শিক্ষা সফরে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মদ্যপান, দুই শিক্ষক বরখাস্ত

মাদারীপুরের শিবচরে স্কুল থেকে শিক্ষা সফরে গিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা মদ্যপান করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। শিক্ষার্থী বিদেশি মদের বোতল থেকে শিক্ষককে মদ ঢেলে দিচ্ছেন, আবার শিক্ষকের সামনেই শিক্ষার্থীরা আনন্দ উল্লাস করে মদ্যপান করছেন। এমন ভিডিও ফেসবুক ও টিকটকে ছড়িয়ে পড়েছে।
ঘটনাটি শনিবার ঘটলেও সোমবার সবকিছু জানাজানি হয়ে পড়লে সারা জেলাজুড়ে চলছে সমালোচনার ঝড়। এঘটনায় অভিযুক্ত দুই শিক্ষককে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। এদিকে অভিযুক্ত শিক্ষকরা বলছেন, শিক্ষার্থীরা ভাইরাল হতে মদের বোতলে জুস ভরে এমন কাণ্ড ঘটিয়েছে।
এ ব্যাপারে শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, অভিযুক্ত দুই শিক্ষককে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুসারে স্থায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ঘটনায় নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে স্থানীয় সমাজ ব্যবস্থায়। তাই দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার দাবি অভিভাবক মহলের।
জানা যায়, শনিবার জেলার শিবচর উপজেলার বন্দরখোলা ইউনিয়নের শিকদার হাট উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃক শিক্ষা সফরে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও থেকে ফেরার পথে এ ঘটনা ঘটে। শনিবার ভোরে বিদ্যালয়ের ১৬ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা ও ৪১ জন শিক্ষার্থী শিক্ষা সফরের উদ্দেশে নারায়ণগঞ্জের সোনার গাঁও যায়। সাথে নেওয়া হয়নি কোনো শিক্ষার্থীর অভিভাবক।
ভিডিও ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষা সফর শেষে এলাকায় ফেরার পর ফেসবুক ও টিকটকে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মদ্যপানের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের ইংরেজি শিক্ষক মো. ওয়ালিদ মোরশেদ মদের বোতল হাতে নিয়ে মদ ঢালছেন এবং শিক্ষার্থীদের হাতে মদের বোতল দিচ্ছেন।
এমন ভিডিও দেখে অভিভাবকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এ ঘটনায় সোমবার অভিযুক্ত শিক্ষক মো. ওয়ালিদ মোরশেদ ও আল নোমানকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
অভিযুক্ত শিক্ষক ওয়ালিদ মোরশেদ মুঠোফোনে বলেন, ভাইরাল হতে শিক্ষার্থীরা মদের বোতলে জুস খাচ্ছিল। আমি নিয়ন্ত্রণ রাখতে ওদের নিষেধ করেছি। ওসবই মজার ছলে হয়েছে। বাট সিরিয়াস কিছু না। তাও আমাকের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আলাউদ্দিন শিকদারও একই দাবি করে বলেন, শিক্ষকদের কোনো দোষ না। তারা শিক্ষার্থীদের সাথে কোনো অসামাজিক কাজ করেনি। তাও সঠিক তদন্তের স্বার্থে তদন্ত কমিটি করা হয়েছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা খন্দকার মো. মাকসুদুর রহমানকে প্রধান করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে প্রশাসন। তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন, উপজেলা একাডেমিক সুপার ভাইজার মো. আসাদুর রহমান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কার্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম চৌধুরী। আজ মঙ্গলবারের মধ্যে তদন্ত কমিটিকে তদন্ত রিপোর্ট প্রদান করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এঘটনা জানাজানির পর ক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী ও অভিভাবকমহল।
(ঢাকাটাইমস/২৭ফেব্রুয়ারি/প্রতিনিধি/জেডএম)

মন্তব্য করুন