থানীয় সরকার, নিশ্চিত করবে সেবার অধিকার’।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘দীর্ঘ ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে আমরা সরকার গঠন করে জাতির পিতার প্রদর্শিত পথে দেশের উন্নয়নে মনোনিবেশ করি। আমরাই প্রথম ১৯৯৬ সালে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানটিকে সক্রিয় ও গণমুখী প্রতিষ্ঠানে রূপ দিতে জেলা পরিষদ আইন, ২০০০ প্রণয়ন করি। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহকে অধিকতর আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা প্রদান করি।’
তিনি বলেন, ‘বিগত সরকার ২০০৬-০৭ অর্থবছরে স্থানীয় সরকার বিভাগে ৫ হাজার ৭৯৯ দশমিক ৩৬ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদান করে। আমরা স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালীকরণের লক্ষ্যে ২০০৯-১০ অর্থবছরে স্থানীয় সরকার বিভাগে ৮ হাজার ২১২ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদান করি যার মধ্যে উন্নয়ন খাতে ৬ হাজার ৯৫৬ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে স্থানীয় সরকার বিভাগে ৪৬ হাজার ৭০৩ দশমিক ৯২ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে, এর মধ্যে উন্নয়ন ব্যয় হিসেবে ৪০ হাজার ৫০২ দশমিক ৯২ কোটি টাকার সংস্থান রয়েছে।
সরকারপ্রধান বলেন, আমরা গত ১৫ বছরে ৭৫ হাজার ৮২৫ কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ক, ১ হাজার ৭৬৭টি ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন, ২ হাজার ৮৭৪টি গ্রোথ সেন্টার ও হাটবাজার উন্নয়ন, ১ হাজার ৬৫৪টি বহুমুখী দুর্যোগ আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করেছি। একই সময়ে সুপেয় পানি সরবরাহ, স্যানিটেশন ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা উন্নয়নে ৮৯টি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, সব স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানে বিপুল কর্মপ্রবাহ আজ দৃশ্যমান। ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে স্থানীয় সরকারকে স্মার্ট ও সেবামুখী করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উন্নয়ন দর্শনের মাধ্যমে এদেশে স্থানীয় সরকারের মূল ভিত্তিভূমি রচিত হয়, যা তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৫৯ ও ৬০ অনুচ্ছেদে এবং প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় সুস্পষ্ট করেন।
তিনি বলেন, প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার একটি অন্যতম পরিকল্পনা ছিল- ‘নতুন স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলো রাস্তা, ড্রেন, ও সেচ ব্যবস্থার অবকাঠামো তৈরি ও রক্ষণাবেক্ষণ, জনস্বাস্থ্য, স্যানিটেশন শিক্ষা এবং সমাজকল্যাণ পরিষেবা সরবরাহ করার জন্য দায়বদ্ধ থাকবে।’ সে পরিক্রমায় সারাদেশে সকল স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান বহুমাত্রিক ও বিপুল কার্যক্রমে কর্মতৎপর ও নিবেদিত।
শেখ হাসিনা বলেন, আসুন, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ তথা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলি ।
তিনি ‘জাতীয় স্থানীয় সরকার দিবস’ উদ্যাপিত হচ্ছে জেনে আনন্দ প্রকাশ করেন এবং এই শুভক্ষণে স্থানীয় সরকার বিভাগ ও স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহের সকল সদস্য এবং এদেশের জনগণকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ দিবসের মাধ্যমে জনগণকে সেবা প্রদানের নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে। তিনি ‘জাতীয় স্থানীয় সরকার দিবস' উপলক্ষে গৃহীত কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।
(ঢাকাটাইমস/২৪ফেব্রুয়ারি/ইএস)

মন্তব্য করুন